ঘরে ঘরে ক্যাসিনো, ১২ বছর কি আঙুল চুষেছেন?
সরকারের সবাই লুটেরা মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দেশে মেগা প্রকল্পের নামে ‘মেগা লুটপাট’ হচ্ছে। আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের কাছে অবৈধ শত শত কোটি টাকা পাওয়া যাচ্ছে। জনগণের টাকা লুট করছে তারা।
তিনি বলেন, এখন ঘরে ঘরে ক্যাসিনো। ক্যাসিনোতে ভাসছে সারাদেশ। চলছে রাষ্ট্রীয় টাকা লুটপাট। ১২ বছর ধরে ক্যাসিনো চলছে, সরকার কাউকে ধরেনি। এখন ধরা পড়ে বলছে বিএনপি সরকারের আমল থেকে এটা চলে আসছে। তাহলে ১২ বছর কি করেছিল সরকার? আঙুল চুষেছেন আপনারা?
মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৫টায় সিলেট রেজিস্টারি মাঠে বিএনপির বিভাগীয় মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল।
তিনি বলেন, দেশের মানুষের নিরাপত্তা নেই। প্রতিদিন সারাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় ৫০-৬০ জন মানুষ মারা যায়। সরকার গ্যাস, বিদ্যুৎসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বাড়াচ্ছে। দুর্ভোগের শেষ নেই।
এ সরকার ‘জনগণের সরকার নয়’ উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ২৯ ডিসেম্বর রাতে বিভিন্ন বাহিনী দিয়ে ভোট কারচুপির মাধ্যমে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় এসেছে। এজন্য বর্তমান সংসদ কোনো কাজ করছে না। দেশে ভয়াবহ নৈরাজ্য চলছে বিচারব্যবস্থায়। প্রশাসনকে দলীয়করণ করা হয়েছে। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ধ্বংস করাই সরকারের মূল লক্ষ্য। তাদের প্রতিপক্ষ হচ্ছে জনগণ।
রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, রোহিঙ্গারা দুই বছরের বেশি সময় ধরে এদেশে আছে। একজন রোহিঙ্গাকেও ফেরত পাঠাতে পারেনি এ সরকার। পুরাই ব্যর্থ বর্তমান সরকার।
সমাবেশে মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক আতাউল গণি ওসমানী, প্রয়াত বিএনপি নেতা সাইফুর রহমান ও নিখোঁজ বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলীকে স্মরণ করেন মির্জা ফখরুল।
নিখোঁজ ইলিয়াস আলী প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, দীর্ঘ ছয় বছর তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তাই আমি তাকে স্মরণ করছি। এরকম শত শত পরিবার তাদের স্বজনকে হারানোর জন্য ব্যথিত। তাদের পরিবার-পরিজনের সঙ্গে দেখা হলে সান্ত্বনা দেয়ার ভাষা থাকে না। বিএনপির হাজার হাজার নেতাকর্মী এখন পঙ্গু হয়ে জীবনযাপন করছেন।
তিনি বলেন, আমাদের ২৬ লাখ নেতাকর্মীর নামে মামলা দেয়া হয়েছে। বরেণ্য অনেক ব্যক্তিকে ফাঁসি দেয়া হয়েছে। তাই খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত হোন। সরকার পতনে যেকোনো সময় চূড়ান্ত আন্দোলনের ডাক দেব।
খালেদা জিয়া মুক্তির আন্দোলনের অংশ হিসেবে সিলেটের এই মহাসমাবেশ উল্লেখ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মোশাররফ হোসেন বলেন, এখন বিচারালয় সরকারের নির্দেশে চলে। যে মামলায় খালেদা জিয়াকে সাজা দেয়া হয়েছে তাতে তার সম্পৃক্ততা নেই। খালেদা জিয়াকে ভয় পান বলেই আটক করে রেখেছেন শেখ হাসিনা।
সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, আদালতের ওপর রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা যাচ্ছে না। রাজপথে আন্দোলনের মাধ্যমে তাকে মুক্ত করতে হবে।
সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আবুল কাহের শামীমের সভাপতিত্বে বিভাগীয় মহাসমাবেশে বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এম এ হক, ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, বিএনপি চেয়াপারসনের উপদেষ্টা তাহসিনা রুশদী লুনা, খন্দকার আব্দুল মোক্তাদির, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, ডা. সাখাওয়াত হোসেন জীবন, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক কামরুজ্জামান রতন ও যুবনেতা সুলতান সালাউদ্দিন টুকু।
দুপুর আড়াইটার দিকে শুরু হয় বিএনপির বিভাগীয় মহাসমাবেশ। দুপুর ১টা থেকেই বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদলসহ বিএনপির অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা সমাবেশস্থলে আসা শুরু করেন। সমাবেশ পরিচালনা করেন সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদ ও সিলেট মহানগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ সিদ্দিকী।
পড়ুন : বিএনপির আরও খবর।
ছামির মাহমুদ/এএম/পিআর