সেবা নয়, অনিয়ম ও দুর্নীতিতে ব্যস্ত ফরিদপুর ডায়াবেটিক সমিতি
সেবার মহান ব্রত নিয়ে ১৯৮৩ সালের ২৫ নভেম্বর যাত্রা শুরু করে ফরিদপুর ডায়াবেটিক সমিতি। চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম শুরু হয় ১৯৮৫ সালের ১ আগস্ট। এরপর ২৫ শয্যা বিশিষ্ট ফরিদপুর ডায়াবেটিক হাসপাতালের কার্যক্রম শুরু হয় ২০০০ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি। তিন যুগ পেড়িয়ে সরকারি ও বেসরকারি অনুদানে আজ মহিরুহে পরিণত হয়েছে ফরিদপুর ডায়াবেটিক সমিতি।
এ সমিতির রয়েছে বিশাল হাসপাতাল, ডায়াবেটিক মেডিকেল কলেজ, নার্সিং ইনস্টিটিউটসহ সেবা প্রদানের যাবতীয় অনুসঙ্গ। আজ ডায়াবেটিক সমিতি একটি বৃহৎ প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। ২০০৫ সালের ৩ সেপ্টেম্বর যাত্রা শুরু করে নার্সিং ইনস্টিটিউট। ২০০৯-১০ সেশনে শিক্ষার্থী ভর্তির মধ্য দিয়ে ফরিদপুর ডায়াবেটিক মেডিকেল কলেজ যাত্রা শুরু করে। এর মধ্যে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল দক্ষিণবঙ্গের একটি অন্যতম চিকিৎসা সেবা প্রদান প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিতি লাভ করে।
কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় অবকাঠামো ও জনবল নিয়ে প্রতিষ্ঠানটি কলেবরে বৃদ্ধি পেলেও মূল লক্ষ্য থেকে সরে হতে বসেছে ডায়াবেটিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। যে সেবার মহান ব্রত নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির যাত্রা শুরু সেখানেই হোচট খাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নানা অনিয়ম-দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার কারণে প্রতিদিন হাজারো রোগী এখানে চিকিৎসা নিতে এসে বঞ্চিত হচ্ছে কাঙ্খিত সেবা। কর্তৃপক্ষের স্বেচ্ছাচারিতায় প্রতিষ্ঠানটি চিকিৎসা সেবা প্রদানে সাধারণ মানুষের আকাঙ্খা পূরণ করতে পারছে না। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে রোগীদের। শুধু রোগীরাই নয় নানা বিষয়ে প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের মধ্যেও রয়েছে ক্ষোভ।
জেলা শহর ফরিদপুরে প্রতিষ্ঠিত এ ডায়াবেটিক সমিতি বর্তমানে বিশালাকৃতির প্রতিষ্ঠানে রূপ নিয়েছে। সমিতির অধীনে একটি মেডিকেল কলেজ, হাসপাতাল ও নার্সিং ইনস্টিটিউট ছাড়াও রয়েছে ফরিদপুর হার্ট ফাউন্ডেশন নামে আরেকটি প্রতিষ্ঠান। তবে সিংহভাগ রোগী ও স্বজনদের অভিযোগ, এসব হাসপাতালের উপর বৃহত্তর ফরিদপুরবাসীর ব্যাপক নির্ভরতা থাকলেও কর্তৃপক্ষের অনৈতিক হস্তক্ষেপের কারণে এসব প্রতিষ্ঠান জনগণের সেই আকাঙ্খা পূরণে সচেষ্ট নন। হাসপাতালে রোগীদের কাছ থেকে গলাকাটা ফি আদায় করা হয়। এছাড়াও বিভিন্ন রোগের পরীক্ষা-নিরীক্ষায় মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করা হয়।
রোগীদের সেবায় সরকার থেকে শুরু করে বেসরকারি পর্যায়ের বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান ডায়াবেটিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে বিপুল পরিমাণ অর্থসহ নানা ধরনের সহায়তা প্রদান করে আসছে। কিন্তু এ সমস্ত অর্থ ও সেবা সামগ্রীর ছোট একটি অংশ রোগীদের সেবায় ব্যবহার করা হচ্ছে। এ কারণে বিশেষ করে গরিব ও দুঃস্থ রোগীরা কাঙ্খিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এ চিত্র আউটডোর থেকে শুরু করে রোগ নির্ণয় ও হাসপাতাল পর্যন্ত বিস্তৃত। অর্থাভাবে অনেক গরিব ও দুঃস্থ রোগীকে নূন্যতম সেবা নিয়ে ফিরে যেতে হচ্ছে এ প্রতিষ্ঠান থেকে। আবার কাউকে চিকিৎসা না পেয়েও ফিরে যেতে দেখা গেছে।
হাসপাতালটির নানা অনিয়মের চিত্র সোমবার দিনব্যাপী প্রত্যক্ষ করে জাগো নিউজের এ প্রতিবেদক। সেখানে দূর-দুরান্ত থেকে আসা রোগীদের সঙ্গে কথা হয় এ প্রতিবেদকের। প্রতিবেদকের কাছে রোগী ও তাদের স্বজনরা কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা ও অসহযোগিতার নানা অভিযোগ তুলে ধরেন। তারা অভিযোগ করেন সমস্যা সুরাহার ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ সচেষ্ট নন।
একাধিক রোগী অভিযোগ করে বলেন, হাসপাতালে সেবার মান ভালো শুনে দূর-দুরান্ত থেকে প্রতিদিন হাজারো রোগী এখানে চিকিৎসা নিতে আসে। কিন্তু আসার পর রোগীদের নানাভাবে ভোগান্তির শিকার হতে হয়। প্রথমেই ভোগান্তিতে পড়তে হয় সিরিয়াল নিয়ে। সিরিয়াল দেয়া নিয়ে কোনো শৃঙ্খলা নেই। সিরিয়াল পেলে ডাক্তার দেখানোর পর বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা দেয়া হয়। সেখান থেকে বলে দেয়া হয় এখান থেকেই পরীক্ষা করাতে হবে, অন্যস্থান থেকে পরীক্ষা করা হলে সেই রিপোর্ট ডাক্তার দেখবে না। তারা আরও বলেন, অন্য ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে রিপোর্ট প্রতি দ্বিগুন টাকা নিয়ে থাকে প্রতিষ্ঠানটি। এ হাসপাতালে ডায়াবেটিকসে আক্রান্ত রোগীরা বেশি আসেন, তারা পড়েন সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে। একাধিকবার নানা সমস্যার কথা জানালেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি কর্তৃপক্ষ।
এদিকে হাসপাতালে ভর্তি রোগীদেরকেও নানা ভোগান্তিতে পড়তে হয়। বিশেষ করে দাতব্য প্রতিষ্ঠানের সিট ভাড়া কম হওয়ার কথা থাকলেও এখানে অন্য বেসরকারি হাসপাতালগুলোর চেয়ে সিটভাড়াসহ আনুসঙ্গিক খরচ বেশি নেয়া হয়। এর সঙ্গে রয়েছে হাসপাতালের স্টাফদের অবহেলা। পাশাপাশি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় চিকিৎসকের দেখা মেলাও দুস্কর হয়ে পড়ে রোগীদের। অপরদিকে রোগীদের ছাড়পত্র দেয়ার সময়ও ভোগান্তিতে ফেলে কর্তৃপক্ষ। চিকিৎসক ছাড়পত্র দেয়ার পরেও হাসপাতাল থেকে মুক্তি পেতে রোগী ও তার স্বজনদের চার থেকে পাঁচ ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়। এ অভিযোগ দীর্ঘদিনের হলেও কোনো পদক্ষেপ নেয় না কর্তৃপক্ষ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা ডায়াবেটিকসে আক্রান্ত রোগীদের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়। সকাল ৮টার মধ্যে রোগীরা হাসপাতালে এলেও ডাক্তারদের দেখা মেলে না। যদিও ডাক্তার আসেন, এসেই তিনি প্রথমেই বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের সময় দেন। এরপর শুরু হয় রোগী দেখা। এ সময়ের মধ্যে অনেক রোগীই চিকিৎসাসেবা না নিয়ে ফিরে যান বাড়িতে। আবার অনেক সময় ডাক্তারের রোগী দেখার সময় শেষ হয়ে গেলে অপেক্ষায় থাকা রোগীদের ফিরে যেতে হয় বিনা চিকিৎসায়। সকালে আসা রোগীদের সিংহভাগই হাসপাতালের বইধারী। বইধারী রোগীদের কাছ থেকে ভিজিট পাওয়া যায় না বলেই ডাক্তাররা এদের চিকিৎসাসেবা প্রদানের ক্ষেত্রে উৎসাহী হয় না। কিন্তু রোগী সেবা প্রদানের নামে তারা হাসপাতাল থেকে মাস থেকে মোটা অংকের বেতন ঠিকই তুলে নেন। অভিযোগ রয়েছে হাসপাতালের যে সময়টুকু ডাক্তারদের দেয়ার কথা ওই সময়টুকু নানাভাবে কাটিয়ে দেন তারা। পরে ভিজিট নিয়ে রোগী দেখেন ডাক্তাররা। ডাক্তাররা হাসপাতালের সমস্ত সুযোগ সুবিধা নিয়েও রোগীদের সঙ্গে এ ধরনের আচরণ করলেও তা প্রতিকারে কর্তৃপক্ষ এ পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। এই অরাজকতা চললেও কর্তৃপক্ষ দেখেও না দেখার ভান করে বসে আছেন।
এদিকে এসব প্রতিষ্ঠানে বিগত পাঁচ থেকে সাত বছর ধরে চাকরি করলেও অনেকেরই বেতন বাড়েনি। অথচ মাত্র দুই বছর চাকরি করছেন এমন কর্মচারীর বেতন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ানো হয়েছে। আবার কর্মচারীদের ওভারটাইমের বিল দেয়ার ক্ষেত্রেও রয়েছে কর্তৃপক্ষের স্বেচ্ছাচারী নিয়ম। কতিপয় কর্মচারী কাজ না করেও ওভারটাইওমের নামে বিল তুলে নিচ্ছেন। কর্তৃপক্ষের এ অনিয়ম নিয়েও কর্মচারীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে। কিন্তু চাকরি হারানোর ভয়ে তারা নিরবে সব সহ্য করে যাচ্ছেন।
বিশ্বস্ত সূত্র জানায়, বিশালাকৃতির এ প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত যেসব জিনিসপত্র কেনা হয় সেখানে কখনই স্বচ্ছ প্রক্রিয়া অবলম্বন করা হয় না। মালামাল ক্রয় ও সংস্কার কাজে দরপত্র আহ্বানের নিয়ম থাকলেও প্রতিষ্ঠানটি কখনই তা করে না। নিজেদের পছন্দের লোকদের দিয়ে কাজ সম্পন্ন করে থাকে। কয়েক মাস আগে চারটি লিফট ক্রয় করা হয়। এ ক্ষেত্রেও রয়েছে অনিয়মের অভিযোগ। আবার ওই লিফটগুলো কোনো ধরনের সার্ভিসিং না করেই প্রতিমাসে মোটা অঙ্কের বিল ভাউচার করা হয়।
সূত্র জানায়, প্রতিবছর সরকারি-বেসরকারি নানা উৎস থেকে অনুদান ও সহায়তা প্রদান করা হয় ফরিদপুর ডায়াবেটিক সমিতি ও তার অধীনস্থ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে। এসব টাকা খরচে স্বচ্ছতার অভাব রয়েছে। এতবড় একটি প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক অডিট কখনই স্বচ্ছতার সঙ্গে সম্পন্ন করা হয়নি। দুর্নীতির তথ্য গোপন করে দায়সারা অডিট রিপোর্ট তৈরি করা হয়ে থাকে।
এদিকে হাসপাতালে দরিদ্র ও সামর্থ্যহীন রোগীদের জন্য অনুদান ও সহায়তা হিসেবে আসা ওষুধ সামর্থ্যবানরা লুটপাট করছে। ডায়াবেটিক মেডিকেল কলেজে ছাত্র ভর্তি নিয়েও রয়েছে নানা অভিযোগ। শিক্ষার্থী ভর্তি ক্ষেত্রে দরিদ্র মেধাবি কোটা থাকলেও সেটা অর্থের বিনিময়ে পেতে হয় শিক্ষার্থীদের। আবার কোনো কোনো বছর ভর্তির সময় দরিদ্রদের কোটা নেই বলে জানানো হয়।
হাসপাতালে যে কয়টি ভবন নির্মাণ করা হয়েছে তার অধিকাংশ ভবনেরই কোনো অনুমোদন নেই। পৌরসভা বা সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে অনুমোদন নেয়ার পর ভবন তৈরির নিয়ম থাকলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সেই নিয়মের তোয়াক্কা না করেই ভবন নির্মাণ করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
এ বিষয়ে ফরিদপুর পৌরসভার মেয়র শেখ মাহতাব আলী মেথু বলেন, পুরাতন ভবনগুলো আমার মেয়াদকালে নির্মিত হয়নি। আমার মেয়াদকালে কোনো ভবন নির্মাণ করা হলেও অনুমোদনের বিষয়টি আমার খেয়াল নেই। ১৬তলা নতুন ভবন নির্মাণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পৌর কর্তৃপক্ষের ৭তলা পর্যন্ত অনুমোদনের এখতেয়ার রয়েছে। ওই ভবনটির অনুমোদনের আবেদন আমার কাছে এসেছিল, সেটা সুপারিশ করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছিল। পরে কি হয়েছে তা বলতে পারবো না।
সূত্র জানায়, বর্তমান সময়ে সারাদেশের ন্যায় ফরিদপুরেও ডেঙ্গুর প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসা নিচ্ছেন রোগীরা। ফরিদপুরের বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ডেঙ্গু রোগের পরীক্ষা ফ্রিতে করলেও ডায়াবেটিক হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর পরীক্ষায় নেয়া হয় উচ্চমূল্যে।
সম্প্রতি অনিয়ম ও অস্বচ্ছতার অভিযোগে ফরিদপুর ডায়াবেটিক সমিতি পরিচালিত ডায়াবেটিক অ্যাসোসিয়েশন মেডিকেল কলেজ, হাসপাতাল ও নার্সিং ইন্সটিটিউটের নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত করা হয়। নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অস্বচ্ছতা ও অনিয়মের অভিযোগে চাকরি প্রার্থীদের ক্ষোভের মুখে নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ করেতে বাধ্য হয়েছেন কর্তৃপক্ষ।
অভিযোগ উঠে, বিশাল এ নিয়োগ প্রক্রিয়াকে সামনে রেখে ডায়াবেটিক সমিতির নেতারা অনৈতিক পন্থা অবলম্বনের চেষ্টা চালান। তারা নিয়োগ প্রক্রিয়ার বিভিন্ন তথ্য গোপন রেখে নিজেদের পছন্দের প্রার্থীদের সুবিধা পাইয়ে দেয়ার জন্য শুরু থেকেই তৎপর ছিলেন। ইতোপূর্বেও তারা ডায়াবেটিক সমিতি পরিচালিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অস্বচ্ছতা অবলম্বন করে অনৈতিক সুবিধা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
একটি সংঘবদ্ধ সিন্ডিকেট ডায়াবেটিক হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার পর থেকেই নানাভাবে প্রতিষ্ঠানটিকে কব্জা করে অবৈধ সুবিধা হাতিয়ে নিচ্ছে বলে অভিযোগ। ফলে চিকিৎসাসেবা প্রদানে গড়ে ওঠা এই প্রতিষ্ঠানটি সাধারণ মানুষের আকাঙ্খা পূরণ করতে পারছে না।
ফরিদপুর ডায়াবেটিক সমিতির অধীনে থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোর নানা অনিয়ম দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার নেপথ্যে রয়েছেন সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক শেখ আবদুস সামাদ। তার সহযোগী হিসেবে রয়েছেন মুরাদ মিয়া, চিত্তরঞ্জন ঘোষসহ সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির কতিপয় সদস্য ও হাসপাতালের অসাধু কর্মকর্তা। সমিতির সভাপতি মীর নাছির হোসেন ঐকান্তিকভাবে প্রতিষ্ঠানটির উন্নতি চাইলেও কতিপয় অসাধু সদস্যদের কারণে প্রতিষ্ঠানটিকে দুর্নীতিমুক্ত করতে পারছেন না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ফরিদপুর ডায়াবেটিক সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির এক সদস্য বলেন, সাধারণ সম্পাদক শেখ আব্দুস সামাদসহ কতিপয় সদস্য সমিতিটিকে নিজের সম্পত্তি মনে করে ব্যবহার করছেন। নিয়োগ, ক্রয়, নির্মাণসহ নানা বিষয়ে আর্থিক দুর্নীতি করছেন তারা। অনেক সময় এসব বিষয়ে প্রতিবাদ করতে গিয়েছি কিন্তু তারা একজোট হয়ে আমার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছে।
তিনি আরও বলেন, সভাপতি মীর নাছির সাহেব চেষ্টা করে যাচ্ছেন প্রতিষ্ঠানটিকে অনিয়ম দুর্নীতি মুক্ত করতে। কিন্তু তিনি ফরিদপুরের বাইরে থাকার সুযোগে নানা অনিয়ম করে যাচ্ছে ওই চক্রটি। ফলে প্রতিষ্ঠানটি সেবা প্রদানে কাঙ্খিত লক্ষে পৌঁছাতে পারছে না।
এ ব্যাপারে ফরিদপুর ডায়াবেটিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক শেখ আবদুস সামাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া সম্ভব হয়নি।
ফরিদপুর ডায়াবেটিক সমিতির অধীনে থাকা মেডিকেল কলেজ, হাসপাতাল, নার্সিং ইনস্টিটিউট ও হার্ট ফাউন্ডেশনে দীর্ঘদিন যাবৎ চলছে নানা অনিয়ম দুর্নীতি। এসব অনিয়ম দুর্নীতি নিয়ে ধারাবাহিক প্রতিবেদনের এটি ১ম পর্ব।
বি কে সিকদার সজল/এমএএস/এমএস