আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে চাইছে না সাতক্ষীরা উপকূলের মানুষ
ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরায় ১০ নম্বর মহাবিপৎসংকেত জারি করা হয়েছে। দুর্যোগ মোকাবিলায় উপকূলীয় এলাকার মানুষদের প্রশাসনের পক্ষ থেকে আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে। তবে আশ্রয় কেন্দ্রে যেতে চাইছে না মানুষ।
ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের প্রভাবে জেলার উপকূলবর্তী নদীগুলোতে পানি বাড়ছে। একই সঙ্গে নদী উত্তাল রয়েছে। ঝুঁকিতে রয়েছে উপকূলবর্তী এলাকার নদীর বাঁধের কিছু কিছু স্থান।
উপকূলীয় শ্যামনগর উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ক কর্মকর্তা (পিআইও) শাহিনুর ইসলাম বলেন, শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা ও পদ্মপুকুর ইউনিয়ন দুটি অধিক ঝুঁকিতে রয়েছে। এছাড়া বুড়িগোয়ালিনী, আটুলিয়া, কৈখালী ও মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নও ঝুঁকিপূর্ণ। আমরা এসব এলাকার মানুষদের আশ্রয়কেন্দ্রে নেয়ার চেষ্টা করছি। কিন্তু মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রে আসতে চায় না। তারা বাড়িতেই থাকতে চায়। কেউ কেউ তাদের আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে চলে যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, সকাল ১০টা পর্যন্ত বিভিন্ন ইউনিয়নের প্রায় এক হাজার মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। স্থানীয় ইউনিয়ন চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে লোকজনদের বুঝিয়ে আশ্রয় কেন্দ্রে নেয়া হচ্ছে।
শ্যামনগর উপজেলার উপকূলীয় নীলডুমুর ঘাট এলাকার ইমরান হোসেন জানান, মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রে যেতে চাইছে না। উপজেলা নির্বাহী অফিসার, পুলিশ অনুরোধ করেও কাউকে নিতে পারছে না। রমজাননগর এলাকায় বেশ কিছু মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে।
শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার এম কামরুজ্জামান জাগো নিউজকে বলেন, আমি সকাল থেকেই উপকূলীয় গাবুরা ইউনিয়নের এলাকায় রয়েছি। এখানকার মানুষদের আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিতে বলা হচ্ছে, বোঝানো হচ্ছে। মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে যাচ্ছে।
অন্যদিকে আশাশুনি উপজেলার উপকূলীয় শ্রীউলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু হেনা শাকিল বলেন, আমার এলাকার খোলপেটুয়া নদীর তিনটি স্থান বর্তমানে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। যে কোনো মুহূর্তে ভেঙে যেতে পারে। আগে অনেক বার পানি উন্নয়ন বোর্ডকে বলা হয়েছিল তারা মেরামত করেনি। এখন পর্যন্ত এলাকার ৫শ মানুষ বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে। তাদের মাঝে চিড়া-গুড় ও শুকনো খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে।
সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল জানান, ঘূর্ণিঝড় বুলবুল মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। ১২শ আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। উপকূলীয় এলাকার অন্তত ৩০ হাজার মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেয়া হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।
আকরামুল ইসলাম/আরএআর/এমএস