শিক্ষকের ছোড়া বেতে ছাত্রী রক্তাক্ত
হবিগঞ্জে শিক্ষকের বেতের আঘাতে হাবিবা আক্তার (৮) নামে এক শিশু শিক্ষার্থীর চোখ নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। হাবিবা সদর উপজেলার যাদবপুর গ্রামের শাহিন মিয়ার মেয়ে এবং যাদবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী।
এলাকাবাসী জানান, গতকাল রোববার ক্লাস চলাকালে সহকারী শিক্ষক নিরঞ্জন দাশ তার হাতের একটি বেত ছুড়ে মারলে তা সরাসরি হাবিবার চোখে লাগে। এতে তার চোখ থেকে রক্তক্ষরণ শুরু হয়। পরে স্কুলে হৈ চৈ পড়ে যায়। স্থানীয় লোকজন হাবিবাকে দ্রুত উদ্ধার করে হবিগঞ্জ আধুনিক সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. মিঠুন রায় পরীক্ষার পর অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে সিলেটে প্রেরণ করেন। পরে তার স্বজনরা হাবিবাকে ঢাকা চক্ষু হাসপাতালে নিয়ে যান।
হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. মিঠুন রায় জানান, বেতটি সরাসরি হাবিবার চোখের ভেতর আঘাত করায় তার চোখ খুবই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। চোখটি ভালো হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম।
এ ব্যাপারে সহকারী শিক্ষক নিরঞ্জন দাশ বলেন, ঘটনার সময় আমি দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পড়া নিচ্ছিলাম। এ সময় যারা পড়া পারছিল না তাদের টুকটাক বেত্রাঘাত করি। এ সময় ওই ক্লাসের দরজার সামনে কিছু শিক্ষার্থী দাঁড়িয়ে হৈ চৈ করছিল। আমি তাদের বারবার ধমক দিলেও তারা সেখানে দাঁড়িয়ে ছিল। এতে হাতে থাকা বেত ছুড়ে মারি। তা গিয়ে হাবিবার চোখে লাগে। এটি আমার অনিচ্ছাকৃত ভুল। ওই ছাত্রীকে আমি চিকিৎসার জন্য সঙ্গে নিয়ে যাচ্ছি। যত ভালো চিকিৎসার প্রয়োজন হয় তা আমি করাবো।
এ ব্যাপারে হবিগঞ্জ সদর মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মাসুক আলী জানান, এ ব্যাপারে কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা শাখাওয়াত হোসেন রুবেল বলেন, এ ব্যাপারে আমাদের কাছে কোনো তথ্য নেই।
সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমরা বিষয়টি শুনেছি। বিস্তারিত তথ্য নেয়ার পর বিষয়টি খতিয়ে দেখার চেষ্টা হবে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক জানান, বেত দিয়ে আঘাত করার তো বিধানই নেই। শুধু তাই নয় শ্রেণিকক্ষে বেত নিয়ে যাওয়ারও অনুমতি নেই। যদি কেউ এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়ে থাকে তবে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সৈয়দ এখলাছুর রহমান খোকন/আরএআর/জেআইএম