রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ৫ জায়গায় এডিস মশার লার্ভা
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালসহ নগরীর ১৪ পয়েন্টে মিলেছে এডিস মশার লার্ভা। লার্ভা মিলেছে নগরীর সড়ক শোভাবর্ধনে ব্যবহৃত পাইপের ভেতরে জমে থাকা বৃষ্টির পানিতেও।
গত ২ আগস্ট থেকে ৬ আগস্ট পর্যন্ত নগরীর পাঁচটি ওয়ার্ডের ১০০টি স্থান থেকে দৈব চয়নের ভিত্তিতে মশার লার্ভার নমুনা সংগ্রহ করে স্থানীয় স্বাস্থ্য দপ্তরের কীটতত্ত্ব সেল।
বুধবার গবেষণাগারে পরীক্ষা শেষে এ তথ্য জানান, রাজশাহী বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. গোপেন্দ্র নাথ আচার্য্য। (এডিস মশার লার্ভা) ও রাজশাহীতে ডেঙ্গুর বিস্তার নিয়ে এ গবেষণা হয়।
এ নিয়ে বুধবার বিকেলের মধ্যেই সুনির্দিষ্ট করে প্রতিবেদন তৈরি করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোতে পাঠানোর কথা জানান ডা. গোপেন্দ্র নাথ আচার্য্য।
তিনি বলেন, রাজশাহীতে এডিস মশার উপস্থিতি আছে কী নেই তা নিশ্চিত হতেই এই গবেষণা কাজ চালানো হয়। কীটতত্ত্ববিদ তায়েজুল ইসলামের নেতৃত্বে বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের কার্যালয়ের কীটতত্ত্বীয় টেকনিশিয়ান আবদুল বারী ও সিভিল সার্জন কার্যালয়ের কীটতত্ত্বীয় টেকনিশিয়ান উম্মে হাবিবা এ গবেষণায় অংশ নেন।
গবেষক দলটি গত ২ আগস্ট থেকে ৬ আগস্ট পর্যন্ত নগরীর পাঁচটি ওয়ার্ডের ১০০টি স্থান থেকে দৈব চয়নের ভিত্তিতে মশার লার্ভার নমুনা সংগ্রহ করে। এরপর বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালকের কার্যালয়ের হ্যাচারিতে নেয়া হয়। এরমধ্যে ১৪টি পয়েন্টে সংগ্রহ করা নমুনা থেকে এডিস মশার লার্ভার ব্যাপক উপস্থিতির প্রমাণ পাওয়া গেছে।
এদিকে, ১৪টি স্পটের মধ্যে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ২২ নম্বর ওয়ার্ডের সামনে পড়ে থাকা ভাঙা বেসিন ও ওয়ার্ডের পাঁচটি জায়গায় জমে থাকা পানিতে এডিস মশার লার্ভার উপস্থিতি মিলেছে।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ অধ্যক্ষের বাসভবনের সামনে নারিকেলের মালায় জমে থাকা বৃষ্টির পানিতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেছে। কলেজের ফাল্গুনী ছাত্রীনিবাসের সামনে আইসক্রিমের বক্সে জমে থাকা পানিতেও লার্ভা পাওয়া গেছে।
নগরীর উপশহর এলাকার রংধনু টাওয়ারের পরিত্যক্ত প্লাস্টিকের ড্রামে জমে থাকা বৃষ্টির পানিতে, একই এলাকার ২২৪ নম্বর বাড়ির পরিত্যক্ত পাত্রে, তিন নম্বর সেক্টরের ১৬৪ নম্বর বাড়ির ফুলের টবে ও পরিত্যক্ত ককশিটে ও ২০১ নম্বর বাড়ির ফুলের টবে, মহানগরীর আট নম্বর ওয়ার্ডের সিপাইপাড়া এলাকার মারুফের বাড়ির সামনের নারিকেলের মালায়, একই এলাকার আরেকটি বাড়িতে ফুলের টবে, চার নম্বর ওয়ার্ডের কেশবপুরের মাসুদ রানার বাড়ির প্লাস্টিকের পাত্রে, সেলিনা বেগমের বাড়ি ফুলের টবে ও মিলনের বাড়ির টায়ারে ও মাটির পাত্রে জমে থাকা পানিতে, শিরোইল এলাকা থেকে ভদ্রা পর্যন্ত রাস্তার পাশে পুঁতে রাখা পাইপের ভেতরে, একই এলাকার ব্যবসায়ী সেলিমের টায়ারের দোকানের টায়ারে, নাসির হোসেনের দোকানের ব্যাটারির সেলে জমে থাকা পানিতে ও শুকুর আলী নার্সারির মাটির পাত্রে জমে থাকা বৃষ্টির পানিতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেছে।
এদিকে, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. সাইফুল ফেরদৌস জানান, বুধবার দুপুর পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৩৩ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী। একই সময় সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন ১৫ জন। বর্তমানে হাসপাতালে ৮৮ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন।
ফেরদৌস সিদ্দিকি/এমএএস/এমএস