গাংনীতে বাড়ছে ডেঙ্গু রোগী, দিশেহারা চিকিৎসকরা
মেহেরপুরের গাংনী উপজেলায় ছড়িয়ে পড়েছে এডিশ মশা। জেলার অন্য উপজেলায় নতুন ডেঙ্গু রোগী পাওয়া না গেলেও এ উপজেলায় প্রতিদিনই নতুন নতুন রোগী শনাক্ত হচ্ছেন। বিগত ২৪ ঘণ্টায় এখানে ৫ জন নতুন ডেঙ্গু আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছেন। প্রতিদিন গড়ে ১০-১২ জন রোগী ভর্তি থাকছেন গাংনী হাসপাতালে। ফলে অন্যান্য রোগীর চিকিৎসা সেবা চরম ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। জনসচেতনতার অভাব এবং কার্যকরী প্রতিরোধ ব্যবস্থা না থাকায় এ উপজেলায় এডিস মশা ছড়িয়ে পড়ছে বলে মনে করেন চিকিৎসকরা।
গাংনী উপজেলায় এ পর্যন্ত মোট ১৫৩ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছেন। তাদের বেশিরভাগই স্থানীয়ভাবে আক্রান্ত। ফলে এ উপজেলায় এডিসের অস্তিত্ব রয়েছে তা নিশ্চিত চিকিৎসকরা। কার্যকরী প্রতিরোধ ব্যবস্থা না থাকা ও জনসচেতনতার অভাবে সেখানে এডিশ মশার উপদ্রব বাড়ছে। প্রতিদিন নতুন রোগী শনাক্ত হওয়ায় এমন আশঙ্কা করছেন চিকিৎসকরা।
গাংনী হাসপাতালে ভর্তি হিজলবাড়ীয়া গ্রামের ফরজ আলী বলেন, ডেঙ্গু কীভাবে ছড়ায়, আর ডেঙ্গুর অস্তিত্ব সম্পর্কে তার কোনো ধারণা নেই। একই কথা বলেন হিন্দা গ্রামের দিনমজুর আশিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘বাড়িতে মশারি টাঙানো হয় না এবং মশার কয়েলও ব্যবহার করি না। ফ্যান চলে তাই মশা কম লাগে।’ এভাবেই অসচেতনতা ও গাফিলতির কারণে ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়ছে গাংনীতে। হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর পাশে অন্য রোগীরা আতংকে সময় পার করছেন। রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. বিডি দাস বলেন, দু’টি ওয়ার্ডে ৩২টি বেড। এর অর্ধেকেরও বেশিতে থাকে ডেঙ্গু রোগী। ফলে অন্য রোগীদের কীভাবে চিকিৎসা দিব? সব সময় ডেঙ্গু রোগীদের দিকে নজর রাখতে হয়। দুর্বল প্রতিরোধ ব্যবস্থা ও জনসচেতনতার অভাবে এডিশ মশা ছড়াচ্ছে বলে জানান এই চিকিৎসক।
রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক প্রফেসর ডা. মিরজাদী সেবরিনা ফ্লোরা বলছেন, বেশ কয়েক জায়গায় মশার লার্ভা পাওয়া গেছে। সেখানে ডেঙ্গুর জীবাণু পাওয়া গেলে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। তারদল গাংনী উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ল্যাবে নিয়ে গেছেন। নমুনা পরীক্ষা করে এডিস সম্পর্কে প্রতিবেদন দেবে আইইডিসিআর। প্রতিবেদন পেলেই জানা যাবে সংগ্রহ করা লার্ভা কোন প্রকৃতির।
আসিফ ইকবাল/এমএমজেড/এমকেএইচ