ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

এমএন লারমার ৭৬তম জন্মদিন আজ

প্রকাশিত: ১১:০৯ এএম, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৫

আজ ১৫ সেপ্টেম্বর পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি জনগণের অবিসংবাদিত নেতা ও জুম্ম জাতীয়তাবাদের প্রবক্তা মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার (এমএন লারমা) ৭৬ তম জন্ম দিবস।

এমএন লারমা ১৯৩৯ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার নানিয়ারচরের বুড়িঘাট ই্উনিয়নের মহাপুরম গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৮৩ সালের ১০ নভেম্বর দলের সহযোগী বিভেদপন্থী প্রীতি গ্রুপের হাতে নির্মমভাবে খুন হন। এমএন লারমা স্বর্গীয় চিত্ত কিশোর চাকমা ও সুভাসিনী দেওয়ানের জৈষ্ঠপুত্র। তার ডাক নাম ছিল মঞ্জু।

প্রয়াত এমএন লারমা ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির প্রতিষ্ঠাতা। সাবেক পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদ এবং বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় সংসদের পার্বত্য চট্টগ্রাম-১ আসন থেকে নির্বাচিত সদস্য।

পারিবারিক সূত্র জানায়, এমএন লারমার প্রাথমিক শিক্ষাজীবন শুরু মহাপুরম জুনিয়র হাইস্কুল থেকে। তিনি ১৯৫৮ সালে রাঙ্গামাটি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিক, ১৯৬০ সালে চট্টগ্রাম সরকারি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক, ১৯৬৫ সালে বিএ, ১৯৬৮ সালে বিএড ও ১৯৬৯ সালে এলএলবি পাস করেন। তিনি ১৯৬৬ সালে খাগড়াছড়ি জেলার দীঘিনালা উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে যোগদানের মধ্য দিয়ে কর্মজীবন শুরু করেন।

১৯৬৮ সালে চট্টগ্রাম রেলওয়ে কলোনি হাইস্কুলে প্রধান শিক্ষক এবং ১৯৬৯ সালে চট্টগ্রাম বার অ্যাসোসিয়েশনের আইনজীবী হিসেবে যোগ দেন তিনি।

এমএন লারমার রাজনৈতিক জীবন শুরু ছাত্রজীবন থেকেই। তিনি ১৯৫৬ সালে বৃহত্তর ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। তিনি ১৯৫৭ সালে প্রথম পাহাড়ি ছাত্র সম্মেলনের মূল উদ্যোক্তা ছিলেন। ১৯৫৮ সালে পূর্ব-পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নে যোগ দেন। ১৯৬০ সালে গণতান্ত্রিক ও প্রগতিশীল আন্দোলনে যোগ দেন এবং পাহাড়ি ছাত্র সমাজে নেতৃস্থানীয় ভুমিকা পালন করেন। ১৯৬১ সালে কাপ্তাই বাঁধ নির্মাণের বিরোধিতা করে গণআন্দোলন গড়ে তোলেন। ১৯৬২ সালে অনুষ্ঠিত পাহাড়ি ছাত্র সম্মেলনের প্রধান উদ্যোক্তার ভূমিকা পালন করেন। ১৯৬৩ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি নিবর্তনমূলক আইনে চট্টগ্রামের পাথরঘাটার পাহাড়ি ছাত্রাবাস থেকে আটক হন। ১৯৬৫ সালের ৮ মার্চ চট্টগ্রাম কারাগার থেকে শর্তসাপেক্ষে মুক্তি পান। ১৯৭০ সালে পার্বত্য চট্টগ্রাম নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠন এবং পূর্ব-পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৭২ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি তৎকালিন প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কাছে চারদফা সম্বলিত আঞ্চলিক স্বায়ত্বশাসনের দাবিনামা পেশ করেন।

এমএন লারমা ১৯৭২ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি গঠন করেন এবং সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।

১৯৭৩ সালের প্রথম বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জনসংহতি সমিতির একক প্রার্থী হিসেবে পার্বত্য চট্টগ্রাম-১ আসন থেকে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হন। বাংলাদেশের প্রথম সংবিধানে পাহাড়িদের বাঙালি আখ্যায়িত করার প্রতিবাদে ১৯৭২ সালের ৩১ অক্টোবর গণপরিষদের অধিবেশন বর্জন করেন। একই সালে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সভাপতির দায়িত্ব পান। ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশ সরকারের পার্লামেন্টারি প্রতিনিধি হিসেবে কমনওয়েল্থ সম্মেলনে যোগদান করেন। একই সালে তিনি বাকশালে যোগ দেন।

এমএন লারমার ৭৬তম জন্ম দিবস উদযাপন উপলক্ষে বিভিন্ন মহলের উদ্যোগে রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান জেলা এবং উপজেলা সদরে ব্যাপক কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।

সুশীল প্রসাদ চাকমা/এমএএস/পিআর