ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

ভাইকে হত্যার পর মসজিদে এশার নামাজ পড়ে বনি আমিন

জেলা প্রতিনিধি | গাজীপুর | প্রকাশিত: ০৫:৪২ পিএম, ০৮ মার্চ ২০২০

ঢাকা থেকে অপহৃত মাদরাসাছাত্র ইব্রাহিম হোসেনকে (১০) গাজীপুর মহানগরীর মীরেরগাঁও এলাকায় এনে শ্বাসরোধে হত্যার ঘটনায় নিহত ওই ছাত্রের ফুফাতো ভাই বনি আমিনকে (২৪) গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১ এর সদস্যরা। শনিবার (৭ মার্চ) রাতে ঢাকায় হাজারীবাগ এলাকার একটি বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতার বনি আমিন বরগুনা সদর উপজেলার মাইঠা এলাকার আবুল কালাম আজাদের ছেলে।

র‌্যাব-১ এর গাজীপুর পোড়াবাড়ি ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার লে. কমান্ডার আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে গাজীপুর মহানগরীর সালনা মীরেরগাঁও এলাকায় মাদরাসার পোশাক পরিহিত এক শিশুর মরদেহ পাওয়া যায়। পথে ফেলে যাওয়া মাদরাসার আইডি কার্ডের মাধ্যমে নিহত শিশুর পরিচয় মেলে। র‌্যাব বিষয়টির ছায়া তদন্ত শুরু করে। পরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র‌্যাব জানতে পারে হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা রাজধানীর হাজারীবাগ এলাকায় ভিকটিমের বাসায় আত্মগোপন করে আছে। উক্ত সংবাদের ভিত্তিতে র‌্যাব ওই এলাকায় অভিযান চালিয়ে বনি আমিনকে গ্রেফতার করে।

গ্রেফতার বনি আমিনের বরাত দিয়ে র‌্যাব জানায়, বনি আমিন নিহত ইব্রাহিমের আপন ফুফাতো ভাই। ইব্রাহিম রাজধানীর হাজারীবাগ এলাকায় ইকরা দারুল-উলুম মাদরাসার দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। ইব্রাহিমের বাবা মনির হোসেন আপন মামা হওয়ায় গত ২০১৬ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত তার বাসায় থেকে তার রাজধানী নিউ মার্কেট এলাকায় ক্রোকারিজের দোকান পরিচালনা করত গ্রেফতার বনি আমিন। মামা মনির হোসেনের বাসায় থাকার কারণে বিভিন্ন সময় মামী মোসা. হালিমা বেগমের ওপর তার ক্রোধ সৃষ্টি হয়।

এছাড়াও মামার বাসার থাকাকালীন একটি মেয়ের সঙ্গে প্রেমের সর্ম্পক গড়ে ওঠে বনি আমিনের। প্রেমিকাকে দামি উপহার দেয়ার জন্য তার অনেক টাকার প্রয়োজন হয়। যা তার কাছে ছিল না। তাই সে টাকার চাহিদা এবং মামির ওপর দীর্ঘদিনের ক্ষোভের প্রতিশোধ নিতে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে গত ৫ মার্চ দুপুর ২টার দিকে তার মামাতো ভাই ইব্রাহিমকে তার হাজারীবাগ মাদরাসা থেকে বাবার অসুস্থতার কথা বলে অপহরণ করে। পরে কৌশলে গাজীপুর মহানগরীর সালনা এলাকায় নিয়ে আসার পর ইব্রাহিমের মাদরাসার ব্যাগ এবং আইডি কার্ড ফেলে দেয়। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে মীরেরগাঁও রেল লাইনের পাশে জঙ্গলের ভেতর নিয়ে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।

এরপর মরদেহ গুম করার উদ্দেশ্যে পুকুরের ভেতর ফেলে রেখে সালনা এলাকার একটি মসজিদে এশার নামাজ আদায় করে বনি আমিন। পরবর্তীতে বিভিন্ন মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ইব্রাহিমের কণ্ঠ নকল করে তার বাবার মোবাইল ফোন দিয়ে অপহরণের কথা জানায় এবং মুক্তিপণ হিসেবে পঞ্চাশ হাজার টাকা দাবি করে। পরে বিকাশের মাধ্যমে ১০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়।

পরবর্তীতে শনিবার (৭ মার্চ) গাজীপুরে ইব্রাহিমের মরদেহ উদ্ধারের সংবাদ শুনে তার মামা-মামির সঙ্গে কান্নার অভিনয় করে এবং তাদের সঙ্গে ঢাকার আজিমপুর কবরস্থানে জানাজাসহ মরদেহ দাফন কাজ সম্পন্ন করে বনি আমিন। যাতে তাকে কেউ সন্দেহ করতে না পারে। অবশেষে র‌্যাব তাকে রাজধানীর হাজারীবাগ এলাকার মামার বাসা থেকে গ্রেফতার করে। র‌্যাবের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বনি আমিন এ হত্যার ঘটনার সরাসরি জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে এবং ঘটনার মর্মান্তিক বর্ণনা দেয়।

আমিনুল ইসলাম/আরএআর/এমএস