বেশি দামে চামড়া কিনে ধরা নওগাঁর ফড়িয়া ব্যবসায়ীরা
নওগাঁয় কোরবানি পশুর চামড়া কিনে লোকসানে পড়েছেন ফড়িয়া ব্যবসায়ীরা। বেশি দামে চামড়া কিনে অস্থায়ী চামড়া হাটে বিক্রি করতে গিয়ে ধরা খেয়েছেন তারা।
মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীরা বলছেন, হাটে বড় চামড়া ব্যবসায়ীরা না আসায় দাম কমে গেছে। অপরদিকে কোরবানিদাতারা চামড়ার দাম পাননি। অনেকে আবার ছাগলের চামড়া ফড়িয়াদের কাছে ফ্রি-তে দিয়ে দিয়েছেন।
কোরবানি পশুর চামড়ায় গরিব-মিসকিনদের হক রয়েছে। কোরবানিদাতারা চামড়া বিক্রি করে সেই টাকা তাদের দিয়ে থাকেন। তবে চামড়ার দাম এবার কম হওয়ায় বঞ্চিত হচ্ছেন গবিব-মিসকিনরা। আর মাঝখান থেকে লাভবান হচ্ছেন মধ্যস্বত্বভোগীরা।
এ ঈদে ফড়িয়া ব্যবসায়ীদের অনেকেই লোকসানের আশঙ্কা করছেন। চামড়া কিনে বিপদে পড়তে হয়েছে তাদের। কেউ কেউ কেনা দামেও চামড়া বিক্রি করেছেন। আর কোরবানিদাতারা চামড়ার ন্যায্য দাম পাননি বলেও জানা গেছে। বলতে গেলে ‘পানির দরে চামড়া বিক্রি’।
সোমবার ঈদের দিন বিকেলে জেলার মান্দা উপজেলার দেলুয়াবাড়ী হাটে বকরির চামড়ার দাম ১০-১৫ টাকা, খাসির চামড়া ৪০-৫০ টাকা, বকনা গরু ও ষাঁড়ের চামড়া ১০০-২৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। ছাগলের খাজনা ৫ টাকা এবং গরুর ২০ টাকা। ছাগলের চামড়া ১০ টাকায় বেঁচে ৫ টাকা খাজনা। অনেকে ছাগলের চামড়া বিক্রি না করে ফড়িয়াদের মাগনা দিয়েছেন।
প্রসাদপুর বাজারের বাচ্চু মিয়া বলেন, এবার ৪৮ হাজার টাকা দামের গরু কোরবানি দিয়েছি। ভালো দামের আশায় ৫ কিলোমিটার দূর থেকে দেলুয়াবাড়ী হাটে চামড়া নিয়ে এসেছিলাম। দাম রাখছিলেন ৪শ টাকা। কিন্তু ফড়িয়ারা ১২০ টাকা চামড়ার দাম বলেন। অবশেষে ওই দামে চামড়া বিক্রি করতে হয়েছে।
চককানু গ্রামের ফরহাদ হোসেন বলেন, ছাগল কোরবানি দিয়ে হাটে চামড়া বিক্রি করতে এসেছেন। ফড়িয়ারা চামড়ার দাম ১০ টাকা বলায় তিনি হতবাক হয়ে যান। এর ভেতর আবার ৫ টাকা খাজনা দিতে হবে। এজন্য তিনি ফ্রি-তে চামড়া দিয়ে দিয়েছেন ফড়িয়াদের।
মান্দার পাকুড়িয়া গ্রামের মৌসুমি ব্যবসায়ী সিদ্দিক বলেন, এবার চামড়া কিনে বিপাকে পড়েছি! বড় ব্যবসায়ীরা হাটে না আসায় চামড়া দাম পানির দর। ষাড়ের চামড়া ৩শ টাকা করে কিনে ২০০-২৫০ টাকা বিক্রি করতে হয়েছে।
কালীসফা গ্রামের রেজাউল ইসলাম বলেন, ছাগলের চামড়া ১০-১৫ টাকা। ওই দামে চামড়া কিনে লবণ ও শ্রমিক দিয়ে আরও ১০ টাকাসহ মোট ২০ টাকা খরচ হবে। কিন্তু সেই দামে তো আমরা বিক্রি করতে পারব না। অনেকে ছাগলের চামড়া ফ্রি দিয়েছেন।
আব্বাস আলী/এমএসএইচ