ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

মোটরসাইকেলে কর্মসংস্থান ৫ সহস্রাধিক বেকারের

জেলা প্রতিনিধি | শরীয়তপুর | প্রকাশিত: ০১:৪২ পিএম, ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৯

মোটরসাইকেলে ভাড়ায় যাত্রী বহন করে শরীয়তপুরে পাঁচ হাজারেরও বেশি বেকার যুবকের কর্মসংস্থান হয়েছে। এ থেকে যে টাকা আয় হয় তা দিয়েই সংসার চালাচ্ছেন তারা।

৬টি উপজেলা ও ৭টি থানা নিয়ে গঠিতে শরীয়তপুর জেলা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে এ জেলায় পাঁচ হাজারেরও বেশি বেকার যুবক ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালাচ্ছেন। সময় বাঁচাতে ও দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছাতে যাত্রীরা এই বিকল্প যান ব্যবহার করছেন। এতে একদিকে যাত্রীদের যেমন সুবিধা হয়েছে, তেমনি বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান হয়েছে। তাছাড়া জেলার বিভিন্ন চরাঞ্চালে যাতায়াতের একমাত্র ভরসাই হচ্ছে ভাড়ার মোটরসাইকেল।

চালকরা জানান, তারা সবাই বেকার। অর্থের অভাবে অনেকেই লেখাপড়া থেকে আগেই ছিটকে পড়েছেন। বিকল্প কোনো কর্মসংস্থান না হওয়ায় মোটরসাইকেলে যাত্রী বহনকেই তারা পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন।

শরীয়তপুর কোর্ট চত্বর মোটরসাইকেল সমিতির সাবেক সভাপতি নুরু মোল্লা বলেন, জেলায় ৫৬টি মোটরসাইকেল স্ট্যান্ড আছে। যার মধ্যে কোর্ট চত্বরও একটি। এখান থেকে তারা জেলার বিভিন্ন স্থানে ভাড়ায় যাত্রী বহন করেন। ওই স্থান থেকে মাঝিরঘাটের দূরত্ব ২৮ কিলোমিটার। এক সঙ্গে দুইজন গেলে ভাড়া নেন ২০০-৩00 টাকা।

চালক আল আমিন বলেন, ‘আমি অনেক গরিব মানুষ। অনেক কাজের সন্ধান করেছি, পাইনি। পরে সংসার চালাতে ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালাচ্ছি। প্রতিদিন প্রায় ১ হাজার ৩শ টাকা আয় হয়। সমস্ত খরচ বাদে ৮০০ টাকা থাকছে। যা আয় হয় তাতে সংসার চলে যাচ্ছে।’

কাঁচিকাটা ইউনিয়নের জব্বারদহল সরদারকান্দি গ্রামের মোটরসাইকেল চালক মো. ইয়াসিন সরদার বলেন, তাদের ইউনিয়নের চারপাশে পদ্মা নদী। তেমন কোনো পাকা রাস্তা নেই। নদীবেষ্টিত এই চরাঞ্চলের এসব রাস্তা দিয়ে মোটরসাইকেল ছাড়া অন্য কোনো যানবাহন চলাচল করে না। সেখানে ভাড়ায় চালিত প্রায় দেড়শ মোটরসাইকেল আছে।

তিনি আরও বলেন, প্রতিদিন তার এক থেকে দেড় হাজার টাকা পর্যন্ত আয় হয়। মোটরসাইকেলের তেল ও অন্যান্য খরচ বাবদ ব্যয় হয় ২০০ থেকে ৩০০ টাকা। বাকি টাকা দিয়ে সংসার চলছে। এছাড়া জেলার চরাত্রা, নওপাড়া ইউনিয়নের চিত্রও একই।

ওই এলাকার যাত্রীরাও খুশি মোটরসাইকেলে চলাচল করতে পেরে। রিপন সরদার, রিয়াজ হাওলাদারসহ অনেকে জানান, চরাঞ্চলের রাস্তা দিয়ে অন্য কোনো যানবাহন চলাচল করে না। এ কারণে তারা নিরুপায় হয়েই ভাড়ার মোটরসাইকেলে বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করছেন।

তারা জানান, এসব রাস্তা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ও দুর্গম। অনেক সময় কোনো অসুস্থ ব্যক্তিকে চিকিৎসার প্রয়োজনে দ্রুত হাসপাতালে নিতে চাইলে নানা রকম ভোগান্তিসহ দুর্ঘটনার কবলে পড়তে হয়। সরকারের কাছে তাদের একমাত্র চাওয়া, অতি দ্রুত এসব চরাঞ্চল ও দুর্গম এলাকায় রাস্তা নির্মাণ ও সংস্কার করে মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ করে দেয়ার।

সাংবাদিক খালেক পেদা ইমন বলেন, ভাড়ায় চালিত প্রতিটি মোটরসাইকেলের সামনে স্টিকার (ভাড়ায় চালিত মটর সাইকেল) অথবা চালকদের গায়ে ইউনিফর্ম থাকা আবশ্যক। অন্যথায় সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্তিতে পড়তে হচ্ছে। তিনি আরও বলেন কয়েকদিন আগে শরীয়তপুর সদর থেকে মোটরসাইকেলে গোসাইরহাট যাচ্ছিলাম। পথে বুড়িরহাট পার হতেই একজন আমার মোটরসাইকেল থামিয়ে দিয়ে বলেন, ‘ভাই ভাড়ায় গোসাইরহাট যাবেন?’

শরীয়তপুর সদর পৌরসভার মেয়র মো. রফিকুল ইসলাম কোতোয়াল বলেন, বেকার না থেকে মোটরসাইকেল চালিয়ে অনেকের কর্মসংস্থান হয়েছে। যারা ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালান তাদের পরিচয়পত্র থাকা প্রয়োজন। যাতে সড়ক দুর্ঘটনা হলে অথবা মাদকসহ ধরা পরলে শনাক্ত করা যায়।

মো. ছগির হোসেন/এমএমজেড/জেআইএম

আরও পড়ুন