গাজীপুরে ডেঙ্গুর সঙ্গে দেখা দিয়েছে ডায়রিয়ার প্রকোপ
গাজীপুরে ডেঙ্গুর সঙ্গে দেখা দিয়েছে ডায়রিয়ার প্রকোপ। গত তিন দিন ধরে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডেঙ্গু ও ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বেড়েছে কয়েক গুণ। এসব রোগীকে চিকিৎসা দিতে হিমসিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা। ডেঙ্গুর সঙ্গে ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দেয়ায় নগরীর সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক প্রণয় ভূষণ দাস জানান, বুধবার দুপুর ২টা পর্যন্ত তিন দিনে ডায়রিয়া আক্রান্ত ১৬০ জন রোগী চিকিৎসার জন্য এসেছেন। এর মধ্যে ভর্তি হয়েছেন ৮৭ জন। এছাড়া বুধবার নতুন করে আরও ১৯ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হন। বর্তমানে এ হাসপাতালে ৩৯ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি রয়েছেন।
গত ৩০ জুন থেকে বুধবার দুপুর পর্যন্ত এ হাসপাতালে ১১৩ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত ও চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকেও ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীরা হাসপাতালে আসছেন। তাদেরও এ হাসপাতালে পৃথক ওয়ার্ড খুলে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, ডেঙ্গুর পাশাপাশি হাসপাতালে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় হাসপাতালে বিছানা সংকট দেখা দিয়েছে। তাই অনেক রোগী মেঝেতে, বারান্দায় বিছানা পেতে অবস্থান করছেন।
এদিকে বিপুল সংখ্যক রোগীর চিকিৎসা দিতে গিয়ে চিকিৎসকরাও হিমশিম খাচ্ছেন। হাসপাতালের বিভিন্ন খালি কক্ষে রোগীদের জন্য নতুন করে বিছানা দেয়া হয়েছে।
তিনি জানান, ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে যে সকল রোগী হাসপাতালে আসছেন তারা ডেঙ্গুতে আক্রান্ত কি না তা পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে।
বুধবার দুপুরে তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীরা বারেন্দায় চিকিৎসা নিচ্ছেন।
শহরের শিমুলতলী এলাকা থেকে আসা ডায়রিয়ায় আক্রান্ত কাঞ্চন মিয়া (৫৫) জানান, সোমবার রাত থেকে পেটে ব্যথা, বমি ও জ্বরে ভুগছিলেন। মঙ্গলবার সকালে তিনি এ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
বাড়িয়া ইউনিয়নের কেশরিতা এলাকা থেকে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন মোস্তাকুর রহমান (২৫)। তিনি দু’দিন ধরে ডায়রিয়া, বমি ও পেটে ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন।
হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সাদেকুল হক তুহিন জানান, ডায়রিয়ায় আক্রান্তরা নিস্তেজ অবস্থায় হাসপাতালে আসছেন।
গাজীপুরের ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. মো. শাহীন জানান, উপজেলা পর্যায়ে ডেঙ্গু রোগীর রক্তের আইজিজি/আইজিএম ও এনএস ওয়ান টেস্ট করার কোনো ব্যবস্থা নেই। এর মধ্যে কালীগঞ্জ উপজেলায় দুইজন রোগীকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে এবং কালিয়াকৈরে একজনকে ঢাকায় রেফার করা হয়েছে।
তিনি জানান, ডেঙ্গু প্রতিরোধে ইতোমধ্যে বিভিন্ন উপজেলায় প্রচারাভিযান ও জনগণকে উদ্বুদ্ধকরণের কাজ শুরু করা হয়েছে।
গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মো. সোহরাব হোসেন জানান, মশক নিধনের জন্য ইতোমধ্যে ৮টি ফগার মেশিন কেনা হয়েছে। যার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আরও ফগার মেশিন ক্রয় প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
আমিনুল ইসলাম/এফএ/জেআইএম