ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

কুলে আয় ৬ কোটি ৭৬ লাখ টাকা

জেলা প্রতিনিধি | সাতক্ষীরা | প্রকাশিত: ১২:৫৯ পিএম, ০৫ মার্চ ২০২০

কুল চাষ বেড়েছে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরায়। তবে গত বছরের তুলনায় চলতি বছর ফলন কিছুটা কমেছে। ফলন কম হওয়ার কারণ হিসেবে ঘূর্ণিঝড় বুলবুলকে দায়ী করছে কৃষি বিভাগ ও কুল চাষিরা। কুল চাষ করেই জেলায় এ বছর আয় হয়েছে ৬ কোটি ৭৬ লাখ টাকা।

গত পাঁচ বছর যাবৎ কুল চাষ করছেন সাতক্ষীরার তালা উপজেলার ইসলামকাটি ইউনিয়নের বাউখোলা গ্রামের আমিনুল ইসলাম মোল্লার ছেলে আজগর আলী মোল্লা। নিজের চার বিঘা জমিতে চলতি বছর কুল চাষ করেছেন এই চাষি। কুল চাষে মোট খরচ করেছেন এক লাখ টাকা। তবে এরই মধ্যে এই কুল চাষি ২ লাখ ২০ হাজার টাকার কুল বিক্রি করে লাভ করেছেন এক লাখ ২০ হাজার টাকা।

কুলচাষি আজগর আলী মোল্লা বলেন, কম খরচ আবার অধিক লাভ হওয়ায় তরকারি-সবজি চাষ বাদ দিয়ে ৫ বছর আগে কুলের চাষ শুরু করেছিলাম। প্রতি বছরই বেশ লাভবানও হয়েছি। গত বছর ৭৫ হাজার টাকায় তিন বিঘা জমিতে কুল চাষ করে দেড় লাখ টাকার উপরে বিক্রি করেছিলাম। চলতি বছর আরও এক বিঘা বেশি জমিতে কুল চাষ করেছি। তবে আশানুরূপ লাভবান হতে পারিনি। কুলের মুকুল আসার শুরুতেই ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের কারণে তা পড়ে যায়। ভেবেছিলাম সাড়ে তিন লাখ টাকার উপরে কুল বিক্রি করতে পারবো তবে ফলন কম হওয়ায় বিক্রি হয়েছে মাত্র দুই লাখ ২০ হাজার টাকায়।

satkhira-kul-1

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর খামারবাড়ির অফিস সহকারী শেখ হাফিজুর রহমান জানান, চলতি ২০১৯-২০ অর্থ বছরে জেলায় কুলের আবাদ হয়েছে ৬৫৪ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে সাতক্ষীরা সদরে আবাদ হয়েছে ১০৪ হেক্টর, কলারোয়া উপজেলায় ৩১৬ হেক্টর, তালা উপজেলায় ১৫৮ হেক্টর, দেবহাটা উপজেলায় ১৬ হেক্টর, কালিগঞ্জ উপজেলায় ২০ হেক্টর, আশাশুনি উপজেলায় ১৫ হেক্টর ও শ্যামনগর উপজেলায় ২৫ হেক্টর জমিতে। জেলায় কুল উৎপাদন হয়েছে ৬ হাজার ৭৬০ মেট্রিক টন।

১৪ বছর ধরে কুল চাষ করছেন তালা উপজেলার বাউখোলা গ্রামের কাবিল শেখ। চলতি বছর তিনি ৫০ বিঘা জমিতে কুষ চাষ করেছেন। নিজস্ব কোনো জমি না থাকলেও অন্যের জমি লিজ নিয়ে চাষাবাদ করেন এই কৃষক। ২০ লাখ টাকা খরচ করে এই চাষাবাদ করেছেন তিনি। ৪০-৪২ লাখ টাকার কুল বেঁচাবিক্রির আশা করলেও বিক্রি হয়েছে ২৪-২৫ লাখ টাকার।

satkhira-kul-3

তিনি বলেন, কুল চাষে খরচ কম আবার লাভও বেশি। জমিতে বাড়তি কোনো পরিচর্যা করার দরকার হয় না। এছাড়া কুলের মৌসুম শেষ হলে জমিতে অন্যান্য চাষাবাদও করা হয়। সেখান থেকেও বাড়তি আয় করা সম্ভব।

সাতক্ষীরার এসব কুল চলে যায় ঢাকা, খুলনা, যশোরসহ বিভিন্ন স্থানে। এ অঞ্চলের কুলের সবথেকে বড় মোকাম খুলনার কাঁচা বাজার। সেখানকার ব্যবসায়ীরা সাতক্ষীরার কুল চাষিদের কাছ থেকে কুল কিনে নেন।

সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর খামারবাড়ির উপ পরিচালক অরবিন্দু বিশ্বাস জানান, সাতক্ষীরায় পাঁচ হাজার কুলচাষি রয়েছে। গত বছরের তুলনায় এ বছর কুল চাষ বেড়েছে তবে ফলন কমেছে। এ বছর জেলায় কুল উৎপাদন হয়েছে ৬৭৬০ মেট্রিক টন। কুল থেকে আয় হয়েছে ৬ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। গত বছর উৎপাদন হয়েছিল ৭০৯২ মেট্রিক টন। আয় হয়েছিল ৭ কোটি ৯২ লাখ টাকা।

তিনি বলেন, কৃষি বিভাগ থেকে চাষিদের পরামর্শ ও সহযোগিতা দেয়া হয়। অল্প খরচে অধিক লাভ হওয়ায় সাতক্ষীরায় কুলের আবাদ বেড়েছে। তবে চলতি বছর ঘুর্ণিঝড় বুলবুলের কারণে কুল চাষিদের ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়েছে।

আকরামুল ইসলাম/এফএ/পিআর