পরিত্যক্ত বোতল পরিণত হলো লাল-সবুজের মানচিত্রে

পর্যটকদের ব্যবহৃত প্লাস্টিকের বোতল, পলিথিনসহ নানা বর্জ্যে যখন পাহাড়ের নান্দনিক সৌন্দর্য ম্লান হচ্ছে তখন সাজেক ও খাগড়াছড়ির বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্র থেকে কুড়িয়ে আনা নানা রঙের পরিত্যক্ত প্লাস্টিকের বোতলে বাংলাদেশের ‘লাল-সবুজ মনচিত্র’ তৈরি করা হয়েছে পাহাড়ি জেলা খাগড়াছড়িতে।

শুধু একটি মানচিত্রই নয়, কলমদানি, ফুলের টব, ডাস্টবিনসহ নানা ধরনের ‘শোপিস’ তৈরি করা হয়েছে এসব পরিত্যক্ত বোতল দিয়ে, যা দেখা যাবে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বিডি-ক্লিন খাগড়াছড়ি আয়োজিত জনসচেতনতামূলক এক প্রদর্শনীতে।

মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) থেকে দুই দিনব্যাপী প্রদর্শনী হওয়ার কথা থাকলেও একদিন পিছিয়ে বুধবার (১১ ডিসেম্বর) সকালের দিকে খাগড়াছড়ি জেলা শহরের কদমতলী পুলিশ ক্লাবের পাশের খোলা মাঠে আয়োজিত দিনব্যাপী প্রদর্শনীর উদ্বোধন করবেন খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস।

এমনটাই জানিয়েছেন আয়োজক সংগঠন বিডি-ক্লিন খাগড়াছড়ির সমন্বয়ক মো. শাহাদাত হোসেন কায়েশ। এছাড়া প্রদর্শনীতে পরিত্যক্ত বোতলকে রিসাইক্লিং করে কীভাবে তেল ও গ্যাস উৎপাদন করা যায় সেটিরও প্রতীকী উপস্থাপনা থাকবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

‘পরিচ্ছন্নতা শুরু হোক আমার থেকে’ এ মন্ত্রে দীক্ষিত হয়ে পরিচ্ছন্ন ও জীবাণুমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে সারাদেশের মতো খাগড়াছড়িতে কাজ করছে স্বেচ্ছাসেবী প্লাটফর্ম ‘বিডি ক্লিন’। যারা ইতোমধ্যে পুরো জেলায় নিজেদের কার্যক্রম ছড়িয়ে দিয়েছে। জনসচেতনতা সৃষ্টিসহ পরিচ্ছন্নতার অংশ হিসেবে বিডি ক্লিন পরিবারের সদস্যরা এবার সাজেকসহ খাগড়াছড়ির পর্যটন কেন্দ্রগুলো পরিচ্ছন্নতায় মাঠে নেমেছে। এরই অংশ হিসেবে ১০ দিন ধরে পর্যটকদের তীর্থভূমি সাজেক ও খাগড়াছড়ির বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্র থেকে সংগ্রহ করেছে অর্ধ লাখের বেশি পরিত্যক্ত প্লাস্টিকের বোতল। আর বিভিন্ন রঙের পরিত্যক্ত বোতলেই অভিনব কায়দায় তৈরি করেছে প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশের মানচিত্রসহ বিভিন্ন ধরনের শোপিস।

পর্যটকদের ব্যবহৃত পরিত্যক্ত প্লাস্টিকের বোতল আর পলিথিনসহ যত্রতত্র তাদের ফেলা বর্জ্যে পাহাড়ের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র সাজেকসহ বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্র প্রকৃতির নান্দনিক সৌন্দর্য হারাতে বসেছে। যখন জনসচেতনতার অভাব মারাত্মক আকার ধারণ করেছে তখন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ইভেন্ট করে খাগড়াছড়ির বিডি-ক্লিন পরিবার।

এসব তথ্য জানিয়ে বিডি-ক্লিন খাগড়াছড়ির সমন্বয়ক মো. শাহাদাত হোসেন কায়েশ জানান, পর্যটকদের ফেলা পরিত্যক্ত প্লাস্টিকের বোতল আর পলিথিন পর্যটন কেন্দ্রগুলোকে ময়লার স্তূপে পরিণত করেছে।

তিনি বলেন, এ শহর আমার, এ শহরের সৌন্দর্য রক্ষার দায়িত্বও আমার। এসময় পর্যটন কেন্দ্রগুলোর নান্দনিকতা রক্ষায় সুষ্ঠু বর্জ্য ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি। ছোট আকারে হলেও এমন প্রদর্শনী জনসচেতনতা সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন আয়োজক সংগঠন বিডি-ক্লিন খাগড়াছড়ির এ সমন্বয়ক।

মুজিবুর রহমান ভুইয়া/এমএএস/এমকেএইচ