ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

এবার আ.লীগ নেতার স্ত্রীর হাতে লাঞ্ছিত শিক্ষক

জেলা প্রতিনিধি | পঞ্চগড় | প্রকাশিত: ০৭:২৫ পিএম, ০৪ নভেম্বর ২০১৯

রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ লাঞ্ছিতের রেশ কাটতে না কাটতেই এবার পঞ্চগড়ের আটোয়ারীতে আওয়ামী লীগ নেতার স্ত্রীর হাতে লাঞ্ছিত হয়েছেন এক শিক্ষক। সোমবার জেএসসি পরীক্ষা শেষে আটোয়ারী মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। 

এদিকে আটোয়ারী মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে শিক্ষক লাঞ্ছিতের প্রতিবাদে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা ওই পরীক্ষা কেন্দ্রে জড়ো হন। পরে বিকেলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এসে উভয় পক্ষের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা করেন।

এর আগে অনিয়মে রাজি না হওয়ায় শনিবার (২ নভেম্বর) রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ প্রকৌশলী ফরিদ উদ্দীন আহম্মেদকে কলেজের ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা ক্যাম্পাসের পুকুরে ফেলে দেয়।

পরীক্ষা কেন্দ্রে দায়িত্বরত শিক্ষক ও স্থানীয়রা জানান, উপজেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক, সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান গোলাপের মেয়ে ওই পরীক্ষা কেন্দ্রে জেএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়। ইংরেজি বিষয়ে পরীক্ষা শেষে রাধানগর হাজী শাহার আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোকলেছার রহমানসহ তিন কক্ষ পরিদর্শক ওই পরীক্ষার্থীসহ অন্যদের খাতা নিয়ে নেন। এ সময় আওয়ামী লীগ নেতার মেয়ে কক্ষ পরিদর্শক মোকলেছার রহমানের কাছে আরও সময় চায়। বাড়তি সময় না দেয়ায় সে কেন্দ্র থেকে বের হয়ে মা রোজিনা আক্তার রোজির কাছে অভিযোগ করে। মেয়ের অভিযোগ শুনে রোজিনা আক্তার পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢুকে আকস্মিক মোকলেছার রহমানের শার্টের কলার ধরে থাপ্পড় মারে। এক পর্যায়ে ওই শিক্ষককে মারতে উদ্যত হয়। পরে সহকর্মীরা ওই শিক্ষককে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করেন।

এ ঘটনায় ওই কেন্দ্রের শিক্ষকরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। পরে অন্য প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরাও এসে জড়ো হন। বিকেলে ইউএনও সৈয়দ মাহমুদ হাসান এবং উপজেলা চেয়ারম্যান তৌহিদুল ইসলামের মধ্যস্থতায় অভিযুক্ত রোজিনা আক্তার ক্ষমা চাইলে বিষয়টির মীমাংসা হয়।

একই পরীক্ষা কক্ষের পরিদর্শক আব্দুল জব্বার বলেন, আমাদের সামনেই মোকলেছার রহমানকে ওই নারী মারধর করে। এক পর্যায়ে সে জুতা খুলেও মারপিট করে। বিষয়টি আমাদের জন্য চরম লজ্জাজনক।

Panchogar-2.jpg

ভুক্তভোগী শিক্ষক মোকলেছার রহমান বলেন, পরীক্ষা শেষের ঘণ্টা বাজার পরও ওই শিক্ষার্থী আমার কাছে বাড়তি সময় চায়। আমি রাজি না হওয়ায় তার মা এসে আমাকে লাঞ্ছিত করে। পরে ইউএনও এবং উপজেলা চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে বিষয়টি মীমাংসা হয়।

আওয়ামী লীগ নেতা কামরুজ্জামান গোলাপ বলেন, পরীক্ষা চলাকালীন পুরো তিন ঘণ্টা ওই শিক্ষক আমার মেয়েকে মানসিক হয়রানি করেন। পরীক্ষা শেষে আমার মেয়ে কান্না করে তার মাকে বিষয়টি জানালে সে ওই শিক্ষককে বকাঝকা করে।

ইউএনও সৈয়দ মাহমুদ হাসান বলেন, বিষয়টি শোনার পর তাৎক্ষণিক আমি ওই পরীক্ষা কেন্দ্রে যাই। উভয় পক্ষের সঙ্গে কথা বলা হয়। এক পর্যায়ে ওই পরীক্ষার্থীর মা তার ভুল বুঝতে পেরে শিক্ষকের কাছে ক্ষমা চায়। পরে উভয় পক্ষের সম্মতিতে বিষয়টি মীমাংসা করা হয়।

প্রসঙ্গত ক্লাসে উপস্থিতি কম থাকায় রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের দুই ছাত্রলীগ কর্মীর ফরম পূরণ হয়নি। তাদের ফরম পূরণের আবদার না মানায় অধ্যক্ষ প্রকৌশলী ফরিদ উদ্দীন আহম্মেদকে লাঞ্ছিত করে পুকুরে ফেলে দেয় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা।

গত শনিবার (২ নভেম্বার) দুপুরের পর রাজশাহী পলিটেকনিক শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং কম্পিউটার বিভাগের শেষ পর্বের ছাত্র কামাল হোসেন সৌরভের নেতৃত্বে এ ঘটনা ঘটে। ওই সময় জোহরের নামাজ পরে পুকুরপাড় দিয়ে নিজ দফতরে ফিরছিলেন অধ্যক্ষ ফরিদ উদ্দীন আহম্মেদ।

সফিকুল আলম/এমএমজেড/এমএস