ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

শিকলে বেঁধে তিনদিন ধরে ইটভাটার শ্রমিককে নির্যাতন

জেলা প্রতিনিধি | নাটোর | প্রকাশিত: ০৫:৩৮ পিএম, ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০

নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলায় রাম বসাক (৩৫) নামে এক ইটভাটা শ্রমিককে শিকলে বেঁধে তিনদিন ধরে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। উপজেলার মশিন্দা ইউনিয়নের মেসার্স এএসবি ব্রিকস নামের ইটভাটা মালিক এ নির্যাতন করেছেন।

জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আবদুর রহিম মোল্লার ছেলে মো. আলমগীর হোসেন ও তার ভাতিজা ছাবলু মোল্লা যৌথভাবে এ ইটভাটা পরিচালনা করেন। নির্যাতনের শিকার রাম বসাকের বাড়ি সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার বোয়ালিয়া গ্রামে।

নির্যাতনের ঘটনায় শনিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাম বসাকের বাবা ছুটু বসাক ছেলেকে উদ্ধারের আবেদন জানিয়ে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। দুপুরে রাম বসাককে শিকল বাঁধা অবস্থায় ইটভাটা থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় ইটভাটার ব্যবস্থাপক স্বপন ও এক কর্মচারীকে আটক করা হয়।

নির্যাতনের শিকার রাম বসাকের অভিযোগ, নিজ গ্রামের সেরাজুল ইসলামের মাধ্যমে ইটভাটায় কাঁচা ইট বানানোর শ্রমিক হিসেবে কাজ করতে এখানে আসেন তিনি। কিন্তু ইটভাটা মালিকের ছেলে আলমগীর হোসেন ও ভাতিজা ছাবলু মোল্লার অমানবিক নির্যাতনের কারণে এখানে কাজ করা প্রায় ৪০ জন শ্রমিক পালিয়ে যান। তিনি একা হয়ে পড়ায় গত বৃহস্পতিবার দিন শেষে বাড়ি যাচ্ছিলেন। আলমগীর ও ছাবলু মোল্লা উপজেলার বিলশা এলাকা থেকে তাকে ধরে আনেন। পরে তার ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালানো হয়। নির্যাতনের পর ইটভাটার একটি কক্ষে শিকল দিয়ে বেঁধে ক্ষণে ক্ষণে নির্যাতন করা হয়।

রাম বসাক বলেন, চার মাস আগে শ্রমিক সর্দার সেরাজুল ইসলামের মাধ্যমে ১৫ হাজার টাকা অগ্রিম নিয়েছিলাম। দুই মাসের মাথায় ওই টাকা পরিশোধ করি। তারপরও শিকলে বেঁধে আমাকে নির্যাতন করা হয়েছে। আমি ন্যায়বিচার চাই।

ইটভাটায় কর্মরত শ্রমিকদের ভাষ্য, ইটভাটায় শতাধিক শ্রমিক কাজ করতেন। মালিক পক্ষের লোকজন তাদের জিম্মি করে ও ভয়ভীতি দেখিয়ে কঠোর শ্রমে বাধ্য করতেন। অমানবিক শ্রম ও নির্যাতন সইতে না পেরে অনেকে পালিয়ে যান। রাম বসাক সহজ-সরল হওয়ায় তাকে ধরে নির্যাতন করা হয়।

ইটভাটার মালিক মো. আবদুর রহিম মোল্লা বলেন, ইটভাটার শ্রমিক সর্দার সেরাজুল ইসলাম শ্রমিক সরবরাহের নামে ১৫ লাখ টাকা অগ্রিম নিয়েছিলেন। তার মধ্যে ৯ লাখ টাকা পরিশোধ হয়েছে। কিন্তু দলের সব শ্রমিক পালিয়ে যাওয়ায় ভাটার কার্যক্রম প্রায় বন্ধ হওয়ার পথে। রাম বসাকও পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করায় তাকে বেঁধে রাখা হয়েছিল। তবে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগটি সত্য নয়।

গুরুদাসপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোজাহারুল ইসলাম বলেন, রাম বসাককে শিকল বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। তার শরীরে নির্যাতনের চিহ্ন আছে। এ ঘটনায় মো. আলমগীর হোসেন ও ছাবলু মোল্লাকে আসামি করে মামলার প্রস্তুতি চলছে। একই সঙ্গে তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ। ইতোমধ্যে ইটভাটার ব্যবস্থাপক ও এক কর্মচারীকে আটক করা হয়েছে।

রেজাউল করিম রেজা/এএম/জেআইএম