ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

‘বিএনপি থেকে পদত্যাগের খবর ভুয়া’

জেলা প্রতিনিধি | পটুয়াখালী | প্রকাশিত: ১০:৩৬ এএম, ১২ ডিসেম্বর ২০১৯

সম্প্রতি বিভিন্ন মিডিয়ায় দল থেকে পদত্যাগ ও গোপন বৈঠক সংক্রান্ত প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান ও পটুয়াখালী জেলা সভাপতি এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী। বুধবার সন্ধ্যায় পটুয়াখালীতে এক সংবাদ সম্মেলনে এই প্রতিবাদ জানান তিনি। শহরের সুরাইয়া ভিলায় এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘যে মুহূর্তে দেশে মন্ত্রী, এমপি ও দলীয় ক্যাডারদের সীমাহীন দুর্নীতি, দলীয়করণ, পিঁয়াজসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, বাক-ব্যক্তি ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা বিপন্ন, সারা দেশে বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে হামলা-মিথ্যা মামলার কারণে এক অরাজক ও শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এ পরিস্থিতি থেকে দেশ ও জাতিকে রক্ষায় বিএনপির নেতৃত্বে নেতাকর্মীরা দেশের অন্যান্য স্থানের মতো পটুয়াখালীতেও ঐক্যবদ্ধ। ঠিক সেই মুহূর্তে কয়েকটি মিডিয়ায় দল থেকে আমার পদত্যাগের সম্ভাবনা নিয়ে ও আমার ঢাকার বাসায় গোপন বৈঠকের একটি সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও ভুয়া সংবাদ প্রচারিত হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘দল থেকে পদত্যাগের কোনো সিদ্ধান্ত কখনও আমি নেইনি এবং আমার বাসায় এ সংক্রান্ত কোনো বৈঠক হয়নি। দলকে ক্ষতিগ্রস্ত এবং আমার ইমেজ ও সুনাম ক্ষুণ্ন করার জন্য একটি কুচক্রি মহল ভুয়া সংবাদ রটাচ্ছে। পদত্যাগের সংবাদটি ক্ষমতাসীনদের ষড়যন্ত্রের একটি অংশ। তাই আমি মিথ্যা, বানোয়াট সংবাদ ও অপপ্রচারের তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

সাবেক এ নৌ প্রধান বলেন, ১৯৯৫ সালে চাকরি থেকে অবসর নেয়ার পর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপিতে যোগ দেই। সেই থেকে দীর্ঘ ২৫ বছর দলের ভাইস চেয়ারম্যান ও জেলা সভাপতি হিসেবে একাধিকবার দায়িত্ব পালন করছি। বিএনপি জোট সরকারের স্বরাষ্ট্র ও বাণিজ্যমন্ত্রী হিসেবে দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছি। পটুয়াখালী-১ আসন থেকে দুইবার এমপি নির্বাচিত হয়ে নিজ নির্বাচনী এলাকাসহ সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলের ব্যাপক উন্নয়ন সাধন করি। তাই দল থেকে পদত্যাগের কোনো প্রশ্নই আসে না। বিএনপি আমার প্রথম ও শেষ ঠিকানা।

তিনি আরও বলেন, মইনউদ্দিন-ফখরউদ্দিনের জরুরি অবস্থাকালীন বিতর্কিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে মিথ্যা মামলায় দীর্ঘ ১৮ মাস কারাগারে ছিলামরি। পরবর্তীতে বর্তমান স্বৈরাচারী সরকারের রোষানলে পড়ে তিনবার গ্রেফতার ও কারাভোগ এবং নির্যাতিত হয়েছি। এ পর্যন্ত ডজন খানেক মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে আমার বিরুদ্ধে। এসব মামলা চলমান আছে এবং এখনও প্রতিমাসে আমাকে আদালতে হাজিরা দিতে হয়। এ সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর ভোটারবিহীন প্রহসনের নির্বাচনের আগ পর্যন্ত আমার পটুয়াখালীর বাসভবনে অসংখ্যবার হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে সরকার দলীয় সন্ত্রাসীরা।

লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, গণতন্ত্রের অতন্দ্র প্রহরী দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলায় ফরমায়েশি রায়ের মাধ্যমে কারাগারে রেখে সরকার বাকশালী কায়দায় দেশ চালাচ্ছে। এ সরকারের হাতে মানুষের জীবন, দেশের গণতন্ত্র এবং স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব কোনোটাই আজ নিরাপদ নয়। সরকারের পায়ের তলার মাটি সরে যাওয়ায় এখন অত্যাচার-নির্যাতন চালিয়ে বিএনপির নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন দমিয়ে রাখার ব্যর্থ চেষ্টা করছে। সারা দেশে বিএনপির শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পুলিশ বাধাঁ দিচ্ছে এবং ছাত্রলীগ-যুবলীগ হামলা করছে। সরকারি ছত্রছায়ায় লালিত আওয়ামী সন্ত্রাসীরা সারা দেশে যে হত্যার রাজনীতি অব্যাহত রেখেছে এবং পুলিশ যেভাবে বিনা কারণে গ্রেফতার করছে, তাতে শুধু বিরোধী রাজনৈতিক নেতা-কর্মীরাই নয়, বরং সাধারণ জনগণও শঙ্কিত।

এ সময় তিনি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের জোর দাবি জানান।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. ওয়াহিদ সরোয়ার কালাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান খান, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাড. মজিবর রহমান টোটন, প্রচার সম্পাদক মিজানুর রহমান প্রমুখ। এছাড়া জেলা বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদলসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

মহিব্বুল্লাহ্ চৌধুরী/এমএমজেড/জেআইএম