সিলেটে শিশু হত্যা : মামলার শুনানি হয়নি
মামলার নথি জজ কোর্টে থাকায় সিলেটে অপহরণের পর শিশু আবু সাঈদ হত্যা মামলায় দাখিলকৃত অভিযোগপত্র গ্রহণ নিয়ে শুনানি হয়নি।
বুধবার দুপুরে মহানগর মুখ্য হাকিম শাহেদুল করিমের আদালতে এ বিষয়ে শুনানির কথা থাকলেও মামলার নথি জজ কোর্টে থাকায় মামলার পরবর্তী শুনানির তারিখ আগামি ১৮ অক্টোবর ধার্য করেছেন বিচারক।
মহানগর মুখ্য হাকিম আদালতের এপিপি অ্যাডভোকেট আবদুল মজিদ জানান, মামলার শুনানি উপলক্ষে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে আটক মামলার আসামি এয়ারপোর্ট থানার কনস্টেবল (বরখাস্তকৃত) এবাদুর রহমান পুতুল, পুলিশ ও র্যাবের কথিত সোর্স আতাউর রহমান গেদা, জেলা ওলামা লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম রাকিবকে আদালতে তোলা হয়। তবে আলোচিত এ মামলার নথি মহানগর দায়রা জজ আদালতে থাকায় শুনানি হয়নি।
এর আগে, গত ২৩ সেপ্টেম্বর হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এয়ারপোর্ট থানার কনস্টেবল (বরখাস্তকৃত) এবাদুর রহমান পুতুল, পুলিশ ও র্যাবের সোর্স আতাউর রহমান গেদা, জেলা ওলামা লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম রাকিব ও প্রচার সম্পাদক মাহিদ হোসেন মাসুমকে অভিযুক্ত করে মুখ্য হাকিম আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়। চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) মো. মোশাররফ হোসাইন।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ১১ মার্চ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এবাদুর, রাকিব, গেদা মিয়া ও মাসুদ মিলে শিশু আবু সাঈদকে অপহরণ করেন। এর পরের দিন ১২ মার্চ কনস্টেবল এবাদুরের বাসায় শিশুটিকে হত্যা করেন ঘাতকরা। মৃতদেহ গুম করে রাখা হয় এবাদুরের ভাড়া বাসার ছাদের চিলেকোঠায়।
হত্যার পর ঘাতকরা সাঈদের বাবা ও মামা জয়নাল আবেদীনের কাছে পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। পরে ১৪ মার্চ রাত ১০টায় কনস্টেবল এবাদুরের বাসার ছাদের চিলেকোঠা থেকে সাতটি বস্তায় মোড়ানো আবু সাঈদের গলিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরদিন সাঈদের বাবা আব্দুল মতিন বাদী হয়ে কোতয়ালি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এদিন পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সদস্যরা ঘটনাস্থল থেকে হত্যার আলামত সংগ্রহের পর রাত দেড়টার দিকে মরদেহ ওসমানী মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠিয়ে দেন।
এ ঘটনায় অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয়। তাদের তিনজনই আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেন। শিশু হত্যার এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন নগরবাসী। খুনিদের ফাঁসির দাবিতে বিভিন্ন স্থানে মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হয়।
নিহত আবু সাঈদ রায়নগর হযরত শাহ মীর (র.) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র ও একই এলাকার দর্জিবন্দ বসুন্ধরা ৭৪ নম্বর বাসার আব্দুল মতিনের ছেলে। তাদের গ্রামের বাড়ি সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার এড়ালিয়াবাজারের খশিলা এলাকায়।
ছামির মাহমুদ/এমজেড/এমএস