ভাবতেই পারিনি আমার ছেলে এত জটিল রোগে আক্রান্ত!
টাকার অভাবে সন্তান হানিফকে ঢাকায় নিয়ে যেতে পারছেন না বাবা-মা। ইতোমধ্যে সন্তানের চিকিৎসায় বাড়ির সব জায়গা জমি বিক্রয় করে মহাখালী ক্যান্সার হাসপাতালে চিকিৎসা করেছেন বাবা মো. আলাউদ্দিন।
সেখানকার চিকিৎসকরা হানিফকে উন্নত চিকিৎসার জন্য পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। এজন্য প্রয়োজন কমপক্ষে ১৫ লাখ টাকা। কিন্তু সেই ক্ষমতা নেই তার পরিবারের। বর্তমানে হানিফের পরিবার অনাহারে অর্ধাহারে দিনাতিপাত করছেন।
এদিকে চিকিৎসার অভাবে হানিফ বিছানায় ছটফট করছে। অসহায় মা মোসা. হনুফা বেগম ছেলের পাশে বসে শুধু কান্নাকাটি করছেন। আর বাবা আলাউদ্দিন মৃধা ছুটছেন মানুষের দ্বারে দ্বারে। স্থানীয়রা যে সহযোগিতা করছেন সেটা দিয়ে হনিফের জন্য ওষুধ এবং দুইদিন পর পর রক্তের জোগান ছাড়া কিছুই হচ্ছে না।
অষ্টম শ্রেণির ছাত্র আবু হানিফ মরণব্যাধি ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত। মাসখানেক আগে পরীক্ষা-নিরীক্ষায় ধরা পড়েছে তার এ রোগ। প্রথমে তার চোখের ব্যথা শুরু হয়। তাই প্রাথমিক চিকিৎসা শুরু হয় স্থানীয় নয়ামিশ্রিপাড়া বেসরকারি সংস্থা ফ্রেন্ডশিপ ক্লিনিকে। সেখান থেকে কলাপাড়া উপজেলার আলেয়া ক্লিনিক হয়ে পটুয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে। কিন্তু সেখানেও কোনো সুফল না পেয়ে রাজধানীর ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে নেয়া হলে পরীক্ষা-নিরীক্ষায় ধরা পড়েছে তার এ রোগ। সেখান থেকে মহাখালী ক্যান্সার হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা দরিদ্র বাবা টাকার জোগান দিতে পারবে না বলে বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। বর্তমানে হানিফ বাড়িতে বিছানায় শুয়ে চোখের যন্ত্রণায় ছটফট করছে। সেখানে হানিফের যন্ত্রণার চিৎকার দেখলে চোখে পানি আসবো যে কারও।
হানিফের বাড়ি পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার মহিপুর থানার লতাচাপলী ইউনিয়নের থঞ্জুপাড়া গ্রামে। সে স্থানীয় মুসুল্লীয়াবাদ এ.কে.মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র। চলতি বছর অনুষ্ঠিতব্য জে.এস.সি পরীক্ষা দেয়ার কথা ছিল তার।
ছেলের এমন রোগ জানার পর অসহায় হয়ে পড়েছেন হানিফের বাবা-মা। ব্যয়বহুল এ রোগের চিকিৎসার খরচ শুনে তারা এখন হতাশ। হানিফের প্রাথমিক চিকিৎসা শুরু করতে এরই মধ্যে বাড়ির জমি বিক্রি করতে হয়েছে তাদের।
হানিফের বাবা আলাউদ্দিন মৃধা পেশায় জেলে। তিনি জানান, ভাবতেই পারিনি আমার ছেলে এত জটিল রোগে আক্রান্ত। শোনার পর থেকেই আমাদের মাঝে হতাশা কাজ করছে। কীভাবে চিকিৎসা খরচ চালাবো, এ চিন্তা করতেই দিন শেষ হয়ে যাচ্ছে আমার।
ডাক্তার বলেছেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে তাকে ভারতে নিয়ে যেতে হবে। চিকিৎসায় নাকি প্রায় ১৫ লাখ টাকা খরচ হবে। অথচ চাল কেনার মতো অবস্থা আপাতত নেই আমার। সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় ১০ টাকা কেজির চালে সংসার চলে আমাদের। তার প্রাথমিক চিকিৎসাতেই আমাকে জমি বিক্রি করতে হয়েছে। এখন বিক্রি করার মতো কিছুই নেই আর।
হানিফে মা হনুফা বেগম বলেন, কোনো হৃদয়বান ব্যক্তি সুদৃষ্টি দিলে হয়তো আমার ছেলেটা বেঁচে যাবে। মানুষের মুখে শুনেছি অসহায়দের পাশে দাঁড়াচ্ছেন হৃদয়বান মানুষগুলো। মহান ওই মানুষগুলোর উদ্দেশ্যে বলতে চাই, আমিও অসহায়, প্লিজ আমার ছেলেকে বাঁচান আপনারা।
হানিফের বিষয়ে আরও জানতে কথা বলা যাবে তার বাবার ০১৭৫৮-১২২৩৩০ নম্বরে।
কাজী সাঈদ/এমএএস/পিআর