রায়ে সন্তুষ্ট বাদীপক্ষ, আপিল করবে আসামিপক্ষ
বহুল আলোচিত ফেনীর মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যা মামলায় রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন বাদী ও রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা। তবে রায় প্রত্যাশিত হয়নি বলে জানিয়েছেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা।
বৃহস্পতিবার নুসরাত হত্যা মামলায় অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাসহ ১৬ আসামির মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন আদালত। রায় ঘোষণার পর বাদীপক্ষের আইনজীবী শাহজাহান সাজু বলেন, এ রায়ের মাধ্যমে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। উচ্চ আদালতে যেন এ রায় কার্যকর থাকে, তেমন প্রস্তুতি নেব আমরা। মামলার রায়সহ কাগজপত্র এক সপ্তাহের মধ্যে অ্যাটর্নি জেনারেলের দফতরে পাঠানো হবে।
অন্যদিকে রায় প্রত্যাশিত হয়নি বলে জানিয়েছেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা। নুসরাত হত্যা মামলার আসামি মো. শামীমের আইনজীবী সিরাজুল ইসলাম জানান, হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে ১২ আসামি জবানবন্দি দিলেও আদালত ১৬ আসামির মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন। তাছাড়া রাষ্ট্রপক্ষ আসামিরা এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত তা প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। তিনি তার মক্কেল মো. শামীমের পক্ষে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন বলে জানান।
এর আগে সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে অধ্যক্ষ সিরাজসহ এই মামলার ১৬ আসামিকে প্রিজনভ্যানে করে আদালত প্রাঙ্গণে আনা হয়। বেলা ১১টায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মামুনুর রশিদ এজলাসে উপস্থিত হয়ে মামলার রায় পড়া শুরু করেন। টানা ১৫ মিনিট ধরে তিন পৃষ্ঠার রায়ের মূল অংশ পাঠ করেন। এ সময় তিনি অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাসহ ১৬ আসামির ফাঁসির আদেশ দেন। একই সঙ্গে তাদের প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে জরিমানা করেন। এছাড়া রায়ে চারজন পুলিশের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ২৭ মার্চ সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফিকে যৌন নিপীড়নের দায়ে মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ৬ এপ্রিল ওই মাদরাসা কেন্দ্রের সাইক্লোন শেল্টারের ছাদে নিয়ে অধ্যক্ষের সহযোগীরা নুসরাতের শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়। ১০ এপ্রিল রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মারা যান নুসরাত জাহান রাফি।
এ ঘটনায় মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে প্রধান আসামি করে আটজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৪/৫ জনকে আসামি করে নুসরাতের ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান ৮ এপ্রিল সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।
নুসরাত হত্যা মামলায় পুলিশ ও পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাসহ ২১ জনকে বিভিন্ন স্থান থেকে গ্রেফতার করে। পরে ২৯ মে ১৬ জনকে আসামি করে ৮০৮ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্র দাখিল করে পিবিআই।
রাশেদুল হাসান/আরএআর/পিআর