ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে খানাখন্দ, ঝুঁকি নিয়ে চলছে যানবাহন

প্রকাশিত: ০৯:৪২ এএম, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫

ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের মির্জাপুর উপজেলার জামুর্কী থেকে গোড়াই ক্যাডেট কলেজ এলাকা পর্যন্ত প্রায় ২০ কিলোমিটার এলাকার বিভিন্ন স্থানে কার্পেটিং ওঠে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। মহাসড়কে খানাখন্দ সৃষ্টি হওয়ায় যানবাহন চলছে ধীর গতিতে।

অপরদিকে মির্জাপুর, গাজীপুরসহ বিভিন্ন জেলার শিল্পাঞ্চলের শ্রমিকদের ছুটি হওয়ায় মহাসড়কের বিভিন্ন বাসস্টেশন এলাকায় যাত্রীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। যাত্রীর তুলনায় বাসের সংখ্যা কম থাকায় তাদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। মহাসড়কের খানাখন্দের কারণে চালকরা মহাসড়কে ঝুঁকি নিয়ে ধীর গতিতে যানবাহন চালাচ্ছেন বলে জানা গেছে। ফলে ঈদ-উল-আযহায় ঘরে ফেরা মানুষদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

যানবাহনের চালক ও যাত্রীরা জানায়, গত দুই মাসের বৃষ্টিতে মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে কার্পেটিং ওঠে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এতে মহাসড়কের মির্জাপুর উপজেলার জামুর্কী থেকে ক্যাডেট কলেজ পর্যন্ত প্রায় ২০ কিলোমিটার এলাকায় ছোট বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে বৃষ্টির সময় মহাসড়কে চলাচলকারী ভারী যানবাহনের চাকার ঘর্ষণে পিচ, পাথর এবং ইট উঠে গিয়ে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, মহাসড়কের মির্জাপুর বাইপাস বাসস্ট্যান্ড, পোষ্টকামুরী, কুর্ণী, শুভূল্যা, ধল্যাা, গোড়াই ক্যাডেট কলেজ, হাটুভাঙ্গা রোড, সোহাগপুর, ধেরুয়া রেল ক্রেসিং, দেওহাটা, বাওয়ার কুমারজানি, আছিমতলা সেতুর দুই পাশের এলাকায় ছোট বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। গর্তে জমে রয়েছে বৃষ্টির পানি। এর মধ্যে মির্জাপুর বাইপাস স্টেশন, দেওহাটা, ধেরুয়া রেল ক্রসিং, পোষ্টকামুরী, বাওয়ার কুমারজানি ও হাটুভাঙ্গা এলাকায় গর্তের পরিমাণ বেশি রয়েছে। ওইসব স্থানে ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চালাচ্ছেন বলে চালকেরা জানিয়েছেন।

ধেরুয়া রেল ক্রসিং এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, সড়ক ও জনপথ বিভাগের লোকজন ইট ও বালি দিয়ে গর্ত ভরাট করে দিয়েছেন। ওই এলাকায় যানবাহনের গতি খুবই কম থাকায় থেমে থেমে যান চলাচল করছে।

টাঙ্গাইল থেকে ঢাকাগামী মহানগর পরিবহনের বাসচালক আলী হোসেন ও ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা শ্যামলী পরিবহনের বাসের সুপারভাইজার হারুন অর রশিদ জাগো নিউজকে বলেন, প্রতিদিন এই মহাসড়ক হয়ে উত্তরাঞ্চলের ২২টি জেলার প্রায় ২৫/৩০ হাজার যানবাহন চলাচল করে থাকে। ঈদকে কেন্দ্র করে যানবাহনের সংখ্যা প্রায় দিগুণ হয়েছে। তাছাড়া বৃষ্টির কারণে মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। মহাসড়কে গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় যানবাহনের গতি বেশি থাকলে প্রচণ্ড ঝাঁকুনি খেতে হয়। তাছাড়া যানবাহনের পাতি (স্প্রিং করার যন্ত্র) ভেঙে দুর্ঘটনার আশঙ্কাও থাকে। এ কারণে তাঁদের ঝুঁকি নিয়ে গাড়ির গতি কমিয়ে চালাতে হচ্ছে। এতে গন্তব্যে পৌঁছাতে তাদের সময় বেশি লাগছে বলে তারা জানান।

কালিয়াকৈরের চন্দ্রা থেকে মির্জাপুরের জামুর্কী পর্যন্ত চলাচলরত পিকআপের চালক দেলোয়ার হোসেন, আরশেদ মিয়া, রফিক মিয়া বলেন, আমাদের ছোট গাড়ি। খানাখন্দের কারণে মহাসড়কে যাত্রী নিয়ে চলাচলের সময় ব্যাপক ঝাঁকুনি খেতে হয়। খানাখন্দের কারণে গাড়ির বিভিন্ন যন্ত্রাংশ বিকল হয়। দ্রুত মহাসড়কের মেরামত কাজ করা প্রয়োজন বলে তারা জানান।

মির্জাপুর পৌরসভার কাউন্সিলর আলো রানী বিশ্বাস বলেন, তিনি সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ঢাকায় যাওয়ার জন্য মির্জাপুর বাইপাস বাসস্ট্যান্ড থেকে নিরালা পরিবহনের একটি বাসে উঠেন। মির্জাপুরের দেওহাটা থেকে মহাসড়কের চন্দ্রা পর্যন্ত ১৫ কিলোমিটার রাস্তা যেতে প্রায় দুই ঘন্টা মহাসড়কে যানজটে আটকা থাকেন বলে জানান তিনি।  

ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা বিনিময় পরিবহনের বাসযাত্রী মির্জাপুরের ফরহাদ হোসেন ফটিক বলেন, ঢাকা থেকে মির্জাপুর আসতে প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টা সময় লেগেছে। চন্দ্রা থেকে মির্জাপুর পর্যন্ত ১৮ কিলোমিটার রাস্তা আসতেই প্রায় দেড় ঘণ্টা সময় লেগেছে। তাছাড়া মহাসড়কে সৃষ্টি হওয়া গর্তের উপর দিয়ে বাস চলার সময় প্রচণ্ড ঝাঁকুনি লাগে।

উপজেলার ধেরুয়া গ্রামের বাসিন্দা তপন, দেওহাটা গ্রামের মো. সেলিম মিয়া, রফিক মিয়া, জামান মিয়া বলেন, মহাসড়কের পাশ দিয়ে মোটরসাইকেলযোগে যাওয়া-আসার সময় গর্তে জমা কাদা পানি যানবাহনের চাকার চাপে শরীরে লেগে কাপড় নষ্ট করে। তাছাড়া পাথর কুচি শরীরে প্রচণ্ড আঘাত করে।

মির্জাপুর বাইপাস বাসস্ট্যান্ড এলাকায় কর্তব্যরত ট্রাফিক পরিদর্শক (টিআই) মো. সাজেদুল ইসলাম বলেন, মহাসড়কের মির্জাপুরের ধেরুয়া রেল ক্রসিং এলাকায় ট্রেল চলাচল নির্বিঘ্ন করতে দিনে ৩০ বার বেরিয়ার ফেলা হয়। এ কারণে কিছুটা যানজটের সৃষ্টি হয়ে থাকে। তবে ঢাকার দিকে যানবাহন ধীর গতিতে চলাচল করলেও টাঙ্গাইলের দিকে স্বাভাবিক রয়েছে বলে তিনি জানান।  

মির্জাপুর সড়ক ও জনপথ উপ-বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী ফারুক হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, টানা বৃষ্টির কারণে মহাসড়কের মির্জাপুর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। তবে গর্ত বড় না হয় এবং যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রাখতে ইট-বালু দিয়ে সৃষ্টি হওয়া গর্ত ভরাট করে প্রাথমিক কাজ করা হচ্ছে। বৃষ্টি বন্ধ হলে ঈদের আগেই সিলকোট এর মাধ্যমে রোডহোলস (সড়কের গর্ত) মেরামত কাজ করা হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

এসএস/পিআর