শেষ সময়ে জমছে সাতক্ষীরার গরুর হাট
সাতক্ষীরা জেলার অন্যতম বৃহৎ পশুর হাট দেবহাটা উপজেলার পারুলিয়া গরুহাট। আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে দেবহাটায় শেষ মুহূর্তে জমে উঠেছে পশুর হাট। সপ্তাহের রোববার এখানে হাট বসে।
এদিন কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে পশুর ব্যাপক সমাগম ঘটে। কিন্তু দিনটির শুরুতে সকাল থেকে থেমে থেমে হালকা ও মাঝারি আকারে বৃষ্টিতে হাটের পরিবেশ কিছুটা ব্যাহত হয়েছে। জেলা ও জেলার বাইরে থেকে পশু ক্রেতা, বিক্রেতা ও দর্শনার্থীদের কিছুটা গতি কমে যায় বৃষ্টির কারণে।
এবার ঈদের শেষ হাটে ছোট ও মাঝারি আকারের গরুর চাহিদা থাকলেও দাম নেই বড় গরুর। এবার দাম গত বছরের তুলনায় কিছুটা কম। তবে তাতে সন্তুষ্ট নয় খামার ও গরু ব্যাবসায়ীরা। যথেষ্ট উচ্চমূল্য না পাওয়াতে লোকসান গুণতে হচ্ছে তাদের।
অন্যদিকে, ক্রেতাদের সাধ ও সাধ্যের সমন্বয় ঘটিয়ে ধর্মীয় কাজটি সমাধা করতে পশু কিনছেন মানুষ। তাই বিক্রিও নেই বললে চলে। তবে এবার হাটে ভারতীয় পশু না থাকায় দেশি পশুর আগমণ কয়েকগুণ বেশি হওয়ায় অনেক পশুই অবিক্রিত থেকে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন বিক্রেতাদের। রোববার উপজেলার গরুহাটে গিয়ে দেখা গেছে হাটের হাল চিত্র।
গরুর পাশাপাশি পশুর মধ্যে মহিষ ও ছাগল। তবে সেই সঙ্গে ভেড়াও যোগ হয়েছে। হাটে বেচাকেনাও কিছুটা জমে উঠেছে। এর মধ্যে দেশি গরুর সংখ্যাই বেশি।
গরুর বেপারিরা জানান, জেলার অন্য পশুর হাটগুলোতে এবার বিভিন্ন এলাকা থেকে বেশি পশু আসছে। তবে ভারত, নেপাল ও ভুটান থেকে কিছু গরু না আসায় বেশি দামে দেশি গরু কিনতে আগ্রহী নন আনেকেই। হাটে ছাগলের আগমণও যথেষ্ট। আছে ভারতের রাজস্থান থেকে আনার পরে বাড়িতে পালিত মহিষ। এ হাটে গত কয়েকহাটের তুলনায় বিক্রিও কম। হাটে ১৫ থেকে শুরু করে দেড় লক্ষ টাকা পর্যন্ত দাম চাইছে বিক্রেতারা। তবে সর্বোচ্চ ৯৫ হাজার টাকার গরু ও ১৭ হাজার ৫শ টাকার ছাগল বিক্রি হতে দেখা গেছে।
এছাড়া ২০-৪০ হাজার টাকা দামের গরু বেশি বিক্রি হয়েছে। ৬০-৮০ হাজার টাকার মধ্যেও বেশকিছু গরু বিক্রি হয়েছে। খাসি ছাগলও বিক্রি হচ্ছে অনেক। দাম ৩ হাজার টাকা থেকে ২২ হাজার টাকার মধ্যে। তবে ৪/৫ হাজার টাকা দামের ছাগল বেশি বিক্রি হচ্ছে।
সখিপুর থেকে আসা গরু ব্যবসায়ী নুরুজ্জমান জাগো নিউজকে জানান, তার গরুর দাম ৮০ হাজার টাকা দাম চেয়েছেন কিন্তু ক্রেতারা ৫০ হাজার টাকার বেশি দাম দিতে চাইছে না।
কালিগঞ্জ উপজেলার ঘুচদিপুর গ্রামের এবাদুল ইসলাম ৯০ হাজার টাকা, সদর উপজেলার শ্রীরামপুরের জিয়ারুল ৮৮ হাজার, কুলিয়া থেকে নিরাপদ ৮৫ হাজার, ঘলঘলিয়ার অজিত ৭০ হাজার, মৌতলার পানিয়া গ্রামের মুনছুর আলী ৭০ হাজার, রইচপুর এলাকার অজিহার ৬৫ হাজার টাকা দাম চাইলেও সন্ধ্যা পর্যন্ত তাদের গরু বিক্রি হতে দেখা যায়নি।
তাছাড়া তাদের তালিকায় থাকা অসংখ্য গরুর মালিকের গরু বিক্রি না করতে পেরে কম দামে বিক্রি ও বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে গেছেন। কিন্তু হাটে যে দাম উঠছে তাতে খরচ উঠানোই দায় হয়ে পড়েছে। কোনোরকম খরচ উঠলেই বাকি দিনগুলোর মধ্যে তারা পশু বিক্রি করে দেবেন বলে জানান অনেকে।
এজন্য হাট কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামি বুধবারে আরো একবার হাট বসানোর সিন্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। হাটে শুল্ক আদায়কারী সাব্বির হোসেন জাগো নিউজকে জানান, ভারতীয় গরু না থাকায় দেশি গরুর সমাগম বেশি। কিন্তু সে তুলনায় ক্রেতা নেই। এজন্য দাম বেশি হাঁকিয়েও তাতে লাভ হচ্ছে না। কোনোরকম খরচ উঠলেই বিক্রি করে দিচ্ছেন বিক্রেতারা।
এমজেড/এমএস