নুসরাতকে যৌন নিপীড়নের মামলার বিচার শুরু
ফেনীর আলোচিত মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে যৌন নিপীড়নের ঘটনায় দায়ের করা মামলার অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। সোমবার ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদের আদালতে একমাত্র আসামি সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন শেষে সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী ২৭ অক্টোবর দিন ধার্য করা হয়েছে।
বাদী পক্ষের কৌঁসুলি এম শাহজাহান সাজু জানান, সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির যৌন নিপীড়নের মামলার অভিযোগ রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ৯ ও ১৭ জুলাই দুবার পিছিয়ে আজ (সোমবার) অভিযোগ গঠন করা হয়। ৩ জুলাই বুধবার ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাকির হোসাইনের আদালতে ১০ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্র জমা দেয়া হয়। পরদিন অভিযোগের ওপর আদালতে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। সেদিন মামলাটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদের আদালতে স্থানান্তর করা হয়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও পিবিআইয়ের পরিদর্শক শাহ আলম জানান, ২৭ মার্চ অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা নুসরাতকে তার কক্ষে ডেকে নিয়ে শ্লীলতাহানি করে। এ ঘটনায় নুসরাতের মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা করলে পুলিশ সিরাজ উদ দৌলাকে আটক করে। পরে পুলিশ সদর দফতর থেকে মামলাটি পিবিআইকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়। পিবিআই ৩ জুলাই আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। ডকেটসহ ২৭১ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্রে ডাক্তার ও পুলিশসহ মোট ২৯ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে।
তিনি জানান, মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে হত্যার ঘটনার আগে যৌন হয়রানির মামলার ১৯ জুন একমাত্র আসামি অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার দুদিনের রিমান্ড শেষে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। ১৯ জুন বিকেলে অধ্যক্ষ সিরাজকে আদালতে হাজির করেন। গত ২২ মে তার দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছিলেন আদালত।
তিনি আরও বলেন, অধ্যক্ষ সিরাজ নুসরাতকে যৌন হয়রানির কথা স্বীকার করেছে। হত্যা মামলায় সে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। সে জবানবন্দিতে ২৭ মার্চ যৌন হয়রানির বিষয়টি স্বীকার করেছে।
এ ঘটনার পর থেকে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার সহযোগিতার নানাভাবে নুসরাতের পরিবারকে মামলা তুলে নিতে চাপ দেয়। তারা মামালা তুলে নিয়ে অস্বীকৃতি জানালে ৬ এপ্রিল নুসরাতকে কৌশলে মাদরাসার সাইক্লোন শেল্টারের ছাদে নিয়ে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়। অগ্নিদগ্ধ নুসরাতকে উদ্ধার করে প্রথমে সোনাগাজী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, সেখান থেকে ফেনী সদর হাসপাতাল ও পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১০ এপ্রিল রাত ৯টার দিকে তিনি মারা যান।
রাশেদুল হাসান/এমবিআর/জেআইএম