প্রেমিকার জন্য গায়ে আগুন দেয়া সেই প্রেমিকের মৃত্যু
সাতক্ষীরার তালা উপজেলায় প্রেমিকাকে বিয়ের জন্য নিজের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেয়া বিশ্বজিত দে (২২) মারা গেছেন। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। গত শনিবার (৩১ আগস্ট) সকাল ১০টার দিকে তালা উপজেলার খলিলনগর ইউনিয়নের হরিশচন্দ্রকাটি দাসপাড়ায় গায়ে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটে।
নিহত বিশ্বজিত দে তালা উপজেলার ইসলামকাটি ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামের সন্তোষ দের ছেলে।
নিহত বিশ্বজিত দের মামা সঞ্জয় দত্তের দাবি, হরিশ্চন্দ্রকাটি গ্রামের এক কিশোরীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল বিশ্বজিতের। সে সুবাদে প্রেমিকার বাড়িতে গেলে তাদের বাড়ির লোকজন বিশ্বজিতকে মারপিট করে গায়ে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। এরপর পুকুরে ফেলে দেয়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে তালা হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে খুলনায় পাঠানো হয় বিশ্বজিতকে। আজ চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেখানে মারা যান বিশ্বজিত।
ঘটনার দিন খলিলনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান রাজু জানিয়েছিলেন, বিশ্বজিত হরিশ্চন্দ্রকাটি গ্রামের কিশোরী প্রেমিকাকে বিয়ে করবে বলে গত শুক্রবার (৩০ আগস্ট) দুপুরের দিকে ১৫-২০ জনকে তার বাড়ি পাঠায়। মেয়েটির বিয়ের বয়স না হওয়ায় পরে বিয়ে দেয়া হবে বলে পরিবার থেকে জানানো হয়। এরপর ওইদিন সন্ধ্যায় বিশ্বজিতের তিন বন্ধু মেয়েটির বাড়ি গিয়ে পরিবারকে বিয়ের জন্য বোঝায়। তবে মেয়ের পরিবারের পক্ষ থেকে সাফ জানিয়ে দেয়া হয় বয়স না হলে বিয়ে দেয়া হবে না।
তিনি আরও জানান, এরপর শনিবার সকাল ১০টার দিকে বিশ্বজিত প্রেমিকার বাড়িতে গিয়ে বিয়ের জন্য প্রস্তাব দেয়। মেয়ের পরিবার রাজি না হওয়ায় সেখানেই নিজের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে দেয় বিশ্বজিত। একপর্যায়ে আগুন গায়ে ছড়িয়ে পড়লে সইতে না পেরে সে পাশের একটি পুকুরে লাফ দেয়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে তালা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
তালা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. রাজীব সরদার জানান, আগুনে বিশ্বজিতের শরীরের ৪৫ শতাংশ পুড়ে যায়। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
এ ব্যাপারে তালা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী রাসেল জাগো নিউজকে বলেন, ঘটনার দিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছিল। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে বিশ্বজিত ও মেয়েটির মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল।
তিনি আরও জানান, এ ঘটনায় এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। বিশ্বজিত নামে ছেলেটি মারা গেছে বলে শুনেছি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আকরামুল ইসলাম/আরএআর/পিআর