ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

সমস্যা নিয়েই চলছে রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতাল

প্রকাশিত: ০৭:০০ এএম, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৫

নিয়মিত কর্মস্থলে থাকেন না ডাক্তার। রোগীদের খাবার সরবরাহ নিয়েও নয় ছয়। টাকা ছাড়া মেলে না ডাক্তারি সার্টিফিকেট। বহির্বিভাগের রোগীদের দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পরও চিকিৎসক ও চিকিৎসা জোটে না। ইমার্জেন্সিতে রোগী ভর্তি নিয়ে বিড়ম্বনা। বলা হচ্ছে রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালের কথা।

এমনকি রোগীদের সঙ্গে নার্স ও স্টাফদের অশোভন আচরণ, হাসপাতাল জুড়ে নোংরা পরিবেশ, অপরিচ্ছন্ন টয়লেট ও বার্থরুম তো রয়েছেই। নেই উন্নত অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস, আলট্রাসনোগ্রাফি, ইসজি ও এক্সরে মেশিন। অপারেশনের জন্য নেই কোনো ওটি ও অস্ত্রোপচার ব্যবস্থা। রোগ নির্ণয়ে নেই কোনো প্যাথলজিক্যাল সুবিধা। আর এ নানা সমস্যা নিয়েই চলছে রাঙামাটি জেনারেল হাসপতাল।

হাসপাতালের নানা সমস্যা ও সংকটের কথা স্বীকার করে সিভিল সার্জন ডা. স্নেহ কান্তি চাকমা জাগো নিউজওেক বলেছেন, বর্তমানে হাসপাতালে জনবল অভাব, যন্ত্রপাতি ও অ্যাম্বুলেন্স সংকট খুব প্রকট। জেনারেল হাসপাতালসহ গোটা জেলার স্বাস্থ্য বিভাগে ১৭৫ ডাক্তারের স্থলে কর্মরত আছেন ১০১ জন। ৭৪টি পদ খালি রয়েছে। ওষুধ বিক্রি ও রোগীদের খাবার সরবরাহ নিয়ে তেমন কোনো অভিযোগ পাননি বলে দাবি করেন সিভিল সার্জন।

অনুসন্ধানে জানা যায়, বর্তমানে রাঙামাটি জেলা সদরে অবস্থিত ১০০ শয্যা বিশিষ্ট একমাত্র সরকারি হাসপাতালটির অবস্থা খুবই নাজুক। হাসপাতালটি চলছে অনেকটা খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে। লোকবল, ওষুধ, প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতিসহ নানা সমস্যা জর্জরিত। ডাক্তারের পাশাপাশি রয়েছে নার্স সংকট। নেই মেডিকেল টেকনোলজিষ্ট। ফলে ব্যাহত হচ্ছে স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা সেবা।

এছাড়াও লেগে আছে আ্যাম্বুলেন্স, এক্সরে ও ইসিজি মেশিনের সমস্যা। হাসপাতালে অত্যাধুনিক চিকিৎসার যন্ত্রপাতি ও ব্লাডব্যাংকের অভাবে সুচিকিৎসা ব্যাহত হচ্ছে। জটিল রোগের চিকিৎসা এবং অস্ত্রপোচারের ব্যবস্থা না থাকায় প্রতিনিয়ত এ সকল রোগী পাঠাতে হচ্ছে  চট্টগ্রাম ও ঢাকাসহ জেলার বাইরে। অনেকে সুচিকিৎসার অভাবে মৃত্যুবরণ করছেন।

জানা যায়, জেলা সদরের একমাত্র এ জেনারেল হাসপাতালে ওষুধ সংকট, বিভিন্ন রোগ নির্ণয়ের জন্য এক্সরে, ইসিজিসহ প্রভৃতির পরীক্ষা-নিরীক্ষার সুবিধা না থাকায় রোগীদের রোগ নির্ণয়ে যেতে হচ্ছে জেলা শহরের বিভিন্ন ডায়াগনেস্টিক সেন্টারে। এছাড়া হাসপাতালের ওয়ার্ডগুলোর অপরিচ্ছন্নতার কারণে রোগীরা হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিতে চান না।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম তিনটি জেলায় বিভক্ত হওয়ার পর পার্বত্য রাঙামাটি জেলায় স্বাস্থ্য ব্যবস্থার অবকাঠামোর ব্যাপক উন্নয়ন ঘটে। বর্তমানে সরকারিভাবে জেলা সদরে ১০০ শয্যার জেনারেল হাসপাতাল এবং অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতিসমৃদ্ধ মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র, নয়টি উপজেলা সদরে ৩১ শয্যার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং ১০ শয্যার একটি হাসপাতাল চালু রয়েছে।

বেসরকারি পর্যায়ে চন্দ্রঘোনা মেমোরিয়াল হাসপাতাল, লংগদু রাবেতা হাসপাতাল, জেলা সদরে এফপিএবির নিরাপদ মাতৃত্ব ও চিকিৎসা সেবা কেন্দ্র, লেক সাইট হাসপাতাল, কাপ্তাইয়ে কেপিএম হাসপাতাল এবং পিডিবি হাসপাতাল চালু আছে।

এছাড়া সরকারিভাবে পুলিশ হাসপাতাল, যক্ষ্মা হাসপাতাল, স্কুল হেলথ সেন্টার, ১১টি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র এবং ২৭টি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র চালু রয়েছে। কিন্তু জনবল সংকট, অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা ও সমন্বয়হীনতার কারণে পার্বত্য জেলায় স্বাস্থ্যসেবার মান পিছিয়ে রয়েছে।

সুশীল প্রসাদ চাকমা/এসএস/এমএস