এত ইলিশ একসঙ্গে দেখে অবাক জেলেরা
দেশের সর্ববৃহৎ মিঠা পানির জলাভূমি হাকালুকি হাওরে জেলেদের জালে ধরা পড়ছে রুপালি ইলিশ। প্রতি বর্ষা মৌসুমে এ হাওরে ছোট আকারের ইলিশ ধরা পড়লেও এবার বড় আকারের ও সংখ্যায় বেশি ধরা পড়ছে।
তিন বছর আগে মৌলভীবাজারের হাকালুকি হাওরে বেশ ইলিশ ধরা পড়েছিল। মাঝখানে আর তেমন দেখা মেলেনি। তবে এবার আবারও জেলেদের জালে ইলিশ ধরা পড়ছে। স্থানীয় হাটবাজারে তা বিক্রিও হয়।
মৎস্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের বিভিন্ন নদ-নদী ও হাওরে মিঠা পানিতে ইলিশের আবাসস্থল গড়ে উঠেছে। এ কারণে হাকালুকিতে এ মাছের দেখা পাওয়া যাচ্ছে।
এর আগে ২০১৬ সালে এ হাওরে ইলিশ পাওয়া গেলেও তা ছিল হাতেগোনা। কিন্তু চলতি বছরে আগের যেকোনো রেকর্ডকে ছাড়িয়ে গেছে ইলিশ। এত ইলিশ একসঙ্গে দেখে অবাক জেলেরা।
হাকালুকি হাওর ঘুরে দেখা যায়, প্রতিদিন ৫০-৬০টি জাল দিয়ে মাছ ধরছেন জেলেরা। একেকটি জালে ২০-৩০টি ইলিশ উঠে আসে। তবে জেলেরা ইলিশ ধরার কথা স্বীকার করতে চান না এবং মাছ দেখাতেও রাজি নন। তাদের ভয়, ইলিশের কথা বেশি প্রচার হলে মাছ ধরা বন্ধ করে দিতে পারে প্রশাসন।
তবে সরেজমিনে হাকালুকির গৌড়কুড়ি বিলে জেলেদের জালে দেখা যায়, প্রতি টানে প্রায় ৩০টির মতো রুপালি ইলিশ জালে উঠে আসছে। এর মধ্যে ৬০০ থেকে ৩০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ রয়েছে। এসব ইলিশ আশপাশের বাজারগুলোতে পাওয়া যায়। আকারভেদে এসব ইলিশের দাম হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়।
মৎস্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, গত কয়েক বছর হাকালুকিতে ইলিশ ধরা পড়লেও এ বছরের মতো এত ইলিশ ধরা পড়েনি। দেশের বিভিন্ন নদ-নদী ও হাওরে মিঠা পানিতে ইলিশের আবাসস্থল গড়ে উঠেছে। এ কারণে হাকালুকিতে এ মাছের দেখা পাওয়া যাচ্ছে।
কুলাউড়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সুলতান মাহমুদ জাগো নিউজকে বলেন, মূলত তিনটি কারণে হাকালুকিতে ইলিশ বেড়েছে। প্রথমত, যেসব নদীতে ইলিশ পাওয়া যায় তার সঙ্গে যোগসূত্র আছে পদ্মা-মেঘনার। এসব নদীর সঙ্গে সুরমা ও কুশিয়ারার যোগসূত্র আছে। যেহেতু ইলিশের প্রজনন সময়ে পানি বেশি ছিল সেহেতু সুরমা- কুশিয়ারা নদী হয়ে হাকালুকি হাওরে ঢুকেছে ইলিশ। দ্বিতীয়ত, গত কয়েক বছর ধরে সরকার ইলিশ রক্ষায় যে পদক্ষেপ নিয়েছে সেজন্য বেড়েছে ইলিশ। দেশে ইলিশ বেড়েছে বলেই হাকালুকিতেও ইলিশ মিলছে। তৃতীয়ত, গত কয়েক বছর ধরে সাফল্য ধরে রেখেছে মৎস্য বিভাগ। হাকালুকিতেও প্রতি বছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি মাছ উৎপাদন হয়। সঠিক রক্ষণাবেক্ষণের কারণে হাকালুকি হাওরে বেড়েছে ইলিশ।
রিপন দে/এএম/এমকেএইচ