নওগাঁয় ছোট গরুর চাহিদা বেশি
নওগাঁয় শেষ মুর্হূতে জমে উঠেছে কোরবানির পশু কেনাবেচা। প্রান্তিক খামারিরা প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে গরু মোটাতাজা করে হাটে নিয়ে আসছেন। তবে জেলায় বড় গরুর তুলনায় ছোট গরুর চাহিদা বেশি এবং দামও মোটামুটি সহনীয় পর্যায়ে আছে।
খামারিরা বলছেন, গরু মোটাতাজা করতে যে পরিমাণ টাকা খরচ হয়েছে হাটে সে তুলনায় ক্রেতারা দাম কম বলছেন। সেই সঙ্গে বাহির থেকে ব্যবসায়ীরা না আসায় বড় গরু বিপাকে পড়েছেন তারা।
শুক্রবার ছিল জেলার বদলগাছী উপজেলার কোলা হাট। এদিন সেখানে ছিল ক্রেতা-বিক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়। প্রতি বছর কোরবানির সময় এ হাটে প্রায় দেড় হাজার পশু কেনাবেচা হয়ে থাকে। কৃষি প্রধান এ এলাকায় কোরবানিদাতাদের কাছে ছোট গরুর চাহিদা ছিল বেশি। ঈদের আগ মুর্হূতে দাম ভাল পাওয়ার আশায় খামারিরা গরু হাটে নিয়ে আসলেও হয়েছে তার বিপরীত। বড় গরুর তুলনায় ছোট গরু, বকনা, গাভী ও বলদের চাহিদা ছিল বেশি এবং দাম সহনীয় পর্যায়ে। প্রতিটি বকনা ও গাভী আকার ভেদে ৩৫ থেকে ৪৫ হাজার এবং বলদ ৪৫ হাজার থেকে ৬০ হাজার টাকার মধ্যে বিক্রি হয়েছে।
বদলগাছী উপজেলার বসন্তপুর গ্রামের আজাদুল ইসলাম বলেন, আমাদের এ এলাকায় প্রচুর সবজি উৎপাদন হয়ে থাকে। পল্লী এলাকার মানুষ স্বল্প দামের মধ্যে ছোট গরুর দিকে ঝুঁকছেন। দাম তুলনামূলক কম। প্রতিটি গরু বিক্রি হচ্ছে ৩৫ হাজার থেকে ৪৫ হাজার টাকায়। ক্রেতারা কিনেও স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছেন।
শহীদুল ইসলাম নামে এক ক্রেতা বলেন, ব্যবসা-বাণিজ্য না থাকায় টাকা পয়সার অভাব যাচ্ছে। তাই কষ্ট করে হলেও দিতে কোরবানি দিতে হচ্ছে। একটি বকনা গরু সাড়ে ৪২ হাজার টাকায় কিনেছি।
নন্দাহার গ্রামের খামারি আব্দুর রাজ্জাক বলেন, দাম ভাল পাওয়া আশায় ঈদের শেষ হাটে তিনটি ষাঁড় নিয়ে এসেছি। বাড়িতে দাম বলা হয়েছিল প্রতিটি ১ লাখ ২০ হাজার টাকা করে। হাটে নিয়ে আসার পর বেপারীরা বলছেন ৯৫ হাজার টাকা করে। অন্য এলাকা থেকে ব্যাপারীরা না আসায় গরুর দাম কমে গেছে। গরু লালন-পালনের জন্য গো খাদ্যের দাম বেশি পড়েছে, কিন্তু সে তুলনায় আমরা দাম পাচ্ছি না। বড় গরু নিয়ে বিপাকে পড়তে হয়েছে। এতে করে লোকসান গুনতে হচ্ছে।
হাটের ইজারাদার আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, প্রতি বছর কোরবানির সময় এ হাটে প্রায় দেড় হাজার পশু বিক্রি হয়। এবার গরুর আমদানি হয়েছে প্রচুর। ছোট গরুর চাহিদা ছিল বেশি এবং দামও সন্তোষজনক। সে তুলনায় বড় গরুর চাহিদা কম এবং বিক্রিও কম। ঢাকা ও অন্যান্য জায়গা থেকে ব্যবসায়ীরা না আসায় বড় গরু তেমন বিক্রি হয়নি।
জেলা প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্রে জানা যায়, ঈদুল আজহা উপলক্ষে এ বছর জেলার ১১টি উপজেলায় ৩২ হাজার খামারে প্রায় ২ লাখ ৭৬ হাজার পশু পালন করা হয়েছে। জেলায় চাহিদা রয়েছে ১ লাখ ৬০ হাজারে সামান্য বেশি। অবশিষ্ট পশু দেশের অন্য জেলার চাহিদা পূরণে সরবরাহ করা হবে।
আব্বাস আলী/এমএমজেড/এমকেএইচ