কোয়ারেন্টাইনে না থেকে উপদেশ দিলেন এমপি
নিজ সংসদীয় আসনে (পেকুয়া-চকরিয়া) কেউ প্রবাস থেকে এলে তাকে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার উপদেশ দিয়ে নানা কার্যক্রম চালাচ্ছেন কক্সবাজার-১ আসনের সংসদ সদস্য জাফর আলম। কিন্তু করোনার ক্রান্তিলগ্ন শুরুর মাঝেই ওমরাহ পালন শেষে গত ১১ মার্চ সৌদি আরব থেকে সস্ত্রীক দেশে এলেও তিনি নিজে কোয়ারেন্টাইন পালন করেননি।
যদিও চলমান নিয়মানুসারে পবিত্র ওমরা পালন শেষে দেশে ফিরে ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার কথা ছিলো চকরিয়া-পেকুয়া আসনের সাংসদ ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাফর আলম এবং তার স্ত্রী শাহেদা জাফরের।তিনি অন্যকে সতর্ক করলেও নিজে সর্বত্র অবাধ বিচরণ করায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন চকরিয়া-পেকুয়ার আওয়ামী পরিবারের নেতা-কর্মী, স্থানীয় সাংবাদিক ছাড়াও প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ২৩ ফেব্রুয়ারি পবিত্র ওমরা হজ্ব করতে সস্ত্রীক সৌদি আরবে যান সাংসদ জাফর আলম। চলতি মাসের ১১ মার্চ দুপুর ১২টার ফ্লাইটে সৌদি আরবের একটি বিমানে তারা ঢাকায় পৌঁছান। পরদিন (১২ মার্চ) ঢাকা থেকে আন্তঃবিমানে তিনি কক্সবাজার বিমানবন্দরে পৌঁছালে চকরিয়া-পেকুয়ার বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মীরা সাংসদ দম্পতিকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন। পরে নেতা-কর্মীসহ সড়ক পথে বাড়িতে ফেরেন তিনি।
আরো জানা গেছে, এলাকায় ফিরেই ১৩ মার্চ চকরিয়া মগবাজারস্থ শেখ রাসেল স্টেডিয়ামে মেয়র গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টে প্রধান অতিথি হিসেবে ট্রফি বিতরণ করেন। ১৭ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকীতে চকরিয়া ও পেকুয়া উপজেলা প্রশাসন কৃর্তক আয়োজিত অনুষ্ঠানে যোগ দেন এমপি জাফর। একইদিন সন্ধ্যায় পৌরসভা আওয়ামী লীগ আয়োজিত বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে যোগ দেন আর ১৮ মার্চ চকরিয়ার ডুলাহাজারায় একটি মাদরাসার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ২০ মার্চ স্ত্রীসহ যোগ দেন চকরিয়ার একটি সামাজিক অনুষ্টানে। ২১ মার্চ অংশ নেন উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক করোনা বিষয়ে করনীয় বিষয়ক সভায়।
এছাড়া তিনি সদ্য প্রয়াত ঢেমুশিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি রুস্তম আলীর নামাজে জানাজা ও মেজবান অনুষ্ঠানেও যোগ দেন এবং সবকিছু দেখভাল করেন। এমপির অংশগ্রহণকৃত সরকারি অনুষ্ঠানগুলোতে দুই উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা, সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি), ওসিসহ বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা এবং আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় একাধিক আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, এমপি সাহেব আমাদের অভিভাবক। ওমরাহ পালন শেষে এলাকায় এসেই তিনি নানা প্রোগ্রামে অংশ নিয়েছেন। ওনার ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টাইন করা উচিত ছিলো।
বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নূরুদ্দীন মুহাম্মদ শিবলী নোমানের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হয়। সংযোগ না পাওয়ায় ইউএনও চকরিয়া নামে চালু থাকা সামাজিক যোগোযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সবিস্তারে লিখে বক্তব্য জানতে চাওয়া হয়। কিন্তু কোনো রিপ্লাই না আসায় বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে চকরিয়া-পেকুয়া আসনের সংসদ সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাফর আলম মুঠোফোনে বলেন, আমি বিদেশ থেকে এলেও শারিরীকভাবে সু্স্থ ও ভালো আছি। বেরও কম হই। কিছু প্রোগ্রামে গেলেও সেখানে লোক সমাগম কম ছিল। তবে এখন আরো সচেতন হওয়া দরকার।
সায়ীদ আলমগীর/এফএ/জেআইএম