প্রতিবন্ধীর ভাতার টাকা মেম্বারের পকেটে
মেহেরপুরে সোহেল রানা নামের এক শারীরিক প্রতিবন্ধীর ভাতার টাকা পকেট করেছেন স্থানীয় এক ইউপি সদস্য (মেম্বার)। প্রতিবন্ধীর ভাতার কার্ড নিজের কাছে রেখে এবং জাল টিপসই দিয়ে ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেছেন মেম্বার জাকির হোসেন। এ ঘটনায় মেম্বারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন দফতরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ওই প্রতিবন্ধী।
প্রতিবন্ধী সোহেল রানা মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার হিন্দা গ্রামের ইদ্রিস আলীর ছেলে। একটি দুর্ঘটনায় পা হারিয়ে ১০ বছর ধরে প্রতিবন্ধী অবস্থায় জীবন-যাপন করছেন সোহেল রানা।
চিকিৎসার জন্য সহায়-সম্বল বিক্রি করে তার পরিবার এখন নিঃস্ব। হুইলচেয়ারে বসে কোনোরকম চলাফেরা করলেও দরিদ্র এই পরিবারের সদস্যদের দিন কাটে অনাহারে-অর্ধাহারে। ভাতার কার্ড থাকলেও ভাতা পান না সোহেল রানা।
সোহেল রানার ভাতার কার্ডের টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন স্থানীয় মেম্বার জাকির হোসেন। অভিযুক্ত জাকির হোসেন হিন্দা গ্রামের বাসিন্দা এবং তেঁতুলবাড়ীয়া ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের সদস্য (মেম্বার)।
প্রতিবন্ধী সোহেল রানা বলেন, রাজনৈতিক কারণে বার বার জাকির মেম্বার আমার নাম ভাতার তালিকা থেকে কেটে দেন। পরবর্তীতে গ্রামবাসী ও পুলিশ ক্যাম্পের চাপে আমাকে কার্ড করে দেয়া হয়। কিন্তু আমার ভাতার কার্ড নিজের কাছে রেখে দেন জাকির মেম্বার। ওই ভাতার কার্ডের গত কয়েক মাসের টাকা একসঙ্গে ৮ হাজার ৪০০ টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেছেন জাকির মেম্বার। পরে বিষয়টি জানতে পারি আমরা। সেই সঙ্গে স্থানীয়দের বিষয়টি জানানো হয়। এ অবস্থায় আমার ভাতার ৮ হাজার ৪০০ টাকার মধ্যে ৪ হাজার ৪০০ টাকা আমার বাবার কাছে দেন তিনি। সেই সঙ্গে বিষয়টি কাউকে না বলতে অনুরোধ করেন জাকির মেম্বার।
এদিকে, প্রতিবন্ধীর টাকা মেম্বারের পকেটে যাওয়ার ঘটনা জানাজানি হলে প্রতিবাদ করে গ্রামবাসী। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় সোহেল রানাকে নিয়ে গত সপ্তাহে উপজেলা সমাজসেবা অফিসারের কাছে এ বিষয়ে অভিযোগ করা হয়। যার অনুলিপি জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ বিভিন্ন দফতরে দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত মেম্বার জাকির হোসেন বলেন, সোহেল রানার প্রতিবন্ধী ভাতার টাকা ৪ হাজার টাকা খরচ হয়ে যাওয়ায় দেয়া হয়নি। তাকে তো জানিয়েছি পরে যেকোনো দিন নিয়ে যাওয়ার জন্য। তাকে ওই টাকা দেয়া হবে।
আসিফ ইকবাল/এএম/জেআইএম