না.গঞ্জ জুড়ে দুর্গাপূজার আমেজ
শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপনে নারায়ণগঞ্জে শুরু হয়ে গেছে দুর্গাপূজার আমেজ। দুর্গাপূজাকে ঘিরে প্রতি বছরের মতো এবারও নারায়ণগঞ্জ শহর ও শহরতলীতে উৎসবের আমেজ লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
বিশেষ করে শহরের বঙ্গবন্ধু সড়কের গলাচিপা ও উকিলপাড়া মোড় এলাকা তৈরি করা হচ্ছে বড় দুটি তোরণ। যা প্রতিবছরই পূজা দর্শনার্থীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে থাকে। আর দুর্গাপূজাকে ঘিরে নারায়ণগঞ্জের প্রশাসন অতিরিক্ত নিরাপত্তা জোরদার করেছে।
দুর্গাপূজাকে ঘিরে নারায়ণগঞ্জে বেশ কয়েকটি মন্দিরের কয়েক সপ্তাহ আগে থেকে শুরু হয়েছে প্রতিমা তৈরির কাজ। তবে আগামী ১২ অক্টোবর মহালয়ার আগে প্রতিমার মূল কাজ শুরু করবেন না বলে জানিয়েছেন প্রতিমা কারিগররা। অন্যদিকে, পূজা মণ্ডপের সাজসজ্জার জন্য ইতোমধ্যে কারুকাজের কাজ শরু করে দিয়েছেন চারুকলার শিল্পীরা।
এদিকে, নারায়ণগঞ্জ জেলায় এ বছর ১৯২টি পূজা মণ্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে যা গতবারের তুলনায় ছয়টি বেশি। এর মধ্যে পুলিশ প্রশাসন ৭৭টিকে অতি গুরুত্বপূর্ণ, ৫৫টি গুরুত্বপূর্ণ ও ৬০টি সাধারণ পূজামণ্ডপ হিসেবে আখ্যায়িত করে সেখানে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার আশ্বাস দিয়েছেন।
আর নারায়ণগঞ্জ জেলার মধ্যে হরে শহরে ৩৪টি, ফতুল্লায় ২৬টি, সিদ্ধিরগঞ্জে আটটি, রূপগঞ্জে ৪৩টি, সোনারগাঁও ২৯টি, বন্দরে ২৩টি ও আড়াই হাজারে ২৯টি পূজা মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে।
জানা গেছে, আগামী ১২ অক্টোবর মহালয়ার মধ্য দিয়ে দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। ১৭ অক্টোবর মহা পঞ্চমী, ১৮ অক্টোবর ষষ্ঠী, ১৯ অক্টোবর সপ্তমী, ২০ অক্টোবর অষ্টমী, ২১ অক্টোবর নবমী ও ২২ অক্টোবর বিজয়া দশমীর মধ্য দিয়ে দুর্গাপূজা সমাপ্ত হবে। তবে দুর্গাপূজাকে ঘিরে এ দুটি বিশেষ তোরণ নির্মাণ করতে ব্যয় ধরা হয় পাঁচ থেকে ছয় লাখ টাকা। যার মধ্যে আমলাপাড়া সার্বজনীন দুর্গাপূজা কমিটির উদ্যোগে গলাচিপা মোড় এলাকার তোরণটি ও উকিলপাড়া সার্বজনীন দুর্গাপূজা কমিটির উদ্যোগে উকিলপাড়া এলাকার তোরণটি নির্মাণ করা হচ্ছে।
উকিলপাড়া সার্বজনীন দুর্গাপূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি কৃষ্ণ সাহা জাগো নিউজকে বলেন, এ বছরের দুর্গাপূজার বাজেট ধরা হয়েছে ২০ লাখ টাকা। যার মধ্যে ৬ লাখ টাকা বঙ্গবন্ধুর সড়কের তোরণ তৈরি করতে ব্যয় হবে। আর আলোকসজ্জায় পাঁচ লাখ টাকা ব্যায় করা হবে।
এদিকে, আমলাপাড়া এলাকার তোরণ নির্মাণ ৫ থেকে ৬ লাখ টাকা ধরা হয়েছে বলে পূজা কমিটির সদস্যদের কাছ থেকে জানা গেছে। যা কিনা গতবছরের তুলনায় এক লাখ টাকা বেশি। আর পূজার জন্য ৩০ লাখ টাকার বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে।
কারু শিল্পী অজিত শীল জাগো নিউজকে বলেন, নারায়ণগঞ্জ দুইটি মন্দিরের পূজা মণ্ডপ ককশিট দিয়ে করা হয়েছে আরো এক সপ্তাহ আগে। এ বছর সকল জিনিসপত্রের দাম বেশি থাকায় ব্যয়ও বেশি হবে।
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি দিলীপ কুমার মণ্ডল নিউজ নারায়ণগঞ্জকে বলেন, আগামী সপ্তাহের যেকোনো দিন জেলার বিভিন্ন পূজা মণ্ডপের সমস্যাবলি নিয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে যাবেন জেলা ও মহানগর পূজা কমিটির নেতৃবৃন্দরা।
নারায়ণগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মো. জাকারিয়া জাগো নিউজকে বলেন, ১৯২টি পূজা মণ্ডপের মধ্যে ৭৭টিকে অতি গুরুত্বপূর্ণ, ৫৫টি গুরুত্বপূর্ণ ও ৬০টি সাধারণ পূজামণ্ডপ আখ্যায়িত করা হয়েছে। তিনি অতি গুরুত্বপূর্ণ পূজামণ্ডপে দুইজন পুলিশ ও ১০ জন আনসার, গুরুত্বপূর্ণ পূজামণ্ডপে দুইজন পুলিশ ও আটজন আনসার ও সাধারণ পূজামণ্ডপে একজন পুলিশ ও পাঁচজন আনসার নিয়োগ দেয়া হবে।
এছাড়াও ৩০ জন সাদা পোশাকের পুলিশ, ২৪টি মোবাইল টিমসহ মহাঅষ্টমী রামকৃষ্ণ মিশনের কুমারি পূজায় ৩৬ জন পুলিশ সদস্য নিরাপত্তা ব্যবস্থার কাজ করবে।
শাহাদাৎ হোসেন/এমজেড