আইভির স্মরণে আজও কাঁদছে ভৈরব
একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহত নারী নেত্রী আইভি রহমানের ১৫তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ঢাকায় আওয়ামী লীগের জনসভায় ভয়াবহ গ্রেনেড হামলায় গুরুতর আহত হন তিনি। পরে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) তিনদিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে ২৪ আগস্ট মারা যান এ নেত্রী।
প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের সহধর্মিণী ছিলেন বেগম আইভি রহমান। তাদেরই ছেলে বিসিবি সভাপতি ও কিশোরগঞ্জ-৬ আসনের সংসদ সদস্য নাজমুল হাসান পাপন।
ঘটনার দিন বিকেলে আইভি রহমান তার স্বামীর সঙ্গে জনসভায় গিয়েছিলেন। এদিন জিল্লুর রহমান শেখ হাসিনাসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে ট্রাকে ছিলেন। আইভি রহমান নারী নেতা-কর্মীদের নিয়ে মাটিতে বসেছিলেন। গ্রেনেড হামলায় জিল্লুর রহমান প্রাণে বেঁচে গেলেও আইভি রহমানের শরীরে গ্রেনেড পড়লে তিনি গুরুতর আহত হন। পরে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ২৪ আগস্ট মৃত্যুবরণ করেন তিনি।
১৯৪৪ সালের ৭ জুলাই ভৈরব শহরের চন্ডিবের গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন আইভি রহমান। তার বাবার নাম জালাল উদ্দিন। তিনি ছিলেন তৎকালীন ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ। মা হাসিনা বেগম ছিলেন গৃহিণী। ৮ বোন ও ৪ ভাইয়ের মধ্যে আইভি রহমান ছিলেন পঞ্চম। রাজনৈতিক সম্পর্ক ছাড়াও আইভি রহমান বঙ্গবন্ধুর আত্মীয় ছিলেন। তার বড় বোন সামসুন্নাহার সিদ্দিক বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ রেহানার শাশুড়ি। সেই সূত্রে আইভি রহমান শেখ রেহানার খালা শাশুড়ি।
১৯৫৮ সালের ২৭ জুন নবম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় জিল্লুর রহমানের সঙ্গে আইভি রহমানের বিয়ে হয়। জিল্লুর রহমান ও আইভি রহমান দুজনই বঙ্গবন্ধুর কাছের নেতা ছিলেন।
২১ আগস্ট আইভি রহমান গুরুতর আহত হলে খবরটি তৎক্ষণাত জিল্লুর রহমানকে জানানো হয়নি। তাকে প্রথমে জানানো হয়েছিল আইভি রহমান সামান্য আহত হয়েছেন। ঘটনার দু’দিন পর নির্মম সত্যটি জানতে পারেন তার স্বামী। ২৩ আগস্ট জিল্লুর রহমান হাসপাতালে আইভিকে দেখতে যান। ৪৬ বছরের জীবনসঙ্গীর সঙ্গে এটাই ছিল তার শেষ দেখা।
আইভি রহমানের মর্মান্তিক মৃত্যুর পর ভৈরবে হরতাল পালনসহ সুবর্না ট্রেনে আগুন লাগিয়ে দেয় জনতা। বিএনপি সরকার তখন জনতার উত্তেজনা দেখে তার লাশ ভৈরবে আনতে দেয়নি। পরে তাকে ঢাকার বনানী কবরস্থানে দাফন করা হয়।
এদিকে দিবসটি পালনে ঢাকা ছাড়াও মরহুমার বাবার বাড়ি ভৈরব উপজেলা ও শহর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দলীয় অফিসে মিলাদ, দোয়া ও আলোচনার আয়োজন করা হয়েছে। তার বাবার বাড়ি ভৈরব শহরের চন্ডিবের বাসায়ও মিলাদ, কোরআন খতম ও দোয়া হবে।
আসাদুজ্জামান ফারুক/এফএ/জেআইএম