যশোর শিক্ষাবোর্ডের সাবেক পরিদর্শকের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে যশোর শিক্ষাবোর্ডের সাবেক কলেজ পরিদর্শক ও বর্তমানে যশোর সরকারি সিটি কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক অমল কুমার বিশ্বাসের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) মামলা হয়েছে। বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) যশোর দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. শহীদুল ইসলাম মোড়ল মামলাটি করেছেন।
অধ্যাপক অমল কুমার বিশ্বাস যশোরের চৌগাছা উপজেলার কংশারীপুর গ্রামের রাজেন্দ্রনাথ বিশ্বাসের ছেলে।
দুদক যশোর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক নাজমুচ্ছায়াদাত বলেন, অধ্যাপক অমল কুমার বিশ্বাস ও তার স্ত্রী বিথিকা শিকদারের দাখিলকৃত সম্পদের হিসাব বিবরণী যাচাইয়ে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের সত্যতা পাওয়া গেছে। এরপর বুধবার তার নামে মামলা করা হয়েছে।
জানা গেছে, দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত যশোর জেলা কার্যালয়ের ইআর নং- ১১/২০১৭ এর অনুসন্ধান সংক্রান্ত সংগৃহীত রেকর্ডপত্র পর্যালোচনায় অমল কুমার বিশ্বাসের বিরুদ্ধে প্রাথমিক অনুসন্ধান শেষে তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের সত্যতা এবং তার স্ত্রীর নামে সম্পদ অর্জনের কারণে তাদের প্রতি সম্পদ বিবরণী নোটিশ জারি করা হয়।
এরপর ২০১৮ সালের ১ নভেম্বর অধ্যাপক অমল কুমার বিশ্বাস ও তার স্ত্রী বিথিকা শিকদার তাদের প্রতি জারিকৃত নোটিশের আলোকে দুদকে সম্পদ বিবরণী ফরম পূরণ করে দাখিল করেন। তাদের দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের সত্যতা পাওয়া গেছে।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, অধ্যাপক অমল কুমার বিশ্বাস দুর্নীতি দমন কমিশনে তার নিজ নামে ৫৬ লাখ ৪০ হাজার ৮০০ টাকার স্থাবর ও ২১ লাখ ৭০ হাজার ৪১৪ টাকার অস্থাবর সম্পদ থাকার ঘোষণা দিয়েছেন।
অর্থাৎ তার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের মোট পরিমাণ ৭৮ লাখ ১১ হাজার ২১৪ টাকা এবং তার ওপর নির্ভরশীল স্ত্রী বিথিকা শিকদারের নামে ৪ লাখ টাকার স্থাবর এবং ৮৭ লাখ ৫ হাজার ২৩০ টাকার অস্থাবর সম্পদ অর্থাৎ মোট ৯১ লাখ ৫ হাজার টাকা স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ থাকার ঘোষণা দিয়েছেন।
অর্থাৎ তাদের মোট এক কোটি ৬৯ লাখ ১৬ হাজার ৪৪৪ টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ রয়েছে। যার মধ্যে বিথিকা সিকদার তার বাবার কাছ থেকে দান হিসেবে পেয়েছেন ৫ লাখ টাকা। অর্থাৎ দান বাদে তাদের দুজনের নামে অর্জিত সম্পদের মোট মূল্য এক কোটি ৬৯ লাখ ১১ হাজার ৪৪৪ টাকা।
অপরদিকে অমল কুমার বিশ্বাস তার সুদীর্ঘ কর্মজীবনে ভিত্তি অর্থবছর হতে ২০১৬-১৭ অর্থবছর পর্যন্ত পারিবারিক, চিকিৎসা, শিক্ষা ও বিদেশ ভ্রমণ খাতে মোট ব্যয় করেছেন ৫৮ লাখ ৪৫ হাজার ৯৮১ টাকা। তার স্ত্রী বিথিকা শিকদার একজন গৃহিণী। সে হিসেবে অমল কুমার বিশ্বাসের বৈধ আয় দুই কোটি ২৭ লাখ ৫৭ হাজার ৪২৫ টাকা হওয়াটাই শ্রেয় । কিন্ত তার বৈধ আয়ের পরিমাণ এক কোটি ৬৭ লাখ ২১ হাজার ২৭৯ টাকা দেখানো হয়েছে। ফলে তার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদের পরিমাণ ৬০ লাখ ৩৬ হাজার ১৪৬ টাকা।
অর্থাৎ অমল কুমার বিশ্বাস জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে ৬০ লাখ ৩৬ হাজার ১৪৬ টাকার অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পদ অর্জন করে তা তার স্ত্রীর মাধ্যমে স্থানান্তর ও রুপান্তর করে দখলে রেখে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪ এর ২৬ (২), ২৭ (১) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০১২ এর ৪(২) ধারাসহ দঃবিঃ ১০৯ ধারায় অপরাধ করেছেন।
মিলন রহমান/আরএআর/জেআইএম