সেই ডিউকের জন্য এবার কর্মবিরতিতে চিকিৎসকরা
ভুল চিকিৎসায় এক স্কুলশিক্ষিকার মৃত্যুর অভিযোগে করা মামলায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আলোচিত-সমালোচিত চিকিৎসক ডিউক চৌধুরী ও তার হাসপাতালের দুই চিকিৎসককে কারাগারে পাঠানোর প্রতিবাদে কর্মবিরতি পালন করছেন চিকিৎকরা। বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) ডাকে শনিবার (৪ জানুয়ারি) সকাল থেকে বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে প্রাইভেট প্র্যাকটিস বন্ধ রেখেছেন চিকিৎসকরা।
এ কর্মবিরতি সারাদিন চলবে, তবে সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা প্রদান অব্যাহত রয়েছে। রোগীদের কষ্ট দিয়ে চিকিৎসকদের এ প্রতিবাদকে অমানবিক হিসেবে দেখছেন সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভুল চিকিৎসায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের মুন্সেফপাড়া এলাকার স্কুলশিক্ষিকা নওশীন আহমেদ দিয়ার মৃত্যু হয়েছে- অভিযোগ এনে একই এলাকার খ্রিস্টিয়ান মেমোরিয়াল হাসপাতালের স্বত্বাধিকারী ডা. ডিউক চৌধুরী ও তার হাসপাতালের দুই চিকিৎসক অরুনেশ্বর পাল অভি এবং শাহাদাত হোসেন রাসেলের বিরুদ্ধে গত বছরের ১৩ নভেম্বর আদালতে মামলা করা হয়। মৃত দিয়ার বাবা শিহাব আহমেদ গেন্দুর করা ওই মামলায় উচ্চ আদালত থেকে চার সপ্তাহের জামিন নেন ওই তিন চিকিৎসক।
জামিন শেষে গত ১৮ ডিসেম্বর জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করেন তারা। কিন্তু আদালতের অবকাশকালীন বিচারক মো. হাসানুল ইসলাম মামলাটি অধিকতর শুনানির জন্য ১ জানুয়ারি দিন ঠিক করেন। এরপর ১ জানুয়ারি আবার ওই তিন চিকিৎসক জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে শুনানি শেষে বিচারক মোহাম্মদ সফিউল আজম জামিন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
তিন চিকিৎসককে কারাগারে পাঠানোর ঘটনায় বিএমএ ও বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ক্লিনিক মালিক সমিতির যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় তিন চিকিৎসককে কারাগারে পাঠানোর প্রতিবাদ এবং কর্মক্ষেত্রে নিরাপদ পরিবেশ সৃষ্টির দাবিতে শনিবার দিনব্যাপী সকল চিকিৎসকদের প্রাইভেট প্র্যাকটিস বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিএমএ’র ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ডা. মো. আবু সাঈদ বলেন, চিকিৎসকরা জেলে গেলে তো নিরাপত্তহীনতার কারণে চিকিৎসা করতে পারবে না। আমরা চাই চিকিৎসার বিষয়ে যদি কোনো সন্দেহ থাকে সেটা নিয়ে যেন অভিজ্ঞ কেউ মতামত দেন এবং তদন্ত হয়। তারপর মামলা হোক। ডা. ডিউকের বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্ত হয়নি। আজকের কর্মসূচি পালনের পর আলোচনা করে আমাদের আমাদের পরবর্তী কর্মসূচি নির্ধারণ করব।
আজিজুল সঞ্চয়/আরএআর/এমএস