‘আমি কিন্তু সত্যিই মরে যাচ্ছি’
নাটোরের বাগাতিপাড়ায় প্রেমিকের মোবাইল ফোনে মেসেজ পাঠিয়ে জাকিয়া সুলতানা সোনালী (১৭) নামে এক কলেজছাত্রী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। বুধবার সকালে উপজেলার মালিগাছা সাজিপাড়া এলাকা তার মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
নিহত জাকিয়া সুলতানা সোনালী বাগাতিপাড়া উপজেলার পাকা ইউনিয়নের মালিগাছা সাজিপাড়া গ্রামের সুমন রেজার মেয়ে ও লোকমানপুর মহাবিদ্যালয়ের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী।
ঘটনার পর থেকে প্রেমিক রোকন সরকার আত্মগোপনে রয়েছেন। এ ঘটনায় আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে মামলার প্রস্তুতি চলছে।
পুলিশ জানায়, সোনালীর সঙ্গে একই কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র রোকন সরকারের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। প্রেমঘটিত বিষয় নিয়ে দুইজনের মধ্যে মনোমালিন্য হয়। বুধবার রাতে রোকনের সঙ্গে মোবাইল ফোনে সোনালীর এ সংক্রান্ত মেসেজ বিনিময় হয়। দীর্ঘ সময় ধরে ম্যাসেজ বিনিময়ের একপর্যায়ে রাত ১টা ০৩ মিনিটে সোনালী ‘আমি কিন্তু সত্যিই মরে যাচ্ছি’ লিখে রোকনের মোবাইল ফোনে সর্বশেষ মেসেজ পাঠায়। এরপর রাতের কোনো এক সময় গলায় ওড়না পেঁচিয়ে নিজের ঘরের তীরের সঙ্গে গলায় ফাঁস দেয় সোনালী। সকালে খবর পেয়ে পুলিশ তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালে পাঠায়। পুলিশ রোকন ও সোনালীর মেসেজ বিনিময়ের স্ক্রিনশট আলামত হিসেবে জব্দ করেছে।
নিহত সোনালীর বাবা সুমন রেজা জানান, তিনি পাবনার ঈশ্বরদী ইপিজেডে নিরাপত্তা কর্মী হিসেবে এবং তার স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন একই ইপিজেডে একটি কোম্পানির গার্মেন্ট কর্মী হিসেবে চাকরি করেন। সে কারণে তারা দুজনেই বাড়িতে থাকেন না। ঘটনার দিন রাতে দুই মেয়ে সোনালী ও স্বর্ণা বাড়িতে ছিল। মেয়ের মারা যাওয়া খবর পেয়ে বুধবার সকালে তারা দুজনে বাড়িতে আসেন।
তিনি অভিযোগ করেন, রোকন নামের ছেলেটা তার মেয়েকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে। এ ব্যাপারে থানায় মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
লোকমানপুর মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ ফারুখ হোসেন বলেন, রোকনের সঙ্গে সোনালীর প্রেমের সম্পর্কের বিষয়ে জানতাম না। তবে সোনালীর আত্মহত্যার বিষয়টি কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছি না।
বাগাতিপাড়া মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল ইসলাম শেখ বলেন, এ ঘটনায় আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে মামলার প্রস্তুতি চলছে। অভিযুক্ত রোকনের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
রেজাউল করিম রেজা/আরএআর/এমএস