কথা রেখেছে বাড়ির লোকজন, তবুও বাঁচল না রুবেল
এলাকার বিভিন্ন বাজারে সাপের খেলা দেখিয়ে কোনো মতে সংসার চালাতো মো. রুবেল হাওলাদার (৩০)। ঝুঁকিপূর্ণ এ পেশা ছাড়ার জন্য স্ত্রী ও দুই সন্তান বার বার বললেও পেশা বদলাতে পারেননি তিনি।
বরং পরিবারের লোকজনকে বলে রেখেছিলেন, তাকে সাপে কাটলে কোনো ডাক্তার কিংবা ওঝার কাছে নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। বাড়ির মসজিদে একরাত শুইয়ে রাখলে বেঁচে যাবেন তিনি।
তার বলে যাওয়া কথা অনুযায়ী সব কিছুই করেছিল পরিবারের লোকজন। তবুও তাকে বাঁচানো যায়নি। ঘটনাটি ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া উপজেলার তারাবুনিয়া গ্রামের। শনিবার রুবেলকে তার একটি পোষা সাপ কামড় দিলে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। রোববার সকালে তার মৃত্যু হয়েছে। রুবেল তারাবুনিয়া গ্রামের মো. হোসেন আলীর ছেলে।
স্থানীয়রা জানায়, রুবেল হাওলাদার শনিবার বিকেলে তার পোষা সাপের ঝাপি দিয়ে একটি বিষধর সাপ বের করছিলেন। এসময় সাপটি তাকে কামড় দেয়। এতে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। কোনো উপায় না পেয়ে স্বজনরা তাকে পার্শ্ববর্তী ছোনাউটা মোল্লাখালী এলাকার এক নারী ওঝার কাছে নিয়ে যায়। সেখানে রাতভর ঝাড়ফুঁক দেয়ার পরও কোনো কাজ হয়নি।
সকালে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়ার পর চিকিৎক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এলাকাবাসী জানায়, রুবেল তাদের আগেই জানিয়েছিল তাকে সাপে কাটলে কোনো ডাক্তার কিংবা ওঝা দেখানোর প্রয়োজন নেই। বাড়ির মসজিদে একদিন একরাত শোয়াইয়া রাখলে এমনিতেই সে বেঁচে উঠবে। তার কথামতো সব কিছুই করা হয়েছিল। কিন্তু কোনো সাড়া না পাওয়ায় তাকে এক নারী ওঝার কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ঝাড়ফুঁক দেয়ার পরও কোনো কাজ হয়নি। এসব কারণে রোববার নির্ধারিত সময় তার জানাজা দেয়া হয়নি।
এলাকার সাবেক ইউপি সদস্য এনামুল হক রেন্টু বলেন, ঘটনাটি মর্মান্তিক। সঠিক সময়ে চিকিৎসা করালে হয়তো তার প্রাণ রক্ষা হতো।
আতিকুর রহমান/এমএএস/পিআর