ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

কাপ্তাই হ্রদে ভেসে বেড়াবে ‘সিভাসু গবেষণা তরী’

জেলা প্রতিনিধি | রাঙ্গামাটি | প্রকাশিত: ০৬:৫৮ পিএম, ২৮ নভেম্বর ২০১৯

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বৃহত্তম কৃত্রিম জলাধার রাঙ্গামাটির কাপ্তাই হ্রদের ‘প্রাণ ও জীববৈচিত্র্য’ নিয়ে গবেষণার জন্য নির্মিত বিশেষায়িত জাহাজ ‘গবেষণা তরী’র উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে গবেষণা তরীর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন রাঙ্গামাটির সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার, সিভাসু’র ভিসি প্রফেসর গৌতমবুদ্ধ দাশ, রাঙ্গামাটির জেলা প্রশাসক একেএম মামুনুর রশীদসহ বিভিন্ন বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধনকালে বলেন, কাপ্তাই হ্রদে কীভাবে আরও মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধি করা যায় সে বিষয় নিয়ে আমরা চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিমেল সায়েন্স বিশ্ববিদ্যালয়কে দায়িত্ব দিই। তারা হ্রদে মাছের বংশবৃদ্ধি, ডিম সংরক্ষণসহ আরও কীভাবে মৎস্য উৎপাদন করা যায় সে বিষয়ে গবেষণা করবে, এতে এ এলাকার যেমন মৎস্য উন্নয়ন হবে, তেমনি এলাকার আর্থসামাজিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিমেল সায়েন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিভাসু) উদ্যোগে সিভাসু গবেষণা তরী জাহাজ নির্মাণ করা হয়েছে। ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে নারায়ণগঞ্জের একটি জাহাজ নির্মাণ প্রতিষ্ঠান রাঙ্গামাটির পুরোনো হেলিপ্যাড এলাকায় এ জাহাজ তৈরির কাজ শুরু করে। চলতি বছরের জানুয়ারিতে পরীক্ষামূলকভাবে এ জাহাজ লেকে নামানো হয়।

Rangamati-CVASU

৩ কোটি ৮৬ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত জাহাজের অভ্যন্তরে ল্যাব তৈরি করা হয়। এ তরীতে প্রায় ১৫টি বিষয় নিয়ে গবেষণার কাজ করা হবে। এর মধ্যে রয়েছে হ্রদের বিভিন্ন প্রজাতির মাছের সংখ্যা বের করা, মাছের অভয়াশ্রম সৃষ্টির জন্য স্থান নির্বাচন, সময়ের সঙ্গে হ্রদের বিভিন্ন ভৌত রাসায়নিক পরিবর্তন বিশ্লেষণ করা, বিলুপ্তপ্রায় মৎস্য প্রজাতি পুনরুদ্ধারের চেষ্টা, হ্রদে চাষযোগ্য সম্ভাব্য প্রজাতি বের করা, বিভিন্ন মাছের প্রজননক্ষেত্রের বাস্তব অবস্থা নিরূপণ, প্রজননক্ষেত্র নষ্ট হওয়ার কারণ বিশ্লেষণ ও পদক্ষেপ গ্রহণ, স্থানীয় জনশক্তিকে খাঁচায় ও পেন কালচারের মাধ্যমে মাছ চাষে উদ্যোগী করা, ঘোনায় মাছ চাষের সুবিধা-অসুবিধা যাচাই করা, হ্রদের মাছের প্রাকৃতিক খাদ্যের বিস্মৃতির অবস্থা নিরূপণ, প্রাকৃতিক খাদ্যের উৎপাদন বাড়াতে করণীয় নির্ধারণ, হ্রদ ভরাট হওয়ার কারণ উদ্ঘাটন, বিশ্লেষণ ও নিরূপণে উদ্যোগ এবং হ্রদের দূষণ দূরীকরণে ব্যবস্থা গ্রহণ করা। তরীটি ৬৮ হাজার হেক্টর আয়তনের হ্রদে চলাচল করবে।

এ জাহাজের মাধ্যমে হ্রদের মাছ কমে যাওয়ার কারণ অনুসন্ধান ও সংরক্ষণে নানা পরিকল্পনা, উদ্যোগ এবং সিভাসুর এমএস ও পিএইচডি লেভেলের শিক্ষার্থীরা সারা বছর গবেষণা কার্যক্রম চালাতে পারবেন। মালয়েশিয়া কৃত্রিম হ্রদ লেক কেনিয়র নিয়ে দীর্ঘমেয়াদি গবেষণা পরিচালনা করে। পরে তারা ওই হ্রদ বিপন্ন প্রজাতির মাছের অভয়ারণ্য হিসেবে গড়ে তোলে। তাদের সেই হ্রদের অভিজ্ঞতাকে পুঁজি করে কাপ্তাই হ্রদে নামানো হয়েছে ভ্রাম্যমাণ সিভাসু গবেষণা তরী। এ তরী ১৫ ধরনের কাজ করবে। বর্তমানে তরীটি ব্যবস্থাপনায় সাতজন কর্মরত।

এদিকে একই দিন পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রত্যন্ত এলাকায় সোলার প্যানেল স্থাপনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ প্রকল্প উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রকল্পটি উদ্বোধন করেন তিনি। এসময় রাঙ্গামাটির পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নববিক্রম কিশোর ত্রিপুরা ও সুবিধাভোগীদের সঙ্গে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, পার্বত্য এলাকার (২০-২৫) বছরের মধ্যে যেসব এলাকায় বিদ্যুৎ পৌঁছানোর সম্ভাবনা নেই সেসব এলাকায় সৌর বিদ্যুতের মাধ্যমে বিদ্যুৎসেবা পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। প্রকল্পে প্রথমে ২০১৫-১৬ থেকে ২০১৯ জুন পর্যন্ত মোট বরাদ্দ হয় ৭৬ কোটি ৬ লাখ ৩১ হাজার টাকা। প্রকল্পটির মাধ্যমে ১৩ হাজার ৭০৮ জন সুবিধা ভোগ করছে।

সাইফুল বিন হাসান/এমএএস/পিআর