স্বাবলম্বী হতে গিয়ে ৬৯ বছরে বিয়ে, বাবা হলেন ৭১-এ
নিজের পায়ে দাঁড়াতে চেয়েছিলেন। এজন্য শৈশব থেকেই কঠোর পরিশ্রম করেছেন। অবশেষে তিনি সফল হয়েছেন। এখন তিনি ৬০ বিঘা জমির মালিক। স্বাবলম্বী হতে গিয়ে এ সময় তার বিয়ের পিঁড়িতে বসা হয়নি। অবশেষে স্বাবলম্বী হয়েই বিয়ে করলেন।
স্বনির্ভর হতে গিয়ে ৬৯ বছর বয়সে বিয়ে করেন ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলার তারাটি ইউনিয়নের কলাদিয়া গ্রামের বাসিন্দা মো. হাবিবুর রহমান তোতা মিয়া। বিয়ের দুই বছর পর ৭১ বছর বয়সে বাবা হয়েছেন এই বৃদ্ধ। এ ঘটনায় আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে তোতা মিয়া।
তোতা মিয়া সাত ভাইবোনের মধ্যে সর্ব কনিষ্ঠ। বর্তমানে তিনি ২০ একর বা ৬০ বিঘা জমির মালিক। গ্রামের মানুষের সুবিধার্থে প্রতিষ্ঠা করেছেন কয়েকটি প্রতিষ্ঠান। নিজ নামে সরকারি প্রাথমিক স্কুল, কওমি মাদরাসা, জামে মসজিদ, কবরস্থান, ঈদগাহ মাঠ প্রতিষ্ঠা করেছেন তিনি। এ ছাড়া একটি কলেজ ও বৃদ্ধাশ্রম গড়ে তুলতে দুই একর জমিও দান করেছেন তোতা মিয়া।
এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তোতা মিয়ার জেদ ছিল স্বাবলম্বী, স্বনির্ভর ও আত্মবিশ্বাসী হলেই কেবল তিনি বিয়ে করবেন। এজন্য শুরু করেন কঠোর পরিশ্রম। নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে সময় চলে গেছে ৬৯ বছর। অবশেষে সফল হন তোতা মিয়া। তবে এই বয়সে বিয়ে করতে গিয়ে পাত্রী বাছাই নিয়ে বাঁধে বিপত্তি। এই বয়সে তাকে পাত্রী দেবে কে আর কোনো পাত্রী কি তাকে বিয়ে করতে চাইবে?
শেষমেশ তার দিকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছেন একই উপজেলার কুমারগাতা ইউনিয়নের মনতলা গ্রামের ২৩ বছর বয়সী আকলিমা খাতুন। দরিদ্র পরিবারের এক কন্যা সন্তানের জননী স্বামী পরিত্যক্তা আকলিমা খাতুন সম্মত হন তোতাকে বিয়ে করতে। বিয়ের দুই বছরের মধ্যেই অর্থাৎ চলতি বছরের ১৮ জুলাই এই দম্পতি এক পুত্রসন্তান লাভ করেন। হাবিবুর রহমান তোতা সন্তানের নাম দিয়েছেন মো. আল রহমত উল্লাহ।
তোতা মিয়া জানান, শৈশব থেকে স্বাবলম্বী হয়ে ওঠতে আমাকে অনেক ধাপ পার হতে হয়েছে। কলা, আলু চাষাবাদ করে আমি আজ সম্পদের মালিক হয়েছি। মানুষের কল্যাণে প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছি। এজন্য আমাকে কঠোর পরিশ্রম করতে হয়েছে। তিনি বললেন, সফল হতে গেলে বয়স লাগে না।
শিশুটির বিষয়ে তিনি বলেন, ওকে নিয়েই আমার এখন সবচেয়ে বেশি সময় কাটছে। ওই এখন আমার জীবনের নির্ভরযোগ্য বন্ধন।
এসআর/পিআর