জিজ্ঞাসাবাদের পর ৫ দিন ছুটি চাইলেন ডিসির অফিস সহায়ক
জামালপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) আহমেদ কবীরের সঙ্গে আপত্তিকর ভিডিও ভাইরাল হওয়া সেই অফিস সহায়ক আবারও পাঁচদিনের ছুটির আবেদন করেছেন।
বৃহস্পতিবার দুপুর পৌনে ২টার দিকে ডিসির সভাকক্ষ থেকে বের হয়ে আগামী রোববার থেকে নতুন করে পাঁচদিনের ছুটির আবেদন করেন তিনি।
দুপুর ১২টা থেকে ২টা পর্যন্ত ওই নারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন ডিসি কেলেঙ্কারির ঘটনা তদন্তে গঠিত কমিটির সদস্যরা। তদন্ত কমিটি দুই ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর পাঁচদিনের ছুটির আবেদন করেন ওই নারী।
এর আগে বেলা ১১টার দিকে তদন্ত কমিটির সদস্যরা জামালপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এসে পৌঁছে। তদন্ত দলের সদস্যরা ডিসি অফিসের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন। এরপর ওই নারীর সঙ্গে কথা বলেন তারা।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুগ্ম সচিব ড. মুশফিকুর রহমানের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের তদন্ত দল জামালপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে পৌঁছে তদন্ত কার্যক্রম চালান। তদন্তের শুরুতেই জেলা প্রশাসকের বিশ্রাম কক্ষ পরিদর্শন করেন তদন্ত কমিটির সদস্যরা। এরপর জেলা প্রশাসকের সভাকক্ষে ঘটনার সঙ্গে জড়িত ওই নারী অফিস সহায়কের সঙ্গে কথা বলেন। পরে ছুটির আবেদন করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ত্যাগ করেন ওই নারী।
তবে এসব বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি ওই নারী। একই সঙ্গে ঘটনার বিষয়ে সাংবাদিকদের কিছুই জানাননি তদন্ত কমিটির সদস্যরা।
তদন্ত কমিটির সদস্যরা হলেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুগ্ম সচিব মুশফিকুর রহমান, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন প্রতিনিধি, ময়মনসিংহের বিভাগীয় কমিশনারের একজন প্রতিনিধি, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) একজন প্রতিনিধি। কমিটিকে আগামী ১০ কর্মদিবসের মধ্যে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়।
রোববার অফিসে অনুপস্থিত থাকার পর সোমবার অফিসে এসে জ্ঞান হারান জামালপুরের ডিসির ওই নারী অফিস সহায়ক। এ সময় তার হাতে শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে লেখা ছুটির আবেদনপত্র পাওয়া যায়। পরে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। এর কিছুক্ষণ পর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ত্যাগ করেন ওই নারী। সেদিন ছুটির আবেদনপত্রে তিনি উল্লেখ করেন, ‘অফিস চলাকালীন অসুস্থবোধ করায় আগামীকাল ২৭ আগস্ট থেকে তিনদিনের ছুটির প্রয়োজন আমার।’
ওই দিন তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘এসব ভিডিও কীভাবে হলো আমি কিছুই জানি না। আমি বাঁচতে চাই না, আমার সন্তানের জন্য আমাকে আপনারা বাঁচান। এখানে ডিসি স্যারের কোনো দোষ নেই। যারা এসব ভিডিও ছড়িয়েছে আমি তাদের বিচার চাই।’
এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিচার চান কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে কাঁদলেন সেই নারী, বললেন ডিসি স্যারের কোনো দোষ নেই।
এর আগের দিন শনিবার রাতের আঁধারে জামালপুর ছেড়ে অন্যত্র চলে যান ওএসডি হওয়া জামালপুরের বিতর্কিত জেলা প্রশাসক (ডিসি) আহমেদ কবীর।
গত ২২ আগস্ট জামালপুরের ডিসির একটি আপত্তিকর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। ভিডিওটিতে ডিসি আহমেদ কবীরের সঙ্গে তার অফিসের এক নারীকর্মীকে অন্তরঙ্গ অবস্থায় দেখা যায়। গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে খন্দকার সোহেল আহমেদ নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে জেলা প্রশাসকের আপত্তিকর ভিডিওটি পোস্ট করা হয়।
এ নিয়ে জামালপুরসহ সারাদেশে নিন্দার ঝড় ওঠে। এ ঘটনায় রোববার ওএসডি হলেন জামালপুরের ডিসি। একই সঙ্গে ডিসি আহমেদ কবীরকে সরিয়ে পরিকল্পনামন্ত্রীর একান্ত সচিব (পিএস) মোহাম্মদ এনামুল হককে জামালপুরের নতুন ডিসি হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়।
এএম/এমকেএইচ