ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

তুলির শেষ আঁচড়ের অপেক্ষায় প্রতিমা শিল্পীরা

প্রকাশিত: ০৭:৪৯ এএম, ০৬ অক্টোবর ২০১৫

হিন্দু ধর্মের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দূর্গাপূজা। টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে শারদীয় দুর্গোৎসব উদযাপনে পুরোদমে চলছে প্রতিমা ও পূজা মন্ডপ তৈরির কাজ। উপজেলায় এবার ২৩৩টি মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। তাই ব্যস্ত সময় পার করছেন স্থানীয় ও বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা প্রতিমা শিল্পীরা।

জানা গেছে, কাদামাটি, খড়-কাঠ আর প্রতিমা ও মণ্ডপ তৈরি নিয়েই দিন কাটছে তাদের। তাই প্রতিমা ও এর প্রত্যকটির অনুষঙ্গ তৈরি, নিখুঁতভাবে কাজ ফুটিয়ে তুলতেই সর্বোচ্চ মনোযোগ মির্জাপুরের প্রতিমা শিল্পীদের। ১২দিন বাকি থাকলেও মির্জাপুর উপজেলায় দুর্গা পূজা উপলক্ষে মণ্ডপে মণ্ডপে ব্যাপক প্রস্তুতি চলছে। শেষ মুহূর্তে প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় চলছে প্রতিমা তৈরির ধুম। এখন শুধু বাকি রয়েছে প্রতিমায় রং তুলির আচর। আগামী ২/৩ দিনের মধ্যে প্রতিমায় রং তুলির কাজ শুরু হবে বলে প্রতিমা শিল্পী ও পূজা উদযাপন কমিটি জানিয়েছেন। আগামী ১৮ অক্টোবর দেবির বোধনের মধ্য দিয়ে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের এ মহোৎসব শুরু হতে যাচ্ছে। চলবে ২৩ অক্টোবর পর্যন্ত।

মঙ্গলবার মির্জাপুর পৌর এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, বিভিন্ন মণ্ডপে প্রতিমা তৈরির কাজ প্রায় শেষ। অনেক শিল্পী প্রতিমা তৈরি করে বাড়ি চলে গেছেন। দুই-তিন দিনের মধ্যে তারা এসে প্রতিমায় রং তুলির কাজ শুরু করবেন। উপজেলার একটি পৌরসভা ও ১৪টি ইউনিয়নের ২৩৩টি মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে। এরমধ্যে সার্বজনীন ১৬৮টি ও ব্যক্তিগত ৬৫টি মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে।

এদিকে, উপজেলায় প্রায় ২৫টি মণ্ডপে ঝুঁকির আশঙ্কা থাকলেও শান্তিপূর্ণভাবে পূজা পালন হবে বলে পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দ জানান।

আগামী ১৮ অক্টোবর ষষ্ঠি পূজার মধ্য দিয়ে এবার শারদীয় দূর্গাৎসব শুরু হবে। ১৯ অক্টোবর সপ্তমী, ২০ অক্টোবর অষ্টমী, ২১ অক্টোবর নবমী, ২২ অক্টোবর বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনে শেষ হবে পাঁচদিনের উৎসব।

Mirzapur-Durga

গত বছর সরকারের পক্ষ থেকে মণ্ডপ প্রতি ৫শ কেজি চাল বরাদ্দ ছিল। এবারো একই রকম অনুদান পাবেন বলে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস জানিয়েছে। এর মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের মাধ্যমে মণ্ডপে মণ্ডপে অনুদান প্রদান করা হবে।

এছাড়া স্থানীয় সংসদ সদস্য একাব্বর হোসেন, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মীর এনায়েত হোসেন মন্টু, পৌরসভার মেয়র শহিদুর রহমান শহীদ ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরাও প্রতিটি মণ্ডপে অনুদান প্রদান করবেন বলে জানা গেছে।

মির্জাপুর পৌরসভা এলাকায় ৪৫, মহেড়া ইউনিয়নে ১০, জামুর্কী ইউনিয়নে ৩৩, ফতেপুর ইউনিয়নে ১৮, ভাওড়া ইউনিয়নে ৫, বানাইল ইউনিয়নে ১৩, আনাইতারা ইউনিয়নে ৭, উয়ার্শী ইউনিয়নে ১৩, ভাদগ্রাম ইউনিয়নে ২৯, বহুরিয়া ইউনিয়নে ৭, গোড়াই ইউনিয়নে ১৮, আজগানা ইউনিয়নে ৪, তরফপুর ইউনিয়নে ৭, বাঁশতৈল ইউনিয়নে ৫ ও লতিফপুর ইউনিয়নে ১৯টি মণ্ডপে দূর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে।

মির্জাপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাইন উদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, উপজেলার পূজা মণ্ডপগুলোতে বিপুল সংখ্যক পুলিশ, আনসার সদস্য মোতায়েন থাকবে। তাছাড়া র্যাব-১২ সদস্যরা নিয়মিত টহলে থাকবেন। পূজা মণ্ডপগুলোতে যারা বিশৃঙ্খলতা সৃষ্টি করার চেষ্টা করবেন তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Mirzapur-Durga

এ বিষয়ে প্রতিমা শিল্পী মনোরঞ্জন পাল জাগো নিউজকে জানান, আষাঢ়ের ২০ তারিখের পর থেকে তারা প্রতিমা তৈরি শুরু করছেন। খড়, বাঁশ ও মাটির কাজ শেষ। মণ্ডপে তৈরি করা দূর্গার প্রতিমাগুলোতে রং লাগিয়ে সুসজ্জিত করা হবে। বছরের এই সময়টা ব্যস্ততায় কাটলেও অন্য সময় তাদের অলস সময় পার করতে হয়। অনেকেই বাধ্য হয়ে বাপ-দাদার এই পেশাকে টিকিয়ে রেখেছেন বলে তিনি জানান।

এদিকে, উৎসাহ উদ্দীপনা ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে শারদীয় দূর্গাৎসব উদযাপনের লক্ষ্যে মির্জাপুর উপজেলা পরিষদ কয়েক দফায় বৈঠকও করেছেন।

এ বিষয়ে মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাসুম আহমেদ জাগো নিউজকে জানান, এ বছর হিন্দুদের ধর্মীয় উৎসব দূর্গা পূজাকে সামনে রেখে উপজেলা সদরসহ বিভিন্ন ইউনিয়নে সব ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতেনিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি অতুল প্রসাদ পোদ্দার জাগো নিউজকে জানান, এ বছরে ২৩৩টি মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে। গত বছরের পূজা কমিটি দিয়ে এ বছরও পরিচালনা করা হবে। শান্তিপূর্ণভাবে ধর্মীয় উৎসব পূজা পালন করার জন্য তিনি সকলের কাছে আহ্বান জানান।

এমজেড/এমএস