মুক্তিযুদ্ধে জিতলেও ডায়াবেটিসের কাছে হেরে যাচ্ছেন ইসরাইল
দেশের জন্য ১৯৭১ সালে অস্ত্রহাতে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন ইসরাইল সরদার (৭২)। এতে বিজয়ী হয়ে দেশ স্বাধীন করতে পারলেও এখন ডায়াবেটিসের কাছে হারতে বসেছেন এই বীর মুক্তিযোদ্ধা। বর্তমানে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি। খাওয়া-দাওয়ার পাশাপাশি হারিয়ে ফেলেছেন চলাফেরার সক্ষমতাও।
সাতক্ষীরা শহরের কাটিয়া মাস্টারপাড়া এলাকার বাসিন্দা মুক্তিযোদ্ধা ইসরাইল সরদার। ডায়াবেটিস, কিডনি, প্যারালাইসিস ও শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হয়ে বর্তমানে হাসপাতালের ২ নং ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছেন।
স্ত্রী রোকেয়া বেগম জানান, ইসরাইল সরদার মিষ্টি খুব পছন্দ করতেন। অনেক বেশি মিষ্টি ও মাছ-মাংস খেতেনে। পাশাপাশি সব খাবারও খেতেন প্রচুর। এক বছর আগে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ডায়াবেটিস ধরা পড়ে। সেই থেকেই ওষুধপত্রের মাধ্যমে সুস্থ হওয়ার চেষ্টা। এখন আর কিছুই খেতে পারে না, খাওয়ার কোনো চাহিদাও নেই।
তিনি জানান, ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার আগে ইসরাইল সরদারের কোনো রোগ ছিল না। এক সপ্তাহ আগে শরীরের বাম পাশ অবশ হয়ে গেছে। নড়াচড়া, চলাফেরা, খাওয়া-দাওয়া কিছুই করতে পারছেন না। শ্বাসকষ্টও বেড়েছে। সেই সঙ্গে কিডনির সমস্যাও দেখা দিয়েছে।
তিনি বলেন, আমার স্বামী মুক্তিযোদ্ধা। দেশের জন্য যুদ্ধ করেছেন। যুদ্ধে জয়ী হতে পারলেও এখন ডায়াবেটিসের কাছে হেরে যাচ্ছেন।
ইসরাইল সরদারের চিকিৎসা সংক্রান্ত দেখভালের দায়িত্বে রয়েছেন সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের চিকিৎসক এমডি নুর আলম।
তিনি জানান, ইসরাইল সরদার ডায়াবেটিস, কিডনি, শ্বাসকষ্ট ও প্যারালাইসিসে আক্রান্ত। ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার পরও অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন ও চলাফেরার কারণে আরও অসুস্থ হয়েছেন। বর্তমানে চলাফেরার সক্ষমতাও হারিয়ে ফেলেছেন। আমরা তাকে চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ করার চেষ্টা করছি।
তিনি আরও বলেন, খাদ্যে ভেজাল ও রাসায়নিক ব্যবহারের কারণে ডায়াবেটিসে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। রোগটিতে একবার আক্রান্ত হলে একেবারে নির্মূল করা সম্ভব না হলেও নিয়ন্ত্রিত চলাফেরা ও খাদ্যাভাস পরিবর্তনের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। সে ক্ষেত্রে পরিশ্রম করার বিকল্প নেই।
এমএমজেড/এমকেএইচ