বাস-ট্রাক সংঘর্ষের ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৭
ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার জালালপুরে বাস-ট্রাক সংঘর্ষে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৭ এ দাঁড়িয়েছে। নিহতদের মধ্যে ঘটনাস্থলে তিনজন, সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনজন ও মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে একজনের মৃত্যু হয়।
নিহতরা হলেন, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার সম্পাদক মোস্তাক আহমদ পলাশের ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী মোরশেদা বেগম (৪০), শিশুপুত্র মেহেদী (৪), জালালাবাদ সেনানিবাসের সৈনিক আবু সালেহ হাওলাদার, হানিফ পরিবহনের সুপারভাইজার মহসিন ওরফে টিপু (৪০), হেলপার তরিকুল ইসলাম ও নোভার্টিস ফার্মাসিউটিক্যালসের বিক্রয় প্রতিনিধি আরিফ আজাদ। অপরজনের পরিচয় পাওয়া যায়নি।
এদিকে, শুক্রবার দিবাগত রাত ২ টায় সিলেটের কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল কদমতলীতে হানিফ পরিবহনের কাউন্টারে আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষুব্ধ জনতা। এতে হানিফ পরিবহনের কাউন্টারের সামনে থাকা তাদের দুটি লেগুনা পুড়ে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার রাত ২টার দিকে ২০/২৫টি মোটরসাইকেলে একদল লোক হানিফ পরিবহনের বিরুদ্ধে শ্লোগান দিতে দিতে কদমতলী বাস টার্মিনালের কাউন্টারে এসে পেট্রল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়। এ সময় কাউন্টারের সামনে থাকা হানিফ পরিবহনের যাত্রী পরিবহনে ব্যবহৃত দুটি লেগুনায়ও অগ্নিসংযোগ করে বিক্ষুব্ধরা। রাত ২টা ২০ মিনিটে সিলেট ও দক্ষিণ সুরমা ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে। ঘটনাস্থলে যায় দক্ষিণ সুরমা থানা পুলিশও।রাত ৩টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয় বলে জানান দক্ষিণ সুরমা ফায়ার সার্ভিসের ইনচার্জ অধির চন্দ।
এদিকে, শনিবার ভোর রাতে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গুরুতর আরো একজনের মৃত্যু হয়। জানা যায়, দুর্ঘটনার পরপর গুরুতর আহত ৬ জনকে ওসমানী হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।
এদের মধ্যে রাত ১১টার দিকে জেলা আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার সম্পাদক মোস্তাক আহমদ পলাশের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী মোরশেদা বেগম (৪০) ও জালালাবাদ সেনানিবাসে কর্মরত সেনা সদস্য আবু সালেহ চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। রাত ১টায় মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে মারা যান পলাশের ৪ বছরের শিশু সন্তান মেহেদী। মৌলভীবাজার হাসপাতালে থেকে নিহত মেহেদীর মরদেহ শনিবার সকালে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে নিয়ে আসা হয়।
জানা গেছে, বাসে সপরিবারে ঢাকা থেকে বাড়ি ফিরছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা মোস্তাক আহমদ পলাশ। এ সময় তিনিসহ স্ত্রী মোরশেদা বেগম (৪০), ছেলে মেহেদী (৪), মেয়ে মীম (৭) ও তার গৃহকর্মী মনোয়ারা গুরুতর আহত হন।
পরে স্থানীয়রা মোস্তাক আহমদ, তার স্ত্রী মোরশেদা বেগম, মেয়ে মীম ও গৃহকর্মী মনোয়ারাকে সিলেট এমএজি ওসমানী হাসপাতালে নিয়ে আসেন। আর ছেলে মেহেদীকে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। এর মধ্যে মা ছেলের মৃত্যু হয়। অন্যরা মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন।
শেরপুর হাইওয়ে থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) হুমায়ুন কবির জাগো নিউজকে জানান, শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টায় ঢাকা থেকে সিলেটগামী হানিফ পরিবহনের একটি বাস জালালপুর এলাকায় মহাসড়কে দাঁড়িয়ে থাকা একটি ট্রাকে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই ৩ যাত্রী নিহত হন। আহত হন কমপক্ষে ২০ জন।
ছামির মাহমুদ/এসএস/এমএস