ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

ফরিদপুরের দুই যৌনপল্লী লকডাউন, বাড়িভাড়া আদায় নিষিদ্ধ

জেলা প্রতিনিধি | ফরিদপুর | প্রকাশিত: ০৪:১৩ পিএম, ২১ মার্চ ২০২০

করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে ফরিদপুর শহরের দুই যৌনপল্লীকে অনির্দিষ্টকালের জন্য লকডাউন ঘোষণা করেছে জেলা প্রশাসন। শনিবার (২১ মার্চ) দুপুরে শহরের রথখোলা ও সিঅ্যান্ডবি ঘাটে (নৌবন্দর) অবস্থিত যৌনপল্লী বন্ধের ঘোষণা দেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাসুম রেজা।

ফরিদপুর সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাসুম রেজা বলেন, শহরের এই দুই যৌনপল্লীতে জায়গা কম। ঘিঞ্জি পরিবেশ এবং বিভিন্ন জেলা থেকে প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ যাতায়াত করে। এতে করোনা সংক্রমণ ঝুঁকি থাকায় জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের পরামর্শে লকডাউন করে দেয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, মানবিক কারণে এ সময় যৌনকর্মীদের খাদ্যসহায়তা হিসেবে প্রাথমিক পর্যায়ে দু-একদিনের মধ্যে প্রত্যেক পরিবারকে ৩০ কেজি করে চাল দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এছাড়া এ সময়ে যৌনকর্মীদের কাছ থেকে বাড়িভাড়া আদায় নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বাড়িভাড়া না নেয়ার জন্য বাড়িওয়ালাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

জানা যায়, শহরের রথখোলা পল্লীতে রয়েছেন ২৭৬ জন ও সিঅ্যান্ডবি ঘাটের পল্লীতে  ১২৫ জন যৌনকর্মী। পাশাপাশি বাড়িওয়ালি, সর্দারনি ও অনেকের ছেলে-মেয়ে রয়েছে। ঘিঞ্জি পরিবেশ, অল্প জায়গায় বেশি মানুষের উপস্থিতি। সেই সঙ্গে পল্লীর বাসিন্দাদের অসচেতনতায় প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস এখানে ভয়াবহ রূপ নেয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছিল।

প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে এই দুটি যৌনপল্লীতে হাজারো মানুষ আসা-যাওয়া করে। এখানে আসা মানুষগুলো কে কোথা থেকে এসেছেন বা থাকছেন তার সঠিক তথ্য জানা নেই কারও। সারাবিশ্বসহ বাংলাদেশেও করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করলেও যৌনপল্লী দুটিতে মানুষের আসা যাওয়া ছিল নির্বিঘ্ন।

শনিবার (২১ মার্চ) দুপুরে সরেজমিনে দুটি পল্লীতে গিয়ে স্বাভাবিকের তুলনায় মানুষের উপস্থিতি কম দেখা গেছে। এ সময় কয়েকজন যৌনকর্মী বলেন, আমরা পেটের দায়ে এখানে আছি। প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মানুষ আসা-যাওয়া করে। কে অসুস্থ আর কে সুস্থ, এটা বোঝা তো আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। তাই আমাদের কাছে যে আসে তাকেই তো ঘরে নিতে হয়। বর্তমানে করোনাভাইরাস আতঙ্কে এখানে লোকজনের সমাগম কমে গেছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক যৌনকর্মী জানান, পল্লীতে খদ্দের আসা বন্ধ করে দেয়ায় তারা চোখে অন্ধকার দেখছেন। এ পরিস্থিতি চলতে থাকলে তাদের না খেয়ে মরতে হবে।

ফরিদপুর কোতোয়ালি থানা পুলিশের ওসি মো. মোরশেদ আলম বলেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে শহরের রথখোলা যৌনপল্লীর চার প্রবেশপথ ও সিঅ্যান্ডবি ঘাটের পল্লীর দুটি প্রবেশপথে পুলিশ পাহারা জোরদার করা হয়েছে।

ফরিদপুর রথখোলা যৌনকর্মীদের সংগঠন ‘জয় নারী সংঘের’ সাধারণ সম্পাদক শিউলি পারভীন বলেন, যেভাবে সারাবিশ্বে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে তাতে করে যৌনপল্লী দুটি সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় ছিল। অবস্থার বিবেচনায় বন্ধের সিদ্ধান্ত ঠিক আছে। তবে এখানে কয়েকশ বাসিন্দা আছে, যারা দিনে রোজগার করে দিনে খায়। তাদের খাবারের ব্যবস্থা না করলে বেঁচে থাকা কঠিন হয়ে পড়বে। এ বিষয়ে জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন।

বি কে সিকদার সজল/এএম/এমকেএইচ