চামড়ার ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত না করলে কঠোর ব্যবস্থা
রাজশাহীতে কোরবানির পশুর চামড়ার দাম নেই। আকারভেদে গরুর চামড়া ১০০ থেকে ৪০০ টাকা এবং ছাগলের চামড়া ১০ থেকে ১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
চামড়া ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত তিন দশকের মধ্যে সর্বনিম্ন চামড়ার দাম এটি। এই দামেও চামড়া কেনার ক্রেতা নেই। চড়া দামে চামড়া কিনে সর্বস্বান্ত হয়েছেন এখানকার মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীরা।
মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীদের ভাষ্য, তারা সরকার নির্ধারিত দামে চামড়া কিনেছেন। কিন্তু সেই চামড়া বিক্রি করতে গিয়ে দাম পাচ্ছেন না। সিন্ডিকেট করে চামড়া ব্যবসায়ীরা মৌসুমী ব্যবসায়ীদের সংকটে ফেলেছেন।
দাম কমিয়ে কেবল মৌসুমি ব্যবসায়ীদের সংকটে ফেলেননি, সংকটে ফেলেছেন এখানকার মাদরাসা ও এতিমখানাগুলোকে। যারা প্রতি বছরের মতো এবারও চামড়া সংগ্রহ করেছেন। দাম না পাওয়ায় চরম বেকায়দায় পড়েছেন মাদরাসা ও এতিমখানাগুলো। চামড়ার দাম না থাকায় বঞ্চিত হচ্ছেন গবিব-মিসকিনরাও।
তবে সিন্ডিকেট করার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এখানকার চামড়া ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, পুঁজি সংকটে তারা এবার সেভাবে কাঁচা চামড়া সংগ্রেহ করতে পারেননি। এতে চামড়া পাচারের শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
অতীতে চামড়া নিয়ে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়নি বলে জানিয়েছেন রাজশাহী জেলা চামড়া ব্যবসায়ী গ্রুপের সভাপতি আসাদুজ্জামান মাসুদ। তিনি বলেন, এবার চামড়ার দাম নেই বললেই চলে। চামড়া কিনে সংরক্ষণের খরচ উঠবে না।
মাসুদ বলেন, বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের কাছে ২০ কোটি টাকা পাওনা রয়েছেন রাজশাহীর ব্যবসায়ীরা। আর এজন্য এবার পুঁজি সংকটে রয়েছেন এখানকার ব্যবসায়ীরা। এ অবস্থায় জেলার ১২৭ জন চামড়া ব্যবসায়ীর মধ্যে মাত্র ৮-১০ জন চামড়া সংগ্রহ করতে পেরেছেন আড়াইশ থেকে ৩০০ পিস করে। অথচ বিপুল পরিমাণ চামড়া রয়ে গেছে এর বাইরে।
আসাদুজ্জামান মাসুদ বলেন, আমাদের আশঙ্কা সংরক্ষণের অভাবে এবার বিপুল পরিমাণ চামড়া নষ্ট হতে পারে। সেই সঙ্গে বাজারে দাম না পেয়ে সীমান্ত পেরিয়ে পাচার হয়ে যেতে পারে চামড়া।
তবে চামড়া পাচার ঠেকাতে সীমান্তে কড়াকড়ি আরোপের কথা জানিয়েছে রাজশাহী বিজিবি। অন্যদিকে, চামড়ার দাম নিয়ে কারসাজি না করতে ব্যবসায়ীদের সর্তক করেছেন রাজশাহীর জেলা প্রশাসক হামিদুল হক।
তিনি বলেছেন, ন্যূনতম ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে চামড়া ব্যবসায়ীদের অনুরোধ জানানো হয়েছে। এটি না করলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে জেলা প্রশাসন।
ফেরদৌস সিদ্দিকী/এএম/জেআইএম