বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ থেকে এএসপি বহিষ্কার
শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে শিবগঞ্জ সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) কুদরত-ই-খুদা শুভকে বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি বগুড়ায় আহম্মেদ সাব্বির নামের এক মালামাল সরবরাহকারীকে পুলিশ লাইন্সের অফিসার্স মেসে ডেকে লাঠিপেটা, এক আনসার সদস্য ও জেলা প্রশাসকের গাড়ির চালককে মারধর করেন।
পল্লী উন্নয়ন একাডেমি (আরডিএ) বগুড়ার মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) আমিনুল ইসলাম তাকে এক বছরের জন্য বহিষ্কারের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
তবে এএসপি শুভর দাবি, তার বাবা অসুস্থ থাকায় তিনি অব্যাহতি নিয়েছেন। কেউ তাকে বহিষ্কার করেনি।
আমিনুল ইসলাম বলেন, এএসপি শুভর বিরুদ্ধে পাঁচটি সুনির্দিষ্ট শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ রয়েছে। তিন সদস্যের শৃঙ্খলা কমিটির সুপারিশে তাকে এক বছরের জন্য প্রশিক্ষণ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। শুভর বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়া যেত। কিন্তু অন্য প্রশিক্ষণার্থীদের সতর্ক করতে তাকে গুরু অপরাধে লঘু শাস্তি দেয়া হয়েছে। তবে তিনি বাংলাদেশ লোক প্রশাসন প্রশিক্ষক কেন্দ্রে এ শাস্তির বিরুদ্ধে আপিল করতে পারবেন বলে জানান আমিনুল ইসলাম।
শুভর বিরুদ্ধে অভিযোগ, প্রশিক্ষণ চলাকালে গত ১২ মে রাতে পুলিশ লাইন্স অফিসার্স মেসে মালামাল সরবরাহকারী আহম্মেদ সাব্বিরকে ডেকে পাঠান। সাব্বির তার ব্যবসায়িক পার্টনার লেবুকে টাকা পরিশোধ না করায় তাকে ডাকা হয়েছিল। কয়েকদিন পর টাকা পরিশোধ করতে চাইলে শুভ ক্ষুব্ধ হয়ে তার গার্ড ও ড্রাইভার সাব্বিরকে লাঠিপেটা করেন। এতে সাব্বির মাটিতে পড়ে গেলে তাকে পুলিশ লাইন্স থেকে বাইরে এনে রিকশায় তুলে দেয়া হয়। আহত সাব্বির রাতেই সদর থানায় গেলে অভিযুক্ত ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা হওয়ায় শুভর বিরুদ্ধে অভিযোগ নেয়া হয়নি। তিনি পরদিন এসপির কাছে লিখিত অভিযোগ দিলে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এছাড়া শুভর বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসকের গাড়ির চালককেও মারধরের অভিযোগ রয়েছে।
বগুড়ার পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভুঞা জানান, এএসপি শুভকে বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ থেকে বহিষ্কারের কথা শুনেছেন। এটা প্রশিক্ষণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার।
বগুড়া আরডিএর নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, মার্চে বিসিএস ক্যাডার বিভিন্ন ব্যাচের ছয় মাসব্যাপী বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ শুরু হয়। আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর প্রশিক্ষণ শেষ হওয়ার কথা। সেখানে অন্যান্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে বগুড়ার শিবগঞ্জ সার্কেলের এএসপি ৩৪তম বিসিএস ক্যাডার কুদরত-ই-খুদা শুভও অংশ নেন। এ প্রশিক্ষণ চলাকালে তার বিরুদ্ধে শৃঙ্খলা ভঙ্গের নানা অভিযোগ ওঠে। দেরিতে আসার ব্যাপারে প্রশ্ন করলে তিনি এক আনসার সদস্যকে গালিগালাজ, মাদক দিয়ে ধরিয়ে দেয়ার হুমকি ও তদবিরের মাধ্যকে তাকে বদলি করান। এরপর তার বাড়িতেও পুলিশ পাঠানো হয়।
সূত্র আরও জানায়, এএসপি শুভর বিরুদ্ধে শৃঙ্খলা ভঙ্গের পাঁচটি অভিযোগ ওঠায় শৃঙ্খলা কমিটি ঈদের আগে তাকে এক বছরের জন্য প্রশিক্ষণ থেকে বহিষ্কার করেছে।
এমএসএইচ