সোনাগাজীতে ছাত্রলীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা
ফেনীর সোনাগাজীতে পূর্ব শত্রুতা ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে মো. শামীম (২২) নামের ছাত্রলীগের এক নেতাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষের সন্ত্রাসীরা।
রোববার রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার আমিরাবাদ ইউনিয়নের চরসোনাপুর তিনবাড়িয়া দাসপাড়া গ্রামে মিয়ার দোকানের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত শামীম উপজেলা ছাত্রলীগের সদস্য ও সোনাগাজী সদর ইউনিয়নের মুহুরী প্রজেক্ট সংলগ্ন চরশাহাপুর গ্রামের কৃষক আবদুল মুনাফ মিয়ার ছেলে।
এদিকে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে স্থানীয় সন্ত্রাসী রাহাদ, শেখ আলম ও নুর আলমকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পুলিশ, এলাকাবাসী, নিহতের পরিবার ও দলীয় সূত্র জানায়, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইফতেখার হোসেন খোন্দকারের সঙ্গে পূর্ব শত্রুতা ও এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক বহিষ্কৃত যুগ্ম আহ্বায়ক সাঈদ আনোয়ারের বিরোধ চলে আসছে। ইফতেখার গ্রুপের ছাত্রলীগ নেতা মো. শামীম এক বন্ধুকে নিয়ে সিএনজি অটোরিকশা যোগে তার নানার বাড়ি চরলামছিডুব্বা গ্রাম থেকে ফিরছিলেন। পথে চরসোনাপুর তিনবাড়িয়া দাসপাড়া মিয়ার দোকানের সমানে পৌঁছলে আড়ে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা সন্ত্রাসী সাঈদ আনোয়ার, পারভেজ, শেখ আলম, কাজী, নূর করিম, হোনা মিয়া, রাহাদ, নূরনবীর নেতৃত্বে ২৫-৩০ জন সশস্ত্র সন্ত্রাসী সিএনজি অটোরিকশার গতি রোধ করে। শামীমকে নামিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ও পিটিয়ে মারাত্মক আহত করে রাস্তার পাশে মুমূর্ষু অস্থায় ফেলে রাখে।
স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, পরে ফেনী সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখান থেকে রাত ২টার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
উল্লেখ্য, সাঈদ আনোয়ার গ্রুপের একই সন্ত্রাসীরা গত ৯ আগস্ট রাত সাড়ে তিনটার দিকে ইফতেখার গ্রুপের যুবলীগ নেতা আইয়ূব নবী ফরহাদের মৎস্য খামারের নৈশ প্রহরী রতন চন্দ্র দাসকে একই কায়দায় হত্যার চেষ্টা চালিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ঘটনায় আইয়ূব নবী ফরহাদ বাদী হয়ে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। এ নিয়ে গত কয়েক দিন ধরে দু'গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ছাড়াও এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
সাঈদ আনোয়ার চরসোনাপুর তিনবাড়িয়া দাসপাড়ার সৌদি প্রবাসী মো. হানিফের ছেলে। তার বিরুদ্ধে সোনাগাজী মডেল থানায় ছিনতাই, অস্ত্র, রাহাজানি, সন্ত্রাসী, হামলা ও ডাকাতিসহ ১৩টি মামলা রয়েছে।
সোনাগাজী মডেল থানার ওসি (তদন্ত) খালেদ হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান ইতোমধ্যে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
রাশেদুল হাসান/এমবিআর/এমএস