নারী কাউন্সিলরকে চড়-থাপ্পড় মারলেন অফিস সহকারী

জাটকা বিতরণ নিয়ে কথাকাটাকাটির জেরে বরিশালের গৌরনদী পৌরসভার নারী ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাবিনা ইয়াসমিনকে চড়-থাপ্পড় মেরেছেন উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ের অফিস সহকারী মো. রাজু।

রোববার (০১ মার্চ) দুপুরে গৌরনদী উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় রাজুর বিরুদ্ধে গৌরনদী মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন নারী কাউন্সিলর সাবিনা ইয়াসমিন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শনিবার রাতে গলাচিপা থেকে ঢাকাগামী যাত্রীবাহী বেপারী পরিবহনে তল্লাশি চালিয়ে ১০ মণ জাটকা জব্দ করে গৌরনদী থানা পুলিশ। রোববার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইসরাত জাহানের উপস্থিতিতে জব্দকৃত জাটকা বিভিন্ন এতিমখানা ও গরিবদের মাঝে বিতরণ করা হয়।

সেখানে অন্যদের মধ্যে গৌরনদী পৌরসভার সংরক্ষিত (৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ড) নারী কাউন্সিলর সাবিনা ইয়াসমিন ও উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ের অফিস সহকারী (সিএ) মো. রাজু উপস্থিত ছিলেন।

জাটকা বিতরণের পর নারী কাউন্সিলর সাবিনা ইয়াসমিন ও উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ের অফিস সহকারী মো. রাজুর মধ্যে কথাকাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে কাউন্সিলর সাবিনা ইয়াসমিনকে চড়-থাপ্পড় মারেন রাজু। পরে উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ফরহাদ হোসেন মুন্সী রাজুকে গালমন্দ করে মহিলা কাউন্সিলরের কাছে ক্ষমা চাইতে বলেন।

কাউন্সিলর সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, এলাকার এক গরিব নারী আমার কাছে এসে কিছু জাটকা দেয়ার জন্য অনুরোধ করেন। ওই নারীকে নিয়ে জাটকা বিতরণস্থল উপজেলা পরিষদের সামনে যাই আমি। এ সময় উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ের অফিস সহকারী রাজু একটি ব্যাগভর্তি করে জাটকা নিয়ে যাচ্ছিলেন।

রাজুর পেছনে পেছনে গেলে তিনি ক্ষেপে যান। সেই সঙ্গে রাজু বলেন, উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ে পৌর কাউন্সিলরের কাজ কি। কার্যালয় থেকে বেরিয়ে যান। তখন রাজুকে সংযত হয়ে কথা বলতে বলি আমি। এ সময় রাজু আমাকে গালমন্দ করে চড়-থাপ্পড় দেন। এরপর সেখান থেকে বেরিয়ে পৌর মেয়র, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও ইউএনওকে বিষয়টি জানাই।

কাউন্সিলর সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, বিষয়টি অপমানজনক। এ ঘটনায় রাজুর বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। বিষয়টি জানতে পেরে রাজুকে গালমন্দ করেন এবং আমার কাছে ক্ষমা চাইতে বলেন উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ফরহাদ হোসেন।

উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ফরহাদ হোসেন বলেন, নারী কাউন্সিলরের সঙ্গে উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ের অফিস সহকারী (সিএ) রাজুর এমন আচরণ করা ঠিক হয়নি। রাজু ক্ষমা চেয়েছেন। রাজুকে সতর্ক করা হয়েছে। আগামীতে এ ধরনের আচরণ করলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

গৌরনদী মডেল থানা পুলিশের ওসি গোলাম সরোয়ার বলেন, নারী ওয়ার্ড কাউন্সিলরের লিখিত অভিযোগটি খতিয়ে দেখা হবে। অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে দোষীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সাইফ আমীন/এএম/এমকেএইচ