যৌন হেনস্থাকারীদের ধরতে মাঠে জেলা প্রশাসন
শিক্ষানগরী হিসেবে খ্যাত রাজশাহীতে প্রায়ই ঘটছে যৌন হেনস্থা। লোকলজ্জায় অনেক সময় সব ঘটনা সামনে আনছেন না ভুক্তভোগীরা। এতে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠছে বখাটের দল।
গত ১০ আগস্ট রাতে বখাটেদের নিপীড়নের মুখে স্ত্রীর সম্মান বাঁচাতে গিয়ে লাঞ্ছিত হন রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) শিক্ষক রাশিদুল ইসলাম।
‘প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণ পদক’ পাওয়া রাশিদুল ইসলাম রুয়েটের ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের সহকারী অধ্যাপক।
জনাকীর্ণ এলাকায় এমন ঘটনা ঘটলেও তাকে রক্ষায় এগিয়ে আসেননি কেউ। এ নিয়ে দেশত্যাগের কথা জানিয়ে ফেসবুকে আবেগঘন স্ট্যাটাস দেন রাশিদুল ইসলাম। ঘটনার ছয়দিন পর ৮ বখাটের নামে থানায় মামলা করেছেন ওই শিক্ষকের স্ত্রী।
এ ঘটনার পর বখাটেদের ধরতে নড়ে চড়ে বসেছে জেলা প্রশাসন। ইতোমধ্যে মধ্যে যৌন হয়রানি বিরোধী বিশেষ অভিযান শুরু করেছে তারা। এরই অংশ হিসেবে শনিবার নগরীর অন্যতম উন্মুক্ত বিনোদন কেন্দ্র পদ্মাপাড়ে অভিযান চালিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
জেলা প্রশাসনের এমন কর্মকাণ্ডে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন পরিবার নিয়ে ঘুরতে আসা লোকজন। তারা নির্মল বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে অশ্লীলতা ঠেকাতেও কার্যকর উদ্যোগ নেয়ার দাবি জানিয়েছেন।
জানা গেছে, নগরীর বিনোদনকেন্দ্র ছাড়াও বখাটের দল নগরীর সাহেববাজার আরডিএ মার্কেট ফুট ওভারব্রিজ, সাহেববাজার বড় মসজিদ চত্বর, মনিচত্বর, সোনাদীঘির মোড়, লোকনাথ স্কুল এলাকা, আলুপট্টি মোড়, কুমারপাড়া মোড়, রাজশাহী কলেজ এলাকা, সিএন্ডবি মোড়সহ বিভিন্ন স্থানে ওঁৎ পেতে থাকে। বিশেষ করে বাইরে থেকে রাজশাহীতে আসা ছাত্রীদের টার্গেট করে তারা।
নগরজুড়ে বেশি বেপরোয়া স্থানীয় বখাটের দল। তাদের সঙ্গে যুক্ত হয় অন্য এলাকা থেকে পড়তে আসা কিছু বখাটে। অভিভাবকদের নজরদারি এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান না থাকায় দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠছে এসব বখাটে।
এদিকে উঠতি বয়সী সন্তানদের খোঁজ-খবর রাখার জন্য অভিভাবকদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন রাজশাহীর জেলা প্রশাসক হামিদুল হক।
ইভটিজার হিসেবে আটক হলে জেল-জরিমানা হতে পারে বলে সতর্ক করে তিনি বলেন, যৌন হয়রানি বিরোধী ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান শুরু হয়েছে, এটি চলতে থাকবে।
কেউ যৌন হয়রানির শিকার হলে ভয় না পেয়ে থানায় বা উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে (ইউএনও) অবহিত করার পরামর্শ দিয়ে এসব ঘটনা প্রতিরোধে সাধারণ জনগণকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
জেলা প্রশাসক আরও জানান, কেবল যৌন নিপীড়ক নয়, বোপরোয়া গতিতে মোটরসাইকেল চালনা, নিরিবিলি বসে গাঁজা বা মাদক সেবনের বিরুদ্ধেও অভিযান চালাবে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
ফেরদৌস সিদ্দিকী/এমএমজেড/এমএস