‘পুলিশের পোশাক’ পরে পাঁচ স্বর্ণের দোকানে ডাকাতি
গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলায় পুলিশ পরিচয়ে পাঁচটি স্বর্ণের দোকানসহ সাত দোকানে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। সোমবার (০৯ ডিসেম্বর) রাতে উপজেলার নাগরী ইউনিয়নের উলুখোলা পুলিশ ফাঁড়ির মাত্র ২০০ গজ দূরে এ ডাকাতির ঘটনা ঘটে।
এতে স্বর্ণের পাঁচ দোকানির আনুমানিক ৫৫ ভরি স্বর্ণালঙ্কার, ৩৪০ ভরি রূপা লুট করে নিয়ে যায় ডাকাত দল। সাতটি দোকান ও একটি মুরগির পিকআপভ্যান থেকে নগদ ২ লাখ ৪৫ হাজার টাকা লুটে নিয়েছে ডাকাতরা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ঘটনার সময় পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ রূপন চন্দ্র সরকার ফাঁড়িতে ছিলেন না। তিনি ফাঁড়িতে থাকলে হয়তো ডাকাতির এমন ঘটনা ঘটত না। ফাঁড়ির ইনচার্জ ফাঁড়িতে না থাকায় ডাকাত দল এমন সুযোগ নিয়েছে।
স্বর্ণালঙ্কার ও টাকা লুট করা দোকানগুলো হলো- উলুখোলা বাজারের সজলের মালিকানাধীন সোনালী জুয়েলার্স, নারায়ণ চন্দ্র রায়ের মালিকানাধীন রাজীব জুয়েলার্স, চঞ্চল চন্দ্র দাসের মালিকানাধীন শিল্পী জুয়েলার্স, সুকান্ত চন্দ্র দাসের মালিকানাধীন সন্দীপ জুয়েলার্স, দীপঙ্কর চন্দ্র দাসের মালিকানাধীন রূপশ্রী জুয়েলার্স, ইউসুফের চায়ের দোকান, আক্তারের মুরগির দোকান এবং একটি মুরগির পিকআপভ্যানের চালক-হেলপার।
বাজারে দায়িত্বে থাকা নিরাপত্তা প্রহরীদের বরাত দিয়ে নাগরী ইউপি সদস্য বাবলু গাব্রিয়েল রোজারিও বলেন, রাত ১২-৩টার মধ্যে পুলিশের পোশাক পরিহিত ৩০-৪০ জনের একটি ডাকাত দল বাজারে প্রবেশ করে। তারা প্রথমে বাজারে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সাত নিরাপত্তা প্রহরীকে বাজারের একটি দোকানে আটকে রাখে। পরে বাজারের প্রতিটি প্রবেশ রাস্তায় নিজেদের লোক দিয়ে পাহারা বসায়। এরপর একে একে পাঁচটি জুয়েলার্স, চা ও মুরগির দোকানে ডাকাতি করে পালিয়ে যায় তারা।
নারায়ণ চন্দ্র রায়ের মালিকানাধীন রাজীব জুয়েলার্সের কর্মচারী জানান, রাত আনুমানিক ২টার দিকে পুলিশ পরিচয় দিয়ে দোকান খুলতে বলে। বাজারের প্রায় ২০০ গজ দূরত্বে স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়ি। তাই স্থানীয় পুলিশ ভেবে দোকান খুলে দেয়া হয়। এ সময় দেখি ১২-১৩ জন লোক দাঁড়ানো। এদের মধ্যে ৬-৭ জনের গায়ে পুলিশের পোশাক। তাদের হাতে ওয়্যারলেস এবং অস্ত্র ছিল। বাকিদের গায়ে কালো পোশাক ও মুখোশ পরা ছিল। পরে তারা দোকান লুট করেন।
সন্দীপ জুয়েলার্সের মালিক সুকান্ত বলেন, বাজারের এত কাছে পুলিশ ফাঁড়ি। কিন্তু ডাকাতির এমন ঘটনা আমাদের বিস্মিত করেছে। আমরা একেবারে সর্বস্বান্ত হয়ে গেলাম। রাস্তায় বসা ছাড়া আমাদের কোনো উপায় নেই।
উলুখোলা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই রূপন চন্দ্র সরকার বলেন, ওই সময় টহলে নাগরী বাজারে ছিলাম আমি। এদিকে কি হয়েছে তা আমার জানা ছিল না।
গাজীপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) শামসুন্নাহার বলেন, ডাকাতির ঘটনা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে এ ব্যাপারে কাউকে আটক করা যায়নি।
আব্দুর রহমান আরমান/এএম/জেআইএম