জাতীয় স্মৃতিসৌধে জনতার ঢল
মহান বিজয় দিবসে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন লাখো মানুষ। ফুলে ফুলে ঢেকে গেছে স্মৃতিসৌধের মূল বেদি। স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণে নেমেছে জনতার ঢল। শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষ। বিজয়ের আনন্দ-উচ্ছ্বাসে স্মৃতিসৌধকে ঘিরে গোটা সাভার যেন উৎসবের নগরীতে পরিণত হয়েছে।
দিবসের প্রথম প্রহরে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। ৬টা ৩৪ মিনিটে তাঁরা স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানান।
এ সময় বিউগলে বেজে ওঠে করুণ সুর। তিন বাহিনীর একটি সুসজ্জিত দল গার্ড অব অনার প্রদান করে। এক মিনিট নীরবতা পালন করে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রাষ্ট্রীয়ভাবে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে দলের পক্ষ থেকে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
এরপর মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রীর নেতৃত্বে উপস্থিত বীরশ্রেষ্ঠ পরিবার, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও বীর মুক্তিযোদ্ধারা পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। বাংলাদেশে অবস্থিত বিদেশি কূটনীতিকবৃন্দ, বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনসহ সর্বস্তরের জনগণ পুষ্পস্তবক অর্পণ করে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
ভোরে ৩১ বার তোপধ্বনির মধ্য দিয়ে শুরু হয় দিবসের কর্মসূচি। এরপর রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। তাঁরা চলে যাওয়ার পর স্মৃতিসৌধ এলাকা সর্বস্তরের মানুষের জন্য খুলে দেয়া হয়। এরপর ফুল হাতে জনতার ঢল নামে স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণে। ফুলে ফুলে ভরে ওঠে স্মৃতিসৌধ।
ফুল দিতে আসা বেসরকারি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রেজাউল হক বলেন, দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য গভীর রাত থেকেই অপেক্ষা করছিলাম। দীর্ঘ অপেক্ষার পর অবশেষে শ্রদ্ধা জানাতে পেরে বেশ ভালোই লাগছে।
পাশেই দাঁড়ানো তার বন্ধু শফিক বলেন, যাদের ত্যাগের বিনিময়ে আমরা আজ স্বাধীন দেশ পেয়েছি, তাদের স্মরণ করতেই স্মৃতিসৌধে এসেছি। এখনো এসে অনেক ভালো লাগছে।
তাদের মতো লাখো জনতা জাতীর শ্রেষ্ঠ সন্তানদের শ্রদ্ধা জানাতে ভিড় করেছেন জাতীয় স্মৃতিসৌধে। সবার চোখে-মুখে একটি সুন্দর বাংলাদেশের গড়ার স্বপ্ন।
আল-মামুন/আরএআর/এমএস