স্বামী জাহাজ দুর্ঘটনায়, ৫ দিন পর স্ত্রী ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহত
স্বামীর কুলখানি শেষে চট্টগ্রামে ফেরার পথে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় ট্রেন দুর্ঘটনায় মারা গেছেন স্ত্রীও। সোমবার রাতের ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন শ্রীমঙ্গলের জাহিদা খাতুন (৪৫)।
দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন জাহিদার মা ও তার তিন সন্তান। তাদের বাড়ি শ্রীমঙ্গল উপজেলার গাজীপুর এলাকার রামনগরে। জাহিদার ননদ হাসিনা খাতুন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
গত ৭ নভেম্বর চট্টগ্রামে জাহাজ দুর্ঘটনায় নিহত হন জাহিদা খাতুনের স্বামী মুসলিম মিয়া। মুসলিম মিয়ার গ্রামের বাড়ি মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল গিয়েছিলেন স্ত্রী জাহিদা খাতুন। সেখানে স্বামীর কুলখানি শেষে ফেরার পথে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহত হলেন তিনি।
জাহিদার ননদ হাসিনা বলেন, মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার গাজীপুর এলাকার রামনগরের মুসলিম মিয়া পরিবার-পরিজন নিয়ে কর্মসূত্রে চট্টগ্রামের পাহাড়তলীতে বসবাস করতেন। জাহাজ কাটা শিল্পে কাজ করতেন তিনি।
জাহাজ কাটার সময় গত ৭ নভেম্বর তিনি দুর্ঘটনায় নিহত হন। স্বামীর কুলখানি অনুষ্ঠান সম্পন্ন করতে স্ত্রী জাহিদা দুই ছেলে, দুই মেয়ে ও শাশুড়িকে নিয়ে শ্রীমঙ্গলে আসেন। কুলখানি অনুষ্ঠান শেষে সোমবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে সিলেট থেকে ছেড়ে আসা চট্টগ্রামগামী উদয়ন এক্সপ্রেসে করে চট্টগ্রাম ফিরছিলেন তারা। রাত পৌনে ৩টার দিকে কসবায় ট্রেন দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই জাহিদা নিহত হন।
এ দুর্ঘটনায় আহত হন জাহিদার বড় ছেলে ইমন (১৭), মেয়ে সুমী (১৯), মীম (৮) ও মা সুরাইয়া খাতুন। তাদের মধ্যে ইমন ও সুরাইয়া খাতুনের দুই পা দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। তাদের উদ্ধার করে ঢাকার জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (পঙ্গু হাসপাতালে) পাঠানো হয়েছে। দুই মেয়ে সুমী ও মীম ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পরিবারের আরেক সদস্য সুমন ভিন্ন বগিতে থাকায় সুস্থ আছেন বলেন জানান হাসিনা খাতুন।
এর আগে সোমবার দিবাগত রাত পৌনে ৩টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার মন্দবাগ রেলওয়ে স্টেশনে চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা আন্তঃনগর ঢাকাগামী তূর্ণা নিশীথা ও সিলেট থেকে ছেড়ে আসা চট্টগ্রামগামী আন্তঃনগর উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেনের সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে। আহত হয়েছেন শতাধিক যাত্রী।
এএম/এমএস