ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

টিন পিটিয়ে গণধর্ষণ থেকে নিজেকে রক্ষা করলেন কলেজছাত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক | বরিশাল | প্রকাশিত: ০৭:৩০ পিএম, ২৫ আগস্ট ২০১৯

কৌশলে গণধর্ষণের হাত থেকে রক্ষা পেলেন এক কলেজছাত্রী (১৬)। ঘটনাটি ঘটেছে বরিশালের মুলাদী উপজেলার ব্রজমোহন গ্রামে। শনিবার রাতের এ ঘটনায় বাদী হয়ে মুলাদী থানায় ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন কলেজছাত্রী।

মামলার আসামিরা হলো- দক্ষিণ বালিয়াতলি গ্রামের আজিজুল সরদার (১৯), সাগর ব্যাপারী (১৮), সালাউদ্দিন ব্যাপারী (১৮), কাওছার ব্যাপারী (২০) ও ব্রজমোহন গ্রামের মো. রাজিব সরদার (২৪) এবং ফয়সাল সরদার (২১)।

সৈয়দ বদরুল হোসেন ডিগ্রি কলেজের ওই ছাত্রী বলেন, আজিজুল সরদার ও আমি একই কলেজে একই শ্রেণিতে লেখাপড়া করি। সে সুবাদে আজিজুল সরদার কলেজে যাওয়া-আসার পথে দীর্ঘদিন ধরে আমাকে প্রেমের প্রস্তাবসহ কুপ্রস্তাব দেয়। আমি আজিজুলের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় আমার বাড়ির মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে একাধিক বার ফোন করে আমার সঙ্গে বলতে চাইতো। আজিজুল তার সহযোগীদের দিয়েও ফোন করে ঝামেলা করতো। আমার মা ফোন রিসিভ করে বকাঝকা করে তাদের ফোন করতে নিষেধ করেছেন। এতে আজিজুল আমার পরিবারের ওপর ক্ষিপ্ত হয়। এর প্রেক্ষিতে আজিজুল ও তার সহযোগীরা আমি ও আমার পরিবারের ক্ষতির পরিকল্পনা করে।

কলেজছাত্রীর ভাষ্য, শনিবার সকালে বাড়ি থেকে কলেজে যাওয়ার উদ্দেশ্যে সফিপুর খেয়াঘাটে এসে দেখি ট্রলার ছেড়ে গেছে। নদীর পাড়ে খেয়ার জন্য অপেক্ষা করি আমি। আমাকে দেখে ট্রলার ঘাটে আজিজুল, সাগর, সালাউদ্দিন, কাওছার, রাজিব ও ফয়সাল সরদার এগিয়ে আসে। তাদের দেখে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিলে আমাকে ঘিরে ধরে তারা। আজিজুল সরদার তাদের সঙ্গে আমাকে কলেজে যেতে বলে। আমি তাদের সঙ্গে কলেজে যেতে অপারগতা প্রকাশ করলে আজিজুল তার সহযোগীদের নিয়ে আমার গতিরোধ করে। সেই সঙ্গে বলে কলেজে না গেলে আমাকে তার নানা বাড়িতে যেতে হবে। তার নানা বাড়ি যেতে অপারগতা প্রকাশ করলে আজিজুল আমার হাত ধরে টানাহেঁচড়া শুরু করে। তারা আমাকে টেনে পাশের পরিত্যক্ত ঘরে নিয়ে যায়। সেখানে আজিজুল আমাকে যৌন হয়রানি করে। এ সময় পরিত্যক্ত ঘরের বাইরে পাহারায় ছিল সাগর ও সালাউদ্দিন। একপর্যায়ে আজিজুল আমাকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। এ সময় আমি চিৎকার দিয়ে আশপাশের লোক ডাকার চেষ্টা করি এবং টিন পিটিয়ে শব্দ করি।

কলেজছাত্রী বলেন, তখনো সাহস হারায়নি আমি। আমার বিশ্বাস ছিল টিন পেটানোর শব্দ শুনে কেউ না কেউ এগিয়ে আসবেই। ঠিকই কিছুক্ষণের মধ্যে স্থানীয় এক ব্যক্তি এগিয়ে আসেন। আজিজুলকে ওই ব্যক্তি জিজ্ঞেস করেন পরিত্যক্ত ঘরে একটি মেয়েকে নিয়ে কেন ঢুকেছো তোমরা। এ সময় আজিজুলের সঙ্গে ওই ব্যক্তির কথা কাটাকাটি হয়। বিষয়টি দেখে স্থানীয় আরেক ব্যক্তি এগিয়ে আসেন। তখন আজিজুল ও তার সহযোগীদের মারধর শুরু করেন ওই দুই ব্যক্তি। এ অবস্থায় আজিজুল ও তার দুই সহযোগী পালিয়ে যায়। পরে ওই দুই ব্যক্তি আমাকে বাড়ি পর্যন্ত এগিয়ে দিয়ে যান। রাতেই থানায় হাজির হয়ে আজিজুল ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে মামলা করি আমি।

মুলাদী থানা পুলিশের ওসি জিয়াউল আহসান বলেন, ঘটনার পর থেকে মামলার আসামিরা আত্মগোপনে রয়েছে। আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশের একাধিক দল কাজ করছে।

সাইফ আমীন/এএম/পিআর

আরও পড়ুন